কুমারগ্রামে প্রকোপ বাড়ছে টাইফয়েডের

কুমারগ্রাম ব্লকের চ্যাংমারি, সঙ্কোশ, নিউল্যান্ডস, কুমারগ্রাম সহ বেশ কিছু এলাকায় টাইফয়েডের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে ব্লকের ওই এলাকাগুলিতে ২৪ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৭ জন ভর্তি হয়েছেন। গত মাসে ২৩ জনের রক্তে টাইফয়েড মিলেছে। চলতি বছরে কুমারগ্রাম ব্লকে টাইফয়েডে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

কুমারগ্রাম ব্লকের চ্যাংমারি, সঙ্কোশ, নিউল্যান্ডস, কুমারগ্রাম সহ বেশ কিছু এলাকায় টাইফয়েডের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে ব্লকের ওই এলাকাগুলিতে ২৪ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৭ জন ভর্তি হয়েছেন। গত মাসে ২৩ জনের রক্তে টাইফয়েড মিলেছে। চলতি বছরে কুমারগ্রাম ব্লকে টাইফয়েডে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ জন।

Advertisement

এ দিন-ই কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে ওই কিশোরের নাম বাপন দাস (১৩)। বাড়ি কুমারগ্রাম ব্লকের ভল্কা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা কিশোরকে এ দিন সন্ধ্যাতেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। চারদিন ধরে সে জ্বরে ভুগছিল বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, কিশোরের রক্তে ম্যালেরিয়া বা টাইফয়েডের জীবাণু মেলেনি। কী রোগে মৃত্যু জানতে রক্তের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এলাকায় রোগ প্রকোপ চলতে থাকলেও স্থানীয় হাসপাতালের রোগ নির্ণয় পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। অনেকক্ষেত্রেই রোগ পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কিটের অভাব রয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।

আলিপুরদুয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “জেলায় টাইফয়েড পরীক্ষার কিটের অভাব রয়েছে তা ঠিক। তবে সব হাসপাতাল বা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে কিট না থাকলে স্থানীয় ভাবে কিনে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়েছে।”

Advertisement

বছরের শুরু থেকেই টাইফয়েডের প্রকোপ শুরু হলেও, এলাকায় রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর। কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জ্বর নিয়ে ভর্তি আছেন চ্যাংমারীর নিতাই রায়। তাঁর দাদা অখিল দাস বলেন, “ভাইয়ের চারদিন ধরে জ্বর। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রক্ত পরীক্ষায় ম্যালেরিয়ার ধরা পড়েনি, ওর কী জ্বর হয়েছে সেটা এখনও জানতে পারিনি। আমাদের পক্ষে বাইরে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করানোর সম্ভব নয়।”

টাইফয়েড জলবাহিত রোগ বলেই পরিচিত। রোগ প্রকোপ চললেও, প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে জলের নমুনা পরীক্ষা নিয়েও। এলাকার জলের নমুনা পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থাই হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। পরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সরবরাহ করা পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় জলের পাইপ ফুটো থাকার জন্য জল দূষিত হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আলিপুরদুয়ারের আধিকারিক আশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “লাইন মেরামতির কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।”

এই ঘটনায় উদ্বেগে কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোজ কুমার ওঁরাও। তাঁর বক্তব্য, “স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোর সমস্যা রয়েছে। ব্লকে টাইফয়েড ছড়িয়ে পড়লেও, রোগ পরীক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা হল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন