প্রসবের পরে সন্তান কোলে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরেছিলেন মা। কিন্তু দিন দশেক পরেই তাঁকে আবার হাসপাতাল ফিরতে হল মুমূর্ষু অবস্থায়। চিকিৎসকেরা জানালেন, হার্ট ফেলিওর। চিকিৎসা পরিভাষায় পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি। সঙ্গে নিউমোনিয়া। বহু সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল কার্যত জবাব দিলেও টুম্পা সরকারকে বাঁচালেন আর জি কর-এর চিকিৎসকেরা। প্রায় দু’সপ্তাহ ভেন্টিলেশনে থাকার পরে গাইঘাটার বাসিন্দা টুম্পাকে সদ্য বিপন্মুক্ত ঘোষণা করেছেন তাঁরা।
বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বেসরকারি স্ত্রী-রোগ চিকিৎসকেরাও। তাঁদের মতে, আধুনিক পরিকাঠামো ও অতি দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকলে এমন ঘটনায় মৃত্যু অনিবার্য। সরকারি হাসপাতালে বিপুল চাপের মধ্যেও যে তা সম্ভব, এই ঘটনায় তা প্রমাণ হল।
আর জি কর-এর ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সুগত দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘টুম্পার হার্টের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। শ্বাসকষ্ট এত প্রবল ছিল যে ভেন্টিলেশনে না রাখলে বাঁচানো যেত না। এমনিতেই পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি বিরল। তার উপরে সঙ্গে নিউমোনিয়া।’’
সাধারণ ভাবে পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি বেশ বিরল। প্রসবের সময়ে শরীরে পুষ্টির অভাব, কোনও সংক্রমণ বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে এটা হতে পারে। জিনগত কারণে অথবা প্রোল্যাকটিন হরমোন যা স্তন্যদানের সময়ে ক্ষরণ হয়, তার কোনও অস্বাভাবিকতা থেকেও এই রোগ হতে পারে। বহু ক্ষেত্রেই এমন আচমকা বিষয়টি ধরা পড়ে যে রোগিণীকে বাঁচানো যায় না। স্ত্রী রোগ চিকিৎসক গৌতম খাস্তগীর বলেন, ‘‘আর জি কর-এর চিকিৎসকেরা যে ভাবে মেয়েটিকে নতুন জীবন দিলেন তা প্রশংসনীয়। সাধারণ ভাবে প্রসবের পরে মায়ের অস্বস্তি, অস্থিরতাকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ধরে নেওয়া হয় যে রাতে কম ঘুম বা ক্লান্তির জন্যই হচ্ছে। কিন্তু ওই উপসর্গগুলি এই রোগের পূর্বাভাস হতে পারে। তাই শুরুতেই সাবধান হওয়া ভাল।