নবজাতকদের জন্য নতুন টিকা

নবজাত শিশুদের নানা রোগ থেকে রক্ষা করতে রাজ্যে শিশুদের টিকাকরণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হল নতুন একটি প্রতিষেধক। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই প্রতিষেধকের নাম পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন। ডিপথেরিয়া, পার টু সিস (হুপিং কাশি), টিটেনাস, হেপাটাইটিস বি এবং হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা (টাইপ-বি)এই পাঁচটি মারণ রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে নতুন এই প্রতিষেধকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৯
Share:

নবজাত শিশুদের নানা রোগ থেকে রক্ষা করতে রাজ্যে শিশুদের টিকাকরণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হল নতুন একটি প্রতিষেধক। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই প্রতিষেধকের নাম পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন। ডিপথেরিয়া, পার টু সিস (হুপিং কাশি), টিটেনাস, হেপাটাইটিস বি এবং হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা (টাইপ-বি)এই পাঁচটি মারণ রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে নতুন এই প্রতিষেধকে।

Advertisement

শুক্রবার পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় সরকারি ভাবে চালু হল এই টিকাকরণ কর্মসূচি। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, নিউমোনিয়া রোগ এ দেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতবর্ষে এক থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের অন্তত ১৬ শতাংশই এই রোগের শিকার হয়ে মারা যায়। পরিসংখ্যান বলছে, মেনিনজাইটিস এবং নিউমোনিয়া হওয়ার প্রধান কারণ হল হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা (টাইপ-বি) জীবাণু। ভারতে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ফি বছর প্রায় ৭২ হাজার শিশু মারা যায়। প্রায় তিন লক্ষের মতো শিশু প্রতি বছর এই রোগে গুরুতর অসুস্থ হয়। এত দিন এই জীবাণুর প্রতিষেধক বাজার থেকে কিনে শিশুকে দিতে হত। এ বার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে তা পাবেন সাধারণ মানুষ।

এ দিন এই কর্মসূচি শুরু উপলক্ষে দুই জেলাতেই সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা (সিএমওএইচ)। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারাও। পুরুলিয়ার সিএমওএইচ মানবেন্দ্র ঘোষ জানান, পেন্টাভ্যালেন্ট নামে এই নতুন প্রতিষেধক শিশুকে ওই পাঁচটি মারণ রোগের হাত থেকে রক্ষা করবে। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু, কেরল, হরিয়ানা, গুজরাত, জম্মু-কাশ্মীর, পুদুচেরির মতো রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই টিকাকরণ চালু হয়ে গিয়েছে। তামিলনাড়ু বা কেরলে শিশুমৃত্যুর হারও কমেছে। আমাদের রাজ্যের শিশুমৃত্যুর হারও এই টিকাকরণ চালুর ফলে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।” বাঁকুড়ার সিএমওএইচ সুরেশ দাস বলেন, “কোনও শিশু জন্মানোর ছ’মাস পরে চার সপ্তাহের ব্যবধানে তিন বার পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দিতে হবে।” সাংবাদিক বৈঠকে বাঁকুড়া জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সুরেশবাবু জানান, এই মুহূর্তে জেলায় চিকিৎসকদের ১৪৬টি শূন্যপদ রয়েছে। ডাক্তারের অভাবে রাইপুরে মডেল হাসপাতাল গড়েও চালু করা যাচ্ছে না। তবে শীঘ্রই কিছু চিকিৎসক রাজ্য থেকে জেলায় পাঠানো হবে তিনি জানান।

Advertisement

অন্য দিকে, মানবেন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, পুরুলিয়া জেলায় যে সমস্ত উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সদর হাসপাতাল কিংবা মহকুমা হাসপাতালে নবজাত শিশুদের নিয়মিত টিকা দেওয়া হয়, সেখানেই আগামী বৃহস্পতিবার থেকে নতুন এই টিকা দেওয়া হবে। এ জন্য টিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগে ডিটিপি ও হেপাটাইটিস বি টিকা দিতে শিশুর শরীরে আলাদা সুচ ফোটানো হত। এখন শিশুর শরীরে একবারই তা ফোটাতে হবে। ফলে যন্ত্রণা থেকেও শিশুরা মুক্তি পাবে। লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে এই টিকাকরণ এখনও চালু না হলেও যেহেতু পুরুলিয়া জেলার অবস্থান ঝাড়খণ্ড লাগোয়া, তাই আত্মীয়তার সূত্রে ওই রাজ্যের কোনও শিশু এই জেলায় থাকলে সে-ও এই টিকা পাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন