দাঁতনের বাবলা গ্রামে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। — নিজস্ব চিত্র।
দু’দিন আগে গ্রামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে এনসেফ্যালাইটিসে। তারপর জ্বর হয়েছে আরও চার জনের। এ বার সেই গ্রামে গেলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
বৃহস্পতিবার দাঁতন-২ ব্লকের বেলদা থানা এলাকার বাবলা গ্রামে স্বাস্থ্য সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবিরেই চল্লিশ জনের রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে বাবলা গ্রামের সুস্মিতা পণ্ডা (১৬)-র মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু হয়েছে বাবলা সোহাগপুর উপেন্দ্র বিদ্যাভবনের একাদশ শ্রেণির এই ছাত্রীর। এ দিনের সচেতনতা শিবিরে উপস্থিত ছিলেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা সংক্রমণজনিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান, আশিস মণ্ডল প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার জ্বর, মাথাব্যথা, বমির উপসর্গে কষ্ট পাচ্ছিল সুস্মিতা। প্রথমে বাড়িতেই চিকিৎসা হচ্ছিল। তাতে জ্বর কমেও যায়। কিন্তু বমি, মাথাব্যথা ও খিচুনি বাড়তে থাকে সুস্মিতার। গত সোমবার তাকে এগরা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।অবস্থার অবনতি হওয়ায় সে দিনই সুস্মিতাকে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। বুধবার রাতে গ্রামে সুস্মিতার দেহ আসে। অন্ত্যেষ্টি সমাপ্ত হয়। বৃহস্পতিবার সুস্মিতার কাকা রঘুনাথ পণ্ডা বলেন, “ঘন্টা তিনেকের মধ্যে জ্বর কমে গিয়েছিল। কিন্তু খিঁচুনি শুরু হওয়ায় এগরা থেকে এনআরএসে নিয়ে গিয়েছিলাম। তবু বাঁচানো গেল না। কী ভাবে এনসেফ্যালাইটিস হল বুঝছি না।”
দাঁতনের এই গ্রামে এ দিন দুপুরে পৌঁছন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সুস্মিতার ভাই সুমিত পণ্ডা, গ্রামবাসী সন্তোষ বেরা, গোপাল বেরা ও সুমিত্রা বারিকের জ্বর রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, ওই চারজনের এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নেই। সংক্রমণজনিত রোগের জেলা নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “মনে হয়েছে ওই কিশোরী অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসের শিকার হয়েছিল। এতে মস্তিকে তীব্র ব্যথা হয়। তবে সংক্রমন জল না মশা থেকে হয়েছে তা এখনই বলা যাবে না।” এ দিন ওই সচেতনতা শিবিরে মশারির ব্যবহার, জমা জল পরিস্কার, পরিশুদ্ধ পানীয় জল খাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে গ্রামবাসীকে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই কিশোরীর দেহে জাপানী এনসেফ্যালাইটিসের কোনও উপসর্গ ছিল না। সাধারণ এনসেফ্যালাইটিসে মস্তিস্কে সংক্রমণ থেকে মৃত্যু হয়েছে। তবে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় রয়েছেন। রক্তের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। মানুষকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।”