ডাক্তারির কাউন্সেলিংয়ে বাড়তি সময় কুড়ি দিন

মেডিক্যালের আসন ছাঁটাই নিয়ে মুশকিল আসানের জন্য যে-কোনও ভাবেই হোক, কিছু সময় চেয়েছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)। এই ব্যাপারে কেন্দ্রের আবেদন মেনে মেডিক্যালে প্রথম কাউন্সেলিংয়ের সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে ওই সময়সীমা ছিল ২৫ জুন। সেই জায়গায় ১৫ জুলাই পর্যন্ত ওই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৪ ০১:৪০
Share:

মেডিক্যালের আসন ছাঁটাই নিয়ে মুশকিল আসানের জন্য যে-কোনও ভাবেই হোক, কিছু সময় চেয়েছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)। এই ব্যাপারে কেন্দ্রের আবেদন মেনে মেডিক্যালে প্রথম কাউন্সেলিংয়ের সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে ওই সময়সীমা ছিল ২৫ জুন। সেই জায়গায় ১৫ জুলাই পর্যন্ত ওই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

সময় পাওয়ার জন্য ডাক্তারিতে ভর্তির কাউন্সেলিং পর্বকেই হাতিয়ার করেছিল এমসিআই। তাই শীর্ষ আদালতে আবেদন করার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল তারা। নিয়ম অনুযায়ী এমসিআইয়ের চিঠি ছাড়া কেন্দ্র এমন আবেদন করতে পারে না। দেশ জুড়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে প্রায় ১৬ হাজার আসন বাতিলের সুপারিশ করেছে কাউন্সিল। এই পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাউন্সেলিং শেষ করা সম্ভব নয় বলে সর্বোচ্চ আদালতে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই ওই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। তবে এমসিআই চেয়েছিল, সময়সীমা অন্তত এক মাস বাড়ানো হোক। সেই জায়গায় বাড়ল ২০ দিন।

এই সময় বৃদ্ধিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা কিছুটা আশ্বস্ত। তাঁরা জানান, এর ফলে তাঁদের হাতে কিছুটা হলেও অতিরিক্ত সময় থাকছে। পরিকাঠামোর উন্নয়নের বিষয়ে এই সময়সীমার মধ্যে কতটা এগোনো যায়, সেই বিষয়ে তৎপর হবেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যেখানে কয়েক বছরেও যথাযথ পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়নি, সেখানে ২০ দিন সময় পেয়ে কতটা কী করে ওঠা যাবে?

Advertisement

সরকারি ভাবে স্বাস্থ্য দফতরের কেউ এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিচ্ছেন না। তবে স্বাস্থ্যকর্তাদেরই একাংশ স্বীকার করছেন, এই অল্প সময়ে পরিকাঠামো নিয়ে বিশেষ কিছু করে ওঠা সম্ভব নয়। এর একটাই ইতিবাচক দিক আছে। পরিকাঠামো উন্নয়নের তোড়জোড় যাচাই করে এমসিআই আরও কিছু আসন ফিরিয়ে দিতে পারে। প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেও যে-সব ছাত্রছাত্রী ভর্তির ব্যাপারে দুশ্চিন্তা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের একাংশ তাতে উপকৃত হবেন। এবং ডাক্তার-সঙ্কটে সামগ্রিক ভাবে সুরাহা হবে রাজ্যেরও।

পরিকাঠামোর খামতি মেরামত করতে রাজ্য কতটা তৎপর?

বাংলার যে-সব মেডিক্যাল কলেজ সম্পর্কে এমসিআই আপত্তি তুলেছিল, তার সবক’টির ক্ষেত্রে রাজ্যের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার চিঠি এখনও পাঠানোই হয়নি। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরিকাঠামোর নানাবিধ ত্রুটি কী ভাবে ও কত দিনের মধ্যে দূর করা হবে, সেই বিষয়ে তাঁদের চিঠি কাল, মঙ্গলবারের মধ্যে পাঠানো হবে।

এত দেরি কেন?

স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, মাত্র দিন সাতেক আগে এমসিআই ওই কলেজে পরিকাঠামোর বিভিন্ন দিক নিয়ে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। এই এক সপ্তাহে সব দিক খতিয়ে দেখে রাজ্যের জবাব এখন তৈরি করে ওঠা যায়নি।

পরিকাঠামোর ঘাটতির কারণ দেখিয়ে এ রাজ্যে মেডিক্যালের ১০৫০টি আসন বাতিলের সুপারিশ করেছিল এমসিআই। গত শনিবার কাউন্সিলের কর্মসমিতির বৈঠকে তার মধ্যে ৪০০ আসন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি যে-সব আসন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলির ব্যাপারে আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে দিল্লিতে এমসিআই সূত্রের খবর। শনিবারের বৈঠকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ৫০টি, মুর্শিদাবাদ ও হলদিয়া আইকেয়ার মেডিক্যাল কলেজের ১০০টি করে এবং দুর্গাপুরের আইকিউ মেডিক্যাল কলেজের ১৫০টি আসন ফেরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের বাড়তি ১০০ আসন বাতিল করার ব্যাপারে তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় আছে বলে জানিয়েছে এমসিআই। আর স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ওই কলেজের পরিকাঠামো বাড়াতে সরকার কত দিনের মধ্যে কী কী পদক্ষেপ করবে, তা পৃথক ভাবে এমসিআই-কে জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন