সোয়াইন ফ্লু সন্দেহে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সে ধূপগুড়ির বাসিন্দা। সোমবার রাতে প্রবল জ্বর নিয়ে ভর্তি হয় ওই ছাত্র। তাকে হাসপাতালের ‘আইসোলেশন ওয়ার্ডে’ রেখে চিকিত্সা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার তার থুতু পরীক্ষার জন্য কলকাতার নাইসেডে পাঠানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “সর্দি, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ছাত্রটিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে সোয়াইন ফ্লু নয় বলেই মনে হচ্ছে। তবে ঝুঁকি না নিয়ে রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রটি প্রায় এক সপ্তাহ থেকে জ্বরে ভুগছে। সাধারণ চিকিত্সায় কাজ হচ্ছে না দেখে ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে সোমবার রাতে তাকে জলপাইগুড়িতে পাঠানো হয়।
এ দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মী এবং সাধারণের মধ্যে সচেতনতা প্রচারে আলোচনার আয়োজন করেছিলেন মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের সদস্যরা। এ ব্যাপারে বক্তৃতা করতে মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিত্সকদের একাংশকে তারা আমন্ত্রণ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা কেউ না যাওয়ায় হতাশ সংগঠনের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত জুনিয়র চিকিত্সকদের কয়েকজন, সংগঠনের কর্মকর্তারা মিলে বিষয়টি তুলে ধরেন। সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য চন্দন কুমার শিট বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম, হাসপাতালের ওই চিকিত্সকেরা এসে বিষয়টি তুলে ধরবেন যাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়ে। অথচ তাঁরা কেউ এলেন না। তাঁরা আদৌ রোগ প্রতিরোধ করতে চান কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”
হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস জানান, সে রকম কোনও ব্যাপার নেই। তিনি এ দিন মহকুমা পরিষদের একটি বৈঠকে গিয়েছিলেন। তাই যেতে পারেননি। তবে এ দিন যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা প্রশংসনীয়।
সোয়াইন ফ্লু নিয়ে সতর্ক করতে এদিন নার্সিংহোমের চিকিত্সক এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি জানান, টানা কয়েকদিনের জ্বর-সহ বিশেষ কিছু উপসর্গ নিয়ে কোনও রোগী নার্সিংহোমে গেলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা ওই রোগীকে পরীক্ষার পরে চিকিত্সকেরা সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। নার্সিংহোমের মেডিক্যাল অফিসারদের তা জানানো হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সার জন্য ইতিমধ্যে সদর হাসপাতালে দুই শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হবে। চিকিত্সক দল গড়া হয়েছে।