আরও দু’জনের মৃত্যু, শুয়োর পালন নিয়ে পুলিশে নালিশ

এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থদের মৃত্যুর বিরাম নেই। বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম সন্ধ্যা বিশ্বাস (২০)। বাড়ি কোচবিহারের বনিরহাটে। অপর জন হাসান ইমান (৫০)। বাড়ি চোপড়ার দাসপাড়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৭
Share:

শুয়োর ধরতে পুরসভার অভিযানে সামিল বাসিন্দারাও। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।

এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থদের মৃত্যুর বিরাম নেই। বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম সন্ধ্যা বিশ্বাস (২০)। বাড়ি কোচবিহারের বনিরহাটে। অপর জন হাসান ইমান (৫০)। বাড়ি চোপড়ার দাসপাড়ায়।

Advertisement

অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে সন্ধ্যা বুধবার বিকেলের পর মারা যান। হাসান ইমান মারা গিয়েছেন বৃহস্পতিবার ভোরে। এই নিয়ে গত জানুয়ারি থেকে এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে মারা গিয়েছেন অন্তত ২৩ জন। এ দিনও উপসর্গ নিয়ে অনেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্তত ৫০ জন এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে এখনও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে এ দিন জ্বরে অন্তত ৭০ জন রোগী দেখিয়েছেন। এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ থাকায় তাঁদের অনেককেই মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে।

এ দিন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস, বিজেপি এবং এসইউসিআই এর প্রতিনিধিরা। এমনকী শাসক দল নিয়িন্ত্রিত প্রোগ্রেসিভ জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এ দিন পরিষেবা ঠিক করার দাবিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সুকদেব মণ্ডল বলেন, “পর্যাপ্ত কিট সরবরাহ রাখার দাবি জানানো হয়েছে। রোগীদের প্রয়োজনীয় সমস্ত ওষুধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহের জন্য বলা হয়েছে।” অন্য দিকে হাসপাতাল চত্বরেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের একাংশ শুয়োর পালন করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তা জানার পর পুলিশে অভিযোগ জানান কর্তৃপক্ষ। এর পরেই দ্রুত শুয়োরগুলি সরানো হয়। হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্র সরকার বলেন, “ওই কর্মীরা আমার কাছেও এসেছিলেন শুকোর পালনের অনুমতি চাইতে। তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোনও ভাবেই তা বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

Advertisement

কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটক এবং বাবলু সরকাররা জানান, অনেক আগে থেকেই রোগ সংক্রমণ ছড়িয়েছে। অথচ সরকার সে ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেনি। এখনও তারা সঠিক ভাবে রোগীদের পরিষেবা দিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ। একই সুরে বিজেপি নেতৃত্ব-ও এনসেফ্যালাইটিস প্রতিরোধে রাজ্য সরকারের তরফে আগাম ব্যবস্থা না নিতে পারার কড়া সমালোচনা করেছেন। তাদের দাবি কেন্দ্রীয় সরকার সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞানীদের দুটি দল এসেছে। বিজেপি’র অন্যতম রাজ্য সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী জানান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে শীঘ্রই আরও একটি দল আসার কথা। গত দু’বছর ধরে এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে রোগী মারা যাচ্ছেন। অথচ আগামব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন সেই প্রশ্ন তুলেছে এসইউসিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন