কার্ফু উঠছে, স্কুল খুলছে উপত্যকায়, নেট-মোবাইল বন্ধই

সংসদে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের আগে থেকেই উপত্যকা ছেয়ে ফেলা হয় নিরাপত্তা বাহিনীতে। জারি হয় কার্ফু। গ্রেফতার ও গৃহবন্দি করা হয় রাজনৈতিক নেতাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:২২
Share:

কার্ফুর মধ্যে রাস্তায় নমাজ। শুক্রবার শ্রীনগরে। ছবি: এপি।

সরকারি দফতর খুলেছে আজ। সোমবার থেকে কাশ্মীরের বন্ধ স্কুল-কলেজও খুলছে। ১২ দিনের কার্ফুর মধ্যে কোনও প্রাণহানি না হওয়া এবং ইদ ও স্বাধীনতা দিবসে বড়সড় বিক্ষোভ না-হওয়ায় ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ তোলার ইঙ্গিত দিল প্রশাসন। কাল সকালে ফিরবে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যসচিব বিভিআর সুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘‘সম্ভাব্য জঙ্গি হানার গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে কাশ্মীরে কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়। এখন পর্যায়ক্রমে তা তুলে নেওয়া হবে।’’

Advertisement

সংসদে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের আগে থেকেই উপত্যকা ছেয়ে ফেলা হয় নিরাপত্তা বাহিনীতে। জারি হয় কার্ফু। গ্রেফতার ও গৃহবন্দি করা হয় রাজনৈতিক নেতাদের। আজও কংগ্রেস নেতা গুলাম আহমেদ মিরকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ আজ কাশ্মীর নিয়ে রুদ্ধদ্বার ঘরোয়া আলোচনা সেরেছে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করে কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা শুনিয়েছেন।

ইদ ও স্বাধীনতা দিবসে উপত্যকায় শান্তি থাকায় বিধিনিষেধ তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। আজ সকালে দিল্লির সঙ্গে কথা বলেন কাশ্মীর প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। সূত্রের খবর, ধাপে ধাপে কার্ফু তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেয় কেন্দ্র। সেই মতো আজ ২২টি জেলার ১২টি থেকে কার্ফু তুলে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিবের দাবি, ‘‘জেলাগুলিতে আজ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরেছে। তবে এর মধ্যে ৫টিতে রাত্রে কার্ফু থাকছে। চলেছে যাত্রিবাহী বাসও।’’ সূত্রের খবর, উপত্যকার শান্ত এলাকা থেকে কার্ফু সরিয়ে সরকার এখন দেখতে চাইছে। ফল দেখে বাকি এলাকা থেকে কার্ফু সরানোর কথা ভাবা হবে। তবে শ্রীনগরের কোনও কোনও এলাকায় আজও বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করেছে সিআরপি।

Advertisement

ল্যান্ডলাইন পরিষেবা ফেরার আশ্বাস দিলেও মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের চক্রান্তে জঙ্গিদের কাছে মোবাইলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সব দিক খতিয়ে দেখে পর্যায়ক্রমে ওই পরিষেবা ফেরানো হবে।’’ তবে এখনই রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যসচিব শুধু বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক গ্রেফতারের বিষয়টি ধারাবাহিক ভাবে পর্যালোচনা করা হবে।’’

কার্ফু জারির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ওই আমলা। তাঁর দাবি— ‘‘সম্প্রতি গোয়েন্দারা খবর পান, জঙ্গি সংগঠনগুলি কাশ্মীরে হামলার ছক কষছে। তা রুখতেই কার্ফু জারি করা হয়। তা ছাড়া কাশ্মীরে বিক্ষোভে পাকিস্তানের সক্রিয় উস্কানি থাকে। এ বার সেটা আটকাতেই এই সিদ্ধান্ত।’’ তবে কাশ্মীরিদের বিক্ষোভ ঠেকাতে যথেচ্ছ ছররা বন্দুক চালানোর অভিযোগ উঠেছে। তাতে জখম হয়েছেন কয়েক জন।

আজ শীর্ষ আদালতকেও পাশে পেয়েছে কেন্দ্র। কাশ্মীরের এক সংবাদপত্রের কার্যনির্বাহী সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টে নালিশ করেছিলেন, মোবাইল-ইন্টারনেটের অভাবে তিনি কাগজ প্রকাশ করতে পারছেন না। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা পাল্টা জানান, ‘‘নিষেধাজ্ঞা পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়া হচ্ছে। দেশের স্বার্থেই এই পদক্ষেপ।’’ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-সহ তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, সরকারকে আরও সময় দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন