মাস চারেক আগে লিফট-বিভ্রাটের জেরে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন এক মহিলা। তার পর থেকেই সেই লিফট বন্ধ। এখনও সারানোর কাজ শেষ না হওয়ায় ওঠানামার সময়ে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনদের যেমন ভুগতে হচ্ছে, তেমনই বিপাকে পড়ছেন হাসপাতালের চিকিত্সক, নার্স এবং কর্মীরাও। কবে, সেই লিফট চালু হবে কেউই জানেন না। দু’টি লিফ্টের মধ্যে একটি বন্ধ থাকায় সমস্যার কথা মেনে নিয়ে হাসপাতালের সুপার সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানকার দু’টি লিফটের দায়িত্ব জেলা পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিকাল বিভাগের। দুর্ঘটনার পরে ওই দফতর থেকে সব কিছু খতিয়ে দেখে গিয়েছে। নির্দেশমতো আমরা লিফট বন্ধ রেখেছি। সারানোর জন্য বারবার বলা হচ্ছে। কবে চালু হবে বলতে পারছি না।’’ জেলা পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অ্যাসিস্টান্ট ইঞ্জিনিয়ার জয়দীপ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘লিফট সারানোর কাজ এখনও শেষ হয়নি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। শীঘ্রই তা চালু করা হবে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ জুন দুর্ঘটনায় জখম চিকিত্সাধীন এক মহিলাকে এক্স-রে’র পরে ট্রলিতে করে তিনতলায় নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর ছেলে। কিন্তু বহির্বিভাগের পাশের ওই লিফ্টে মহিলাকে নিয়ে যাওয়ামাত্র যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য তা উঠতে শুরু করে। মহিলার ট্রলির একাংশ তখনও লিফ্টের বাইরে বেরিয়ে ছিল। সেই অবস্থাতেই লিফট উঠতে থাকে। ভিতরের মেঝের একাংশ ভেঙে পড়ায় ট্রলি থেকে উল্টে ওই মহিলার মাথাও ঝুলে যায়। তাঁর ছেলের চিত্কারে হাসপাতালের কর্মীরা মহিলাকে উদ্ধার করেন। সম্প্রতি তিনি ছাড়া পেয়েছেন। কিন্তু সেই দুর্ঘটনার পর থেকেই বন্ধ ওই লিফট। হাসপাতালে যে লিফটটি চালু রয়েছে, সেটি নতুন ভবনের। জেলার সদর হাসপাতাল হওয়ায় প্রতিদিনই বহু রোগী আসেন। কিন্তু মাত্র একটি লিফট চালু থাকায় তাতে চাপ বাড়ছে। রোগীকে দোতলা-তিনতলায় ওঠানামা করতে হলে নতুন ভবনের লিফট দিয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তাঁদের দুর্ভোগ বাড়ছে।
রোগীদেরই এক জন ধনেখালির অশোক মাঝি। মেরুদণ্ডের ব্যথায় তিনি ভুগছেন। তিনি বলেন, “সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু উপায় নেই। এই হাসপাতালের যে এই অবস্থা হবে ভাবতে পারিনি।” একই রকম ভাবে দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন আরও অনেকে।