হদিস নেই সদ্যোজাতর

সন্দেহভাজনের ছবি আঁকালো সিআইডি

দেড় সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের শিশু নিখোঁজ রহস্যের জট খুলতে পারল না পুলিশ। সিআইডি-র শিল্পীকে দিয়ে পুলিশ ইতিমধ্যে শিশু উধাওয়ের ঘটনায় সন্দেহভাজন এক মহিলার ছবি আঁকিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ঘটনার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন রক্ষীকে সরিয়ে দিল। তাতেও ক্ষোভ কমেনি গ্রামবাসীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫০
Share:

শিশু উদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।

দেড় সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের শিশু নিখোঁজ রহস্যের জট খুলতে পারল না পুলিশ। সিআইডি-র শিল্পীকে দিয়ে পুলিশ ইতিমধ্যে শিশু উধাওয়ের ঘটনায় সন্দেহভাজন এক মহিলার ছবি আঁকিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ঘটনার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন রক্ষীকে সরিয়ে দিল। তাতেও ক্ষোভ কমেনি গ্রামবাসীর। তারা অবিলম্বে ওই সদ্যোজাতকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবিতে এ বার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হল। মঙ্গলবার আড়শার কালীপুর থেকে একদল পুরুষ ও মহিলা পুরুলিয়া জেলাশাসকের দফতরে এসে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। পরে অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা।

Advertisement

গত ৭ নভেম্বর সকালে হাসপাতালের তিনতলায় নিওনেটাল ওয়ার্ড থেকে কালীপুরের প্রসূতি মেনকা মুর্মুর সদ্যোজাত ছেলে উধাও হয়ে যায়। এক মহিলা এসে তাকে নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। প্রথণে হাসপাতাল পরে শিশুটির আত্মীয়েরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। গ্রামবাসীও হাসপাতালে এসে শিশুটিকে উদ্ধারের দাবি জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোয়েন্দাদেরও দ্বারস্থ হন। কিন্তু উদ্ধার করা যায়নি।

কিছু দিন অপেক্ষা করে এ বার জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাতে এলেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ওই সদ্যোজাতের বাবা ডাঁট মুর্মু, সদ্যোজাতের মাসি পাণি হাঁসদা। ছিলেন জেলা কংগ্রেস নেতারাও। এ দিন তাঁরা অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রবালকান্তি মাইতির সঙ্গে দেখা করেন দাবি জানান। প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে এসে ডাঁট মুর্মু ও পাণি হাঁসদা বলেন, “আমরা অতিরিক্ত জেলাশাসককে জানিয়েছি, যে ভাবেই হোক আমাদের ছেলেকে খুঁজে বের করতে হবে।”

Advertisement

গ্রামবাসীদের হাতে ছিল পোস্টার ‘বাচ্চা চাই, বাচ্চা দাও, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জবাব দাও’। অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে যখন আলোচনা চলছে তখন বাইরে অবস্থানে বসেছিলেন অন্য বাসিন্দারা। পুলিশকর্মীরাও ছিলেন। গ্রামবাসীদের মধ্যে আনতী টুডু, বুদ্ধেশ্বর মুর্মু, পরমেশ্বর মাঝি সকলেরই এককথা “আমাদের গ্রামের ওই ছোট বাচ্চাটিকে খুঁজে বের করতেই হবে।” অতিরিক্ত জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কংগ্রেস নেতা উজ্জ্বল কুমার, বিভাস দাস বলেন, “আমরা আগে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আমাদের দাবি জানিয়েছি। এ বার আমরা প্রশাসনের কাছে এসেছি। আমরা আর তিনদিন সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে শিশুটিকে খুঁজে না পাওয়া গেলে আমরা আন্দোলনে নামব।”

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, “ওঁদের জানিয়েছি পুলিশ তদন্ত করছে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিনজনকে সরিয়ে দিয়েছে। সেই সময়ে যাঁরা ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন তাঁদেরও শো-কজ করা হয়েছে।” তিনি জানান, এ দিন গ্রামবাসী যে দাবিপত্র জমা দিয়েছেন, তা জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সিআইডির শিল্পীকে দিয়ে সন্দেহভাজন মহিলার ছবিও আঁকিয়েছে পুলিশ। শিশুটিকে ওই মহিলা নিয়ে যাওয়ার সময় তার এক বয়স্ক আত্মীয়া সেখানে ছিলেন। তাঁর দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী ওই শিল্পীকে দিয়ে ছবি আঁকানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “সন্দেহভাজন মহিলার ছবি আঁকানো হয়েছে। কিন্তু বর্ণনা অনুযায়ী সন্দেহভাজনের মুখের পাশের অংশ আঁকা গিয়েছে। সামনের দিকের ছবি পাওয়া যায়নি। পুরোমাত্রায় খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন