মঞ্চের আলোয় বাপুর জীবনী

পুত্র হরিলালের নানা কার্যকলাপের জন্য বাপু যে দারুণ মনঃকষ্ট ভোগ করেছেন তা আমরা ক’জন জানি? এ জন্যই নাট্যকার জিৎ-সত্রাগ্নি ধন্যবাদের পাত্র। 

Advertisement

সুকোমল ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৪৯
Share:

নাটকের একটি দৃশ্য।

ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম বর্ণময় চরিত্র মহাত্মা গাঁধী তথা আমজনতার প্রিয় নেতা ‘বাপু’র জীবনের ব্যাপকতা দু’ঘণ্টার নাটকে প্রকাশ করা যায় কি না, সন্দেহ ছিল। তার উপরে নাটকের শুরুতে মহাদেব দেশাইয়ের বক্তব্য এবং টুকরো টুকরো শোভাযাত্রা যেন তথ্যচিত্রের

Advertisement

কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রথম পনেরো মিনিট এই ভাবে চলার পর নাটক গতি পায় যখন নাথুরাম তার মুক্তি নিয়ে উপস্থিত হলে শুরু হয় এক চরম নাটকীয় দ্বন্দ্ব!

বাপুর জীবনে চরকা, কস্তুরবা এবং রাজনৈতিক স্তরে নেহরু, পটেল কিংবা জিন্নার উপস্থিতি সম্পর্কে অল্পবিস্তর আমরা সবাই জানি। কিন্তু ওঁর পুত্র হরিলালের নানা কার্যকলাপের জন্য বাপু যে দারুণ মনঃকষ্ট ভোগ করেছেন তা আমরা ক’জন জানি? এ জন্যই নাট্যকার জিৎ-সত্রাগ্নি ধন্যবাদের পাত্র।

Advertisement

বাপুর জীবনকাহিনি বিবৃত করার চেষ্টা থেকে বিরত থেকে সরাসরি অভিনয় প্রসঙ্গে আসি। অসাধারণ অভিনয় করেছেন মহাদেব দেশাই চরিত্রে সৌম্য বিশ্বাস। বাপু চরিত্রের নানা অভিব্যক্তি সঠিক রূপ পেয়েছে সমীর বিশ্বাসের অভিনয়ে। কস্তুরবা, নাথুরাম এবং হরিলালের অভিনয় মনে রাখার মতো। অন্যান্য শিল্পীরাও নিজ নিজ চরিত্রের প্রতি যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছেন। বিশেষত

অতি অল্প সময়ের জন্য মঞ্চে আসা ছোটখাটো চরিত্রেরাও প্রত্যেকেই নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। নাটকটির এই বিরল বৈশিষ্ট্যের জন্যই পরিচালক সমীর বিশ্বাস দর্শকদের ধন্যবাদার্হ হবেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও একটি কথা বলতেই হবে। বাপুর দীর্ঘ দিনের ব্যক্তিগত সচিব নির্মল বসু (পরবর্তী কালের প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ) এই নাটকে কোনও স্থান পাননি। ওঁর এত বছরের সঙ্গীর উল্লেখ না থাকাটা নাটককে সামান্য হলেও অসম্পূর্ণ করেছে বলে মনে হয়।

মুরারী রায়চৌধুরীর সঙ্গীতকে এ নাটকের সম্পদ বলা যায়। এক কথায় অসাধারণ। রূপসজ্জায় ভূয়সী প্রশংসার দাবি রাখেন মহম্মদ সাবির এবং রমেন চক্রবর্তী। এ ছাড়া পোশাক (শিবু দাস এবং সোমনাথ দাস), স্টেজ (বিলু দত্ত) ও কোরিয়োগ্রাফির (কবীর সেন বরাট) অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল নাটকের সাফল্যের পিছনে।

তবে আলোর ব্যবহারকে চমৎকার বলা গেল না। বেশ কয়েক বার আলো ও চরিত্রের নড়াচড়ার সমন্বয় ঘটেনি। যেমন মায়ের সঙ্গে হরলালের কথার সময় বহুক্ষণ মায়ের মুখে হরলালের ছায়া পড়ে ছিল। আলোকসম্পাতকারী যদিও যথেষ্টই প্রতিষ্ঠিত নাম।

তবুও সব মিলিয়ে বলতেই হবে— মাঙ্গলিকের এই নাটক যতখানি ভাল মাপের, ততখানিই ভাল লাগার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন