জ্বালানি নেই, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’বছর পড়ে জেনারেটর

লোডশেডিংয়েও হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকারের তরফে একটি আধুনিক জেনারেটর বরাদ্দ করা হয়েছিল উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লক্ষাধিক টাকা খরচ করে একটি ঘরও তৈরি করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৬
Share:

বন্ধ পড়ে জেনারেটর রাখার ঘরটি। —নিজস্ব চিত্র।

লোডশেডিংয়েও হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকারের তরফে একটি আধুনিক জেনারেটর বরাদ্দ করা হয়েছিল উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লক্ষাধিক টাকা খরচ করে একটি ঘরও তৈরি করা হয়। বিদ্যুতের কাজও হয়। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতর জ্বালানি তেল বরাদ্দ না করায় প্রায় দু’বছর ধরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জেনারেটরটি চালু করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। এতে লোডশেডিংয়ের সময়ে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। চিকিৎসাধীন ও বহির্বিভাগের রোগীদের দুর্ভোগ বাড়ছে।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাসবিহারী দত্ত বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এখনও পর্যন্ত ওই জেনারেটরটি চালানোর জন্য জ্বালানি তেল কেনার কোনও বরাদ্দ দেয়নি। তাই সেটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।” তাঁর দাবি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে একাধিকবার বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হলেও সাড়া মেলেনি। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, “দিনের বেলায় ও সন্ধ্যার পরে লোডশেডিং হলে প্রচণ্ড গরমে জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ডে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। আলোর অভাবে রোগীদের ওষুধ, স্যালাইন ও ইনজেকশন দিতে সমস্যা হয়।” পেটের রোগে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন, ইটাহারের বাসিন্দা শিলা বর্মন বলেন, “লোডশেডিংয়ে গরমে ওয়ার্ডে থাকা যায় না। অন্ধকারে মশার উৎপাত বাড়ে। ওষুধ ও খাবার খেতে সমস্যা হয়।” বহির্বিভাগে আসা জ্বরে আক্রান্ত পোরসার বাসিন্দা মহম্মদ আলি বলেন, “বহির্বিভাগে লম্বা লাইন পড়ে। লোডশেডিং হলে রোগী এবং পরিবারের লোকজন দুর্ভোগে পড়েন।”

৩০ শয্যার ইটাহার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৫ জন চিকিৎসক, ৮ জন নার্স ও ১৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ জন রোগী আসেন। ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় পাল বলেন, “জেনারেটরটি চালু রাখতে প্রতি ঘণ্টায় ৫ লিটার করে ডিজেলের দরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিষদীয় সচিব অমল আচার্যের উদ্যোগে ২০১২ সালের নভেম্বরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ১০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ৫০ কেবি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জেনারেটর বরাদ্দ করে। জেনারেটরটি রাখার ঘর, বিদ্যুৎ-সহ আনুষাঙ্গিক কাজে আরও ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়। অমলবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমস্যার কথা জানিয়েছে। শীঘ্রই তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।”

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন