পুরসভার লাবণ্য মাতৃসদন কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সদর হাসপাতালের চাপ কমাতে সেখানে গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামোয় প্রসূতি ছাড়াও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রাখা হবে বহির্বিভাগ পরিষেবাও। নির্বাচন শেষ হলে পুর কর্তা ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তৎপর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শুরুতেই বিতর্কের সূত্রপাত হওয়ায় স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ন্যাশনাল হেলথ মিশনের আর্থিক সহযোগিতায় শহরের কেরানি পাড়ায় ২০০১ সালে ১০ কাঠা জমির উপরে ৩০ শয্যার দ্বিতল লাবণ্য মাতৃসদন গড়ে তোলা হয়। শহরের প্রসূতি ও শিশুদের নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য ‘আলট্রাসোনোগ্রাফি’ সহ বেশ কিছু মেশিন কেনা হয়। পাঁচ চিকিৎসক সেখানে কাজ করতেন। বিনাপয়সায় ওষুধও দেওয়া হত। কিন্তু প্রথম কয়েক বছর পরিষেবা ঠিকঠাক চললেও কেন্দ্রীয় আর্থিক সাহায্য বন্ধ হতে সমস্যা দেখা দেয়। পুরসভার তরফে আলোচনা করে চিকিৎসকদের নামমাত্র পারিশ্রমিক দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখার চেষ্টা চলে। চার বছর ধরে চিকিৎসা পরিষেবা এক রকম বন্ধ।
পুরসভার চেয়ারম্যান বলেছেন, “চিকিৎসকদের পারিশ্রমিক এবং ওষুধ কেনার অর্থ জোগাড় করা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য দফতরের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। ওঁরা উত্তর দেননি। এর পরে আমরা সেটা অন্য কোনও সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে চালানো যায় কি না সেটাও ভেবেছি। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা কীসের উপরে ভিত্তি করে এখন মাতৃসদন কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে উন্নীত করার কথা বলছেন বুঝতে পারছি না।” বিতর্ক এড়াতে জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা পুরকর্তাদের বক্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেন। যদিও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসের মধ্যে লাবণ্য মাতৃসদনকে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে উন্নীত করার পরিকল্পনা পাকা। স্বাস্থ্যকর্তারা ৩০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালুর কথা ভাবছেন। ওই বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সবুজ সঙ্কেতও মিলেছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগ্ননাথ সরকার দাবি করেছেন, শুধু পুরসভা নয় জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে নির্বাচনী বিধি থাকায় তিনি সবিস্তার কিছু জানাতে চাননি। পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “লাবণ্য মাতৃসদন সচল রাখার জন্য সাহায্য চেয়ে কয়েক বার স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন করা হয়েছে। সাড়া মেলেনি। -ওঁরা আমাদের সঙ্গে কথা না বলে পরিকল্পনা শোনাচ্ছেন। সম্পত্তি আমাদের আমরা কিছু জানলাম না অথচ ওঁরা এত পরিকল্পনা নিচ্ছেন। এটা কেমন কথা?” পরে অবশ্য তিনি জানান, প্রতিষ্ঠান রক্ষার জন্য কেউ এগিয়ে এলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। নিয়ম মেনেই সেটা হওয়া জরুরি।