জঙ্গিপুরের অনুষ্ঠানে।
মুর্শিদাবাদ জেলায় দ্বিতীয় ও শেষ দিনের সফরে একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন এবং একটি হাসপাতালের শিলান্যাস করলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
জঙ্গিপুরের কুলোরিতে বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠছে ফুড পার্ক। সেই পার্কের ১০ একর জমিতে ২০১০ সালের অক্টোবরে বেসরকারি এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিলান্যাস করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সেই প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন তিনি, রাষ্ট্রপতি হিসাবে। উদ্বোধনী মঞ্চে তিনি বলেন, ‘‘গুরুগাঁওয়ের পর জঙ্গিপুরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। পড়ুয়ারা এখান থেকেই ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ পাবে।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গেই ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন মেট্রো শহরে এই ধরনের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানকার পরিকাঠামো যথেষ্ট উন্নত। কিন্তু জঙ্গিপুরের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই ধরণের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
এদিনই দুপুরে নবগ্রামের পলসণ্ডা এলাকায় বেসরকারি একটি হাসপাতালের শিলান্যাস করেন রাষ্ট্রপতি। ‘দয়া দুয়ার মিনি হাসপাতাল’ নামে নবগ্রামের পলসণ্ডা গির্জার ঠিক বিপরীতে ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল আগেও ছিল। সেখানে বহির্বিভাগও ছিল। কিন্তু ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি-সহ হাসপাতাল ভবন অধিগ্রহণ করে ন্যাশন্যাল হাইওয়ে অথরিটি কর্তৃপক্ষ। ওই ক্যাথলিক চার্চকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। সেই অর্থেই নতুন হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে সড়ক পথে পলসণ্ডা ক্যাথলিক চার্চ চত্বরে এসে পৌঁছন রাষ্ট্রপতি। গাড়ি থেকে নেমে মঞ্চে উঠতেই মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের বৃন্দবাদক দলের পক্ষ থেকে বাজানো হয় জাতীয় সঙ্গীত। প্রায় আধ ঘণ্টা মঞ্চে ছিলেন রাষ্ট্রপতি। এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবনের মানোন্নয়নে বেসরকারি ওই সংস্থার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছেন। তাঁদের জীবনের মান উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি।” ক্যাথলিক চার্চের বরিষ্ঠ সদস্য বয়লা হাঁসদা বলেন, “গত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হওয়ার পরেই রাষ্ট্রপতি পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় আমাদের গির্জায় এসেছিলেন। তখনই হাসপাতালের নতুন ভবনের শিল্যান্যাসের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা হয়। আজ রাষ্ট্রপতি নিজে এসেছেন সেই অনুষ্ঠানে। এলাকাবাসী খুশি।”
রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে নবগ্রামে গত কয়েক দিন ধরেই ছিল সাজো সাজো রব। এ দিন পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী লরি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রবেশের ক্ষেত্রেও ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি। যদিও সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না।