পরিদর্শনে এল বিশেষজ্ঞ দল

আরও ৪ জনের মৃত্যু এনসেফ্যালাইটিসে

উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কলকাতা থেকে এল বিশেষজ্ঞ দল। শুক্রবার দুপুরে দলটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসে। এ দিকে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুরের মধ্যে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৪
Share:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শক দল। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কলকাতা থেকে এল বিশেষজ্ঞ দল। শুক্রবার দুপুরে দলটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসে। এ দিকে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুরের মধ্যে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

কলকাতা থেকে স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো ওই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান নিমাই ভট্টাচার্য। তিন সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে নিমাইবাবু ছাড়া কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক অখিল বিশ্বাস এবং এক জন টেকনিশিয়ান রয়েছেন। এ দিন ওই দলটি হাসপাতালের শিশু বিভাগ, নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট, মেডিসিন বিভাগ ঘুরে দেখেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁরা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীদের একাংশের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। নিজেরাই রোগীদের অনেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তা স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগে তাঁরা পরীক্ষা করবেন।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার ভোররাতে মারা গিয়েছেন কালচিনির বাসিন্দা জীবন পাহান (৫৯) এবং কালিম্পঙের বাসিন্দা কিঙ্গা ডোপ্পা (৩৯)। এ দিন ভোরে মারা গিয়েছেন মাথাভাঙার বাসিন্দা সুনির্মল মণ্ডল (৬০)। পরে বেলা দু’টো নাগাদ মারা যান দার্জিলিঙের বাসিন্দা শঙ্কর দেওয়ান (৩৮)। এ দিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামাণিক, হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্র সরকার। এ দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি মাথাভাঙার বাসিন্দা ছ’বছরের জ্যোৎস্না বর্মন, মেডিক্যল কলেজ এলাকার বাসিন্দা পাঁচ বছরের রাজু রায়, চোপড়ার বাসিন্দা কিশোর বিপ্লব সিংহের মতো অনেক রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন প্রতিনিধি দল। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শনের পরে বিকেলে জলপাইগুড়ি রওনা হয় দলটি।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলা থেকে রোগ সংক্রমণ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কোচবিহারের জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ থাকায় গত ছ’মাসে জেলা থেকে ১৭৬টি রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর মধ্যে ৩২টি নমুনায় এনসেফ্যালাইটিসের ভাইরাস মিলেছে। তাঁদের মধ্যে চারজন রোগী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গিয়েছেন।” তিনি জানান, যে পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে তাতে আরও দু’জনের রক্তে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু মিলেছে। জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে যে রোগীরা মারা গিয়েছেন তাঁরা রাজগঞ্জ, কুমারগ্রাম, গজলডোবা এলাকার বাসিন্দা বলে তিনি জানিয়েছেন। যে দু’জনের চিকিসা চলছে তাঁরা ময়নাগুড়ি এবং নাগরাকাটার। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে ‘ফিভার রেজিস্টার’ সেল খুলেছে। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে জ্বর নিয়ে রোগী গেলে রক্ত পরীক্ষা করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জানাতে বলা হয়েছে। পরীক্ষায় জ্বরের কারণ জানা না-গেলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের নমুনা পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আজ, শনিবার দলটির জলপাইগুড়ির বিভিন্ন ব্লকে পরিদর্শনে যাওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন