সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত এ বার খাস কলকাতায়

রাজস্থান, তেলঙ্গানা, গুজরাত, মুম্বইয়ের পরে এ বার সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত রোগিণীর সন্ধান মিলল পশ্চিমবঙ্গে। দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি এক মহিলার এইচ১এন১ পজিটিভ বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, এখনই এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। কারণ ওই মহিলা এ রাজ্যের বাসিন্দা নন। একটি বিয়ের নিমন্ত্রণে মুম্বই থেকে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে অবশ্য ওই মহিলার কলকাতার ঠিকানাই উল্লেখ করা রয়েছে।

Advertisement

প্রীতিকা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৫
Share:

রাজস্থান, তেলঙ্গানা, গুজরাত, মুম্বইয়ের পরে এ বার সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত রোগিণীর সন্ধান মিলল পশ্চিমবঙ্গে। দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি এক মহিলার এইচ১এন১ পজিটিভ বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement

স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, এখনই এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। কারণ ওই মহিলা এ রাজ্যের বাসিন্দা নন। একটি বিয়ের নিমন্ত্রণে মুম্বই থেকে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে অবশ্য ওই মহিলার কলকাতার ঠিকানাই উল্লেখ করা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রোগিণীকে আলাদা একটি ঘরে (আইসোলেশন) রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত তিনি ভেন্টিলেশনে রয়েছেন।

রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “কলকাতায় সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত ওই রোগিণীর কথা আমরা জানি। যে হেতু ওই রোগিণী এ রাজ্যের বাসিন্দা নন, তাই এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। তবে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই রাজ্যে সব মেডিক্যাল কলেজে এবং জেলা স্তরের হাসপাতালগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সব বেসরকারি হাসপাতালকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে এমন কোনও রোগী ভর্তি হলেই দ্রুত তারা স্বাস্থ্য দফতরকে তা জানায়।”

Advertisement

তবে স্বাস্থ্য দফতর জানলেও কলকাতা পুরসভা এখনও এ বিষয়ে কিছুই জানে না। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “যে যাই বলুক, আমাদের কাছে এ ব্যাপারে এখনও কোনও খবর নেই।”

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

গত সেপ্টেম্বরে এ রাজ্যে তিন জন সোয়াইন ফ্লু আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে এক জন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। অন্য দু’জন কলকাতার। ই এম বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁরা ভর্তি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা রোগীর মৃত্যু হয়। তখনও অবশ্য পুরসভার কাছে বহু দিন পর্যন্ত কোনও খবর ছিল না।

২০০৯ সালে ভাইরাসের চরিত্র পরিবর্তিত হওয়ায় শুয়োরের থেকে এইচ১এন১ রোগটি ছড়াতে শুরু করে মানুষের মধ্যে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমেও ছড়ায় এই রোগ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০১০ সালে প্রথম এ রাজ্যের প্রায় ৬৩ জন আক্রান্ত হন এই ভাইরাসে। মারা যান ৫ জন। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ৪০ জনের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও প্রাণ হারান তিন জন।

কিন্তু নতুন বছরের শুরু থেকেই দেশের অনেক রাজ্যেই এই রোগটি ফের ছড়াতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত হয়ে দেশ জুড়ে মারা গিয়েছেন দু’শোর বেশি মানুষ। তার মধ্যে গত দু’দিনে শুধুমাত্র রাজস্থানে মারা গিয়েছেন ৮১ জন। এক মাসের মধ্যেই সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০০। সে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজস্থানে ৩৩টি জেলার মধ্যে ২৯টি জেলার বহু মানুষ সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে গত মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। সোয়াইন ফ্লু রুখতে জেলা ও রাজ্য স্তরে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ করার বিষয়ে আলোচনাও করেন তিনি।

তবে রাজস্থানের পাশাপাশি মুম্বই এবং তেলঙ্গানাতেও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন সোয়াইন ফ্লুয়ে মারা গিয়েছেন। সম্প্রতি বিকানের ও অজমেঢ়ের তিন জন বাসিন্দা এবং জয়পুর, বারমের, কোটা, উদয়পুর, বাঁশওয়ারা ও চিতোরগড়ের চার জন করে বাসিন্দার সোয়াইন ফ্লুয়ে মৃত্যু হয়েছে। মুম্বইয়ে ২৩ জন সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তেলঙ্গানাতে ৩৯ জন সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গুজরাতেও সোয়াইন ফ্লু ছড়াচ্ছে দ্রুত। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৭১ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন