নাইজেরিয়া ইবোলা-মুক্ত, জানাল হু

গত ৪২ দিন ধরে ব্যাপক নজরদারি চালিয়েও নতুন ইবোলা-সংক্রমণের কোনও খবর মেলেনি নাইজেরিয়ায়। তাই সোমবার নাইজেরিয়াকে ইবোলা-মুক্ত বলে ঘোষণা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। শুক্রবারই আফ্রিকার আরও একটি দেশ, সেনেগালকে ইবোলা-মুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল হু। জুলাই মাস থেকেই আফ্রিকার চারটি দেশ গিনি, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া ও লাইবেরিয়ায় প্রায় মহামারীর রূপ নিয়েছিল ইবোলা। হু-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর জেরে অন্তত সাড়ে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আবুজা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২০
Share:

গত ৪২ দিন ধরে ব্যাপক নজরদারি চালিয়েও নতুন ইবোলা-সংক্রমণের কোনও খবর মেলেনি নাইজেরিয়ায়। তাই সোমবার নাইজেরিয়াকে ইবোলা-মুক্ত বলে ঘোষণা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। শুক্রবারই আফ্রিকার আরও একটি দেশ, সেনেগালকে ইবোলা-মুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল হু।

Advertisement

জুলাই মাস থেকেই আফ্রিকার চারটি দেশ গিনি, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া ও লাইবেরিয়ায় প্রায় মহামারীর রূপ নিয়েছিল ইবোলা। হু-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর জেরে অন্তত সাড়ে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতেই শেষ নয়। মৃতের সংখ্যা আরও বহু গুণ বাড়তে পারে বলে সম্প্রতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল হু। কিন্তু সোমবার তারাই জানাল, স্রেফ প্রশাসনিক তৎপরতার জন্যই ইবোলা-মুক্ত হতে পেরেছে নাইজেরিয়া। সে দেশে হু-র প্রতিনিধি রুই গামা ভাজ বলেন, “ইবোলাকেও যে রোখা যেতে পারে তা নাইজেরিয়া দেখিয়ে দিল...অবিশ্বাস্য সাফল্যের কাহিনি।” বাস্তবিক। যে রোগের সে অর্থে কোনও দাওয়াই নেই, এমনকী প্রতিষেধক তৈরি হতেও অন্তত বছরখানেক, তার জীবাণুকে এ ভাবে রুখে দেওয়া বিরল সাফল্য তো বটেই! কী ভাবে এমন করল নাইজেরিয়া?

হু জানিয়েছে, এ পর্যন্ত নাইজেরিয়ায় নিশ্চিত ভাবে ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছে এমন ২০ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে ৮ জন মারা গিয়েছেন। বাকিদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, এমন প্রত্যেক ব্যক্তির উপর গত ৪২ দিন ধরে নজরদারি চালিয়েছে প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইবোলা ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ার পর রোগের বহিঃপ্রকাশ হতে সব চেয়ে বেশি ২১ দিন সময় লাগার কথা। এই পর্যায়কে বলে ‘ইনকিউবেশন পিরিয়ড’। এ রকম দু’টি ইনকিউবেশন পিরিয়ড ধরে ইবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের উপর নজরদারি চালিয়েছিল নাইজেরীয় প্রশাসন। কিন্তু কারও ইবোলা হয়নি। তা বাদে দেশে যাতে আর নতুন কোনও সংক্রমণ না হয়, সে জন্য বিমানবন্দরেও ব্যাপক স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল সরকার। লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন যেখানে ব্যাপক ভাবে ইবোলা ছড়িয়েছে, সেখানে নিয়ন্ত্রিত উড়ানের ব্যবস্থা করেছিল নাইজেরিয়ার অন্যতম এয়ারলাইন্স। এবং এ সব কিছুই অত্যন্ত দ্রুত করেছিল সরকার। হু-র দাবি, সে কারণেই ইবোলা-মুক্ত হতে পেরেছে নাইজেরিয়া।

Advertisement

অন্য দিকে, ২১ দিনের কড়া নজরদারির পর ছেড়ে দেওয়া হল আমেরিকার টেক্সাসের রাজধানী ডালাসের ৪৩ জন বাসিন্দাকে। কিছু দিন আগে সেখানে ইবোলায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সে সময় তাঁর সংস্পর্শে যে ৪৮ জন এসেছিলেন, তাঁদের উপর ২১ দিনের নজরদারি চালিয়েছিল টেক্সাস প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে ৪৩ জনকে এ দিন ইবোলা-মুক্ত বলে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাতেও চিন্তা যাচ্ছে না। নাইজেরিয়া যে ভাবে ইবোলা সংক্রমণ রুখল, সে পথে কেন আমেরিকা, স্পেন হাঁটতে পারছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

তবে তথ্য অবশ্য এ-ও বলছে, তিরিশ কোটির দেশ আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত ইবোলা আক্রান্ত তিন জন। তাই সতর্কতা নিলেও ইবোলা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই শনিবার দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেন, “ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ইভিডি) একটি মারাত্মক অসুখ। কিন্তু তা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, এতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।” তিনি আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, শুধুমাত্র রোগীদের দেহরস থেকেই এই রোগ ছড়াতে পারে। সুতরাং সতর্কতা প্রয়োজন। কিন্তু অহেতুক আতঙ্ক নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন