কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরলেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। ফলে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে। এ দিন দুপুরে এক বৈঠকও হয়। মেডিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষ তমালকান্তি ঘোষ, হাসপাতাল সুপার যুগল করের পাশাপাশি কয়েকজন জুনিয়ার ডাক্তার এতে যোগ দেন। জুনিয়ারদের দাবিগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে কলেজ অধ্যক্ষ তমালকান্তিবাবু বলেন, “আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি। জুনিয়ার ডাক্তারদের কিছু দাবি রয়েছে। দাবিগুলো মূলত নিরাপত্তা সংক্রান্ত। বৈঠকে এ সমস্ত দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে।” হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “জুনিয়ার ডাক্তাররা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছেন। দাবিগুলো খতিয়ে দেখে যা যা করা সম্ভব করা হবে।”
মেডিক্যাল সূত্রে খবর, রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন বাদে অন্য কেউ যাতে অযথা হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে, সেই জন্য নজরদারি বাড়ানো হবে। বিশেষ করে রাতের বেলায়। তেমন হলে রাতে ক্যাম্পাসে ঢোকার একটি ফটকই খোলা থাকবে। বাকিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। নান্নুরচকের দিক দিয়েও হাসপাতালে ঢোকা যায়। এখানে একটি ছোট ফটক রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ফটকটিও আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে, মোটরবাইক, সাইকেল নিয়ে কেউ এখান দিয়ে ঢুকতে-বেরোতে পারেনি।
নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়ার ডাক্তাররা আগেও কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। এক সময় ঠিক হয়, হাসপাতালের দু’দিকে চেক-পোস্ট তৈরি হবে, থাকবে পুলিশ। রাতেও নজরদারি চলবে। শুধু মাতৃযান পরিষেবায় ব্যবহৃত অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। আর থাকবে চিকিৎসকদের গাড়ি। তবে এর কোনওটাই কার্যকর হয়নি। জুনিয়ার ডাক্তারদের ক্ষোভ মূলত এখানেই। তাঁদের বক্তব্য, রাতেও ক্যাম্পাসে এমন অনেকের আনাগোনা চলে, যারা রোগী নন, রোগীর পরিবারের লোকজনও নন। অবাঞ্ছিত এই আনাগোনার ফলে প্রায়ই নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা দেখা দেয়। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই আশঙ্কা বেশি করে দেখা দেয়। কারণ, হস্টেল থেকে কিছুটা পথ হেঁটেই হাসপাতালে আসতে হয়।য
নিরাপত্তার দাবিতে সোমবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। ফলে, চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়। কারণ, ৫০ জনেরও বেশি সিনিয়র ডাক্তার এখন নেই। কলকাতার এনআরএসে এমসিআই পরিদর্শনের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে না ফিরলে আন্দোলনরত জুনিয়ার ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মেলে। মেডিক্যালের এক আধিকারিকের মতে, দাবিদাওয়া থাকতে পারে। তবে এ ভাবে কর্মবিরতি চললে রোগীরা সমস্যায় পড়েন। হাসপাতাল সুপার যুগলবাবু বলেন, “সোমবার রাত থেকেই জুনিয়ার ডাক্তাররা কাজ শুরু করেন। কর্মবিরতির ফলে ওই দিন কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। মঙ্গলবার অবশ্য কোনও সমস্যা হয়নি। এ দিন স্বাভাবিক কাজকর্মই হয়েছে।”