স্কুলের শুরুতে প্রার্থনায় জাতীয় সঙ্গীত বা অন্য গান গাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে প্রায় সব স্কুলেই। এ বার প্রতিদিন নিয়ম করে প্রার্থনার সময় ডেঙ্গি, জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের মতো মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে পড়ুয়াদের সচেতনতা বাড়াতে চলবে প্রচার। কোনও শিক্ষক বা সেলিব্রেটি নয়, বিভিন্ন ক্লাসের ‘মনিটর’ ব্যাখ্যা করবে এইসব রোগের প্রতিকার পদ্ধতি। মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে এ ভাবেই স্কুলের পড়ুয়াদের দিয়ে প্রচার করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
প্রচারের তৈরি করা হয়েছে লিফলেট। লিফলেটে লেখা রয়েছে, “ডেঙ্গি একটি ভাইরাস ঘটিত জ্বর। এডিস ইজিপ্টাই নামে একপ্রকার মশা এই জ্বরের বাহক। এই মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়।” তারপরই লেখা রয়েছে ডেঙ্গির চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রার্থনার পরেই সপ্তাহে দু’দিন ক্লাসের সব ছাত্রছাত্রীদের সামনে এই লিফলেট পড়ে শোনাবে ‘মনিটর’। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরের জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকও। বৈঠকেই দফতরের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। জেলা উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “ছাত্রছাত্রীরাই সমাজের ভবিষ্যৎ। তাই এই প্রচারে পড়ুয়াদের যোগদান বাড়াতে পারলে, এই ধরনের মশাবাহিত রোগ অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, “এটা ভাল উদ্যোগ। আমরা সব স্কুলকেই বিষয়টি জানিয়ে দেব।”
ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু ঘটনা নতুন নয়। পানি এনসেফ্যালাইটিস, ডেঙ্গি-সহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে প্রতি বছর। এই সকল রোগের প্রকোপ কমাতে প্রতি বছরই স্বাস্থ্য দফতর নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। তবে তাতে আশানুরূপ সাফল্য মেলেনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় গত বছর জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হন ১৩ জন। অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোম দেখা গিয়েছিল ৬২ জনের। ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৮ জন। যদিও কারও মৃত্যু হয়নি বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।
চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত জাপানি এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান না মিললেও অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোম দেখা গিয়েছে ৮ জনের। ডেঙ্গি হয়েছে ৬ জনের। মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাগে আনতে এ বার তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রচারে অব্যবহৃত পাত্রে জল জমতে না দেওয়া, নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করা, শরীর ঢাকা পোশাক পরা, মশারি খাটিয়ে শোওয়ার মতো বিষয় রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের মতে, পড়ুয়াদের দিয়ে প্রচার করালেও তারা নিজেরাও সচেতন হবে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকদের কথায়, “ছেলে নিয়ম মেনে চলছে দেখলে বা নিয়ম মেনে চলার কথা বললে বাড়ির কেউ তা অবহেলা করবে না। আর নিয়মিত প্রার্থনার সঙ্গে একটানা স্কুলে একই কথা বলে গেলে তা ছাত্রছাত্রীদের ভুলে যাওয়ারও সূযোগ নেই।”
নতুন স্টল। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের সামনে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র একটি স্টলের উদ্বোধন হল বৃহস্পতিবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ এবং টিএমসিপি ইউনিটের উদ্যোগে স্টলটি করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু।