রোগিণীর মৃত্যুতে কি গাফিলতি, উত্তপ্ত হাওড়ার হাসপাতাল

চিকিৎসায় গাফিলতিতে এক মহিলার মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মধ্য হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া ওই মহিলার মৃত্যুর প্রতিবাদে চিকিৎসক ও হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি তোলেন মৃতার পরিজনেরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। শেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে র‌্যাফ ও বিশাল পুলিশবাহিনী নামানো হয়। মৃতার স্বামী পুলিশের কাছে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করে মৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪৫
Share:

অন্নপূর্ণা মাইতি

চিকিৎসায় গাফিলতিতে এক মহিলার মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মধ্য হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া ওই মহিলার মৃত্যুর প্রতিবাদে চিকিৎসক ও হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি তোলেন মৃতার পরিজনেরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। শেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে র‌্যাফ ও বিশাল পুলিশবাহিনী নামানো হয়। মৃতার স্বামী পুলিশের কাছে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করে মৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছেন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিরঞ্জন ব্যানার্জি লেনের বাসিন্দা অন্নপূর্ণা মাইতি (২৮) নামে ওই মহিলা ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে গত শুক্রবার প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। রবিবার অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে আইসিইউ ব্যবস্থা থাকা কোনও হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। এর পরে মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের একটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন মহিলার স্বামী ও আত্মীয়েরা। সেখানেই সোমবার দুপুরে মৃত্যু হয় ওই রোগিণীর।

এ দিন ওই হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অন্নপূর্ণার স্বামী অমিত মাইতির অভিযোগ, “গত কাল রাতে ভর্তি করা হলেও আজ দুপুর পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখেননি। কোনও চিকিৎসাও হয়নি। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল ওর।”

Advertisement

মৃতার আত্মীয়দের অভিযোগ, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ অন্নপূর্ণাকে তৃতীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হচ্ছিল। তখন আরএমও তাঁকে পরীক্ষা করে জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে রোগিণীর। কিন্তু এর পরেও মৃতাকে অন্য হাসপাতালে পাঠানোর কেন চেষ্টা হচ্ছে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ওই রোগিণীকে ফের আইসিইউতে ভর্তি করেন। শেষ পর্যন্ত দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ অন্নপূর্ণার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করে হাসপাতাল।

সুরমা বসু নামে মৃতার এক আত্মীয়ার অভিযোগ, “হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ কোনও চিকিৎসাই করেননি। এমনকী, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে রাত ১১টায় জানানো হলেও তিনি এসেছেন পরদিন দুপুরে।”

যদিও হাসপাতালে ওই রোগিণীর দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক রাজর্ষি সেনগুপ্ত বলেন, “হাসপাতাল থেকে অনেক রাতে আমায় ফোনে ওই রোগিণীর ভর্তি হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তখন রোগিণীর শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল। আমার আসার কথা ছিল সোমবার সকালে। কিন্তু আজ সকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, রোগিণীকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁকে যে পাঠানো হয়নি, তা জানায়নি। তাই সকালে আসিনি।”

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সকাল ১১টা নাগাদ যখন ওই মহিলাকে তাঁর আত্মীয়েরা তৃতীয় হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাঁর পালস্ পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু তখন তাঁকে মোটেই মৃত ঘোষণা করা হয়নি। হাসপাতালের সিনিয়র ম্যানেজার সুপর্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই মহিলার চিকিৎসায় গাফিলতির যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক নয়। ওঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক না আসলেও হাসপাতালের অন্য ডাক্তারেরা চিকিৎসা করছিলেন। কিন্তু আচমকাই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন