কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

পায় না রোগী, পড়ে নষ্ট ওষুধ মিলল কুয়োয়

স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রায়শয়ই ওষুধ মেলে না। চিকিৎসকদের লিখে দেওয়া ওষুধ কিনতে হয় বাইরের দোকান থেকে রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা এমন অভিযোগে সরব হন বারবারই। অথচ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পড়ে থেকে সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া বহু ওষুধ পরিত্যক্ত কুয়োয় ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। জানাজানি হওয়ার পরে ওষুধগুলি পুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট এক কর্মীকে শো-কজ করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৩
Share:

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কুয়োয় রবিবার মিলল এত ওষুধ। নিজস্ব চিত্র।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রায়শয়ই ওষুধ মেলে না। চিকিৎসকদের লিখে দেওয়া ওষুধ কিনতে হয় বাইরের দোকান থেকে রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা এমন অভিযোগে সরব হন বারবারই। অথচ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পড়ে থেকে সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া বহু ওষুধ পরিত্যক্ত কুয়োয় ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। জানাজানি হওয়ার পরে ওষুধগুলি পুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট এক কর্মীকে শো-কজ করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

কাঁকসার একটি বড় অংশের মানুষের একমাত্র ভরসা এই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ৩০ শয্যার এই কেন্দ্রটি সারা বছরই রোগীতে ভিড় থাকে। এ ছাড়া বহির্বিভাগে প্রতি দিনি কয়েকশো করে রোগী আসেন বলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে। কাঁকসা, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, বনকাটি-সহ বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল।

অনেক সময়েই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগী বা তাঁদের আত্মীয়েরা অভিযোগ করে থাকেন, চিকিৎসকেরা যে সব ওষুধ লিখে দেন তার বেশিরভাগই এখানে পাওয়া যায় না। বাইরে থেকে কিনতে হয়। যাতে বেশ সমস্যায় পড়েন এলাকার গরিব মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ পাঠানো হলেও তা দেওয়া হয় না। সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে একটি পরিত্যক্ত কুয়োয় জীবনদায়ী-সহ নানা ওষুধ ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।

Advertisement

কাঁকসার বাসিন্দা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেশির ভাগ সময়েই প্রয়োজনীয় ওষুধ মেলে না। অথচ, রোগীদের ওষুধ না দিয়ে সেগুলি সময়সীমা পার করে বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিছু লোকজন এর সঙ্গে যুক্ত বলেই এমন ঘটেছে।” তৃণমূলের কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অজয় মজুমদারের আবার অভিযোগ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশ বিভিন্ন ওষুধের দোকানের কাজ-কারবারে জড়িত। সে কারণেই রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত ওষুধু পাঠানো সত্ত্বেও তা ফেলে রেখে নষ্ট করা হয়।”

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের চাহিদামতো ওষুধ স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাঠানো হয়। কোনও ওষুধ পড়ে থাকলে তা সময়সীমা পেরোনোর আগে সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানাতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কাঁকসা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তা জানানো হয়নি বলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। পরিত্যক্ত কুয়োয় ওষুধ ফেলে দেওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে সেগুলি পুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাতী রায়চৌধুরী জানান, কী ভাবে এমন ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “এই দফতরের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মীকে শো-কজ করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন