ভোটে নিষেধ শিবিরে, রক্ত সঙ্কট উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে

ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না দেখে প্রধাননগরের বাসিন্দা মতিয়া মিয়াঁ মেয়ের চিকিৎসার জন্য রক্ত পেতে মেডিক্যাল কলেজ এলাকার এক তৃণমূল নেতার দ্বারস্থ হলেন। চোপড়ার বাসিন্দা হুসেন আলি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছেন। ও-পজিটিভ বিভাগের রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে পেতে কষ্ট হচ্ছে দেখে পরিবারের লোকেরা এক ব্যক্তির মাধ্যমে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতার কাছে আর্জি জানান। বিস্তর ছোটাছুটি করে অনেক কষ্টে রক্ত পান পরিজনেরা।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৫১
Share:

ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না দেখে প্রধাননগরের বাসিন্দা মতিয়া মিয়াঁ মেয়ের চিকিৎসার জন্য রক্ত পেতে মেডিক্যাল কলেজ এলাকার এক তৃণমূল নেতার দ্বারস্থ হলেন। চোপড়ার বাসিন্দা হুসেন আলি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছেন। ও-পজিটিভ বিভাগের রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে পেতে কষ্ট হচ্ছে দেখে পরিবারের লোকেরা এক ব্যক্তির মাধ্যমে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতার কাছে আর্জি জানান। বিস্তর ছোটাছুটি করে অনেক কষ্টে রক্ত পান পরিজনেরা।

Advertisement

নির্বাচন পরিস্থিতিতে রক্ত সংগ্রহের শিবির কমে গিয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্ত সঙ্কট চলছে উত্তরবঙ্গ জুড়েই। তাই নেতা-কর্তাদের দোরেই ভিড় বাড়ছে। অনেকে আবার চেনা পরিচিতের হাত ধরে মহকুমাশাসক, থানার ওসি, আইসিদের দ্বারস্থ হচ্ছেন রক্তের জন্য। প্রতিদিনই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে এমন বিভিন্ন অনুরোধ, আর্জি আসছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকেই।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা মৃদুময় দাস বলেন, “নেতা, বিধায়ক থেকে পুলিশ অফিসার, প্রশাসনিক কর্তারা অনেকেই পরিচিত রোগীদের রক্তের জন্য প্রতিদিনই অনুরোধ করছেন। পরিস্থিতি এমনই যে কাকে ছেড়ে কাকে রক্ত দেব তা নিয়েই বিপত্তি।”

Advertisement

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কে মজুত রক্ত এখন অনেক কম। গত ১ মাস ধরেই কমবেশি এই পরিস্থিতি চলছে। কোনও বিভাগে ২৫ ইউনিটের কম মজুত থাকলেই সঙ্কটজনক অবস্থা বলে ধরা হয়। প্রতিদিন গড়ে ৭০ ইউনিট রক্ত লাগে-ই। কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল, মালদহ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এ, বি, এবি এবং ও সব ক্ষেত্রে পজিটিভ বিভাগের রক্ত বেসি মজুত নেই। শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “রক্তের প্রয়োজনের বিষয়টি স্পষ্টকাতর। প্রশাসনের তরফে এ সময় রক্তদান শিবির করার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

মতিয়া মিয়াঁ বলেন, ‘‘মেয়ে অলেমা বিবির চিকিৎসার জন্য বি পজিটিভ রক্ত পেতে দিন কয়েক আগেই ব্লাড ব্যাঙ্কে খোঁজ নেই। ওই রক্ত এখনই মিলবে না বলে জানানো হয় দু দিন ধরেই কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত পরিচিত একজন মেডিক্যাল কলেজ এলাকার এক তৃণমূল নেতার কাছে যেতে বলেন। তাঁর কাছে গিয়ে সব বলি।” বিস্তর অনুরোধে সমস্যার সুরাহা হয়। হুসেন আলির জন্য ও-পজিটিভ বিভাগের রক্তে পেতে ঘুরছিলেন তাঁর মামা মহম্মদ সামসুল। উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতার কাছে আর্জি জানান। সোমবার তিনি তাঁকে মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিকের কাছে পাঠান। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “নির্বাচনের সময় বরাবরই রক্তের সঙ্কট তৈরি হয়। প্রশাসনের তরফে দেখা দরকার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন