মডেল: সুপ্রীতি, মেকআপ: অভিজিৎ পাল, ছবি: শুভদীপ ধর
ঘর্মাক্ত শরীর দেখলে নিজেদের অজান্তেই আমাদের নাক কুঁচকে যায়। বাসে-ট্রামে-মেট্রোয় নিত্যযাত্রীরা তো রীতিমতো বিরক্তও হন পাশের মানুষটিকে দরদর করে ঘামতে দেখে। এর সঙ্গে আবার জড়িয়ে রয়েছে দুর্গন্ধ ফ্যাক্টরও। এমনকী নিজেরা যাতে বেশি না ঘামি, তার জন্যও খুঁজি কত ফিকির। ডাক্তার দেখানো, অ্যান্টি পার্সপিরেন্ট ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা থেকে শুরু করে ঘরোয়া টোটকায় সমাধান... কিন্তু জানেন কি, শরীরের ঘাম নিঃসরণ বাকি প্রত্যেকটা শারীরিক প্রক্রিয়ার মতোই জরুরি! এমনকী আপনার ঘামের উপরেও নির্ভর করে আপনার সৌন্দর্য!
খোলসা করে বলি। ঘাম অত্যন্ত সহজাত শারীরিক রেচন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শরীরের আভ্যন্তরীণ নানা ক্ষতিকর পদার্থ বাইরে বেরিয়ে যায়। শরীরের সবচেয়ে বড় অংশ হল আপনার ত্বক। সেই ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বা়ড়ানোর জন্য অনেকেই নিয়মিত রূপচর্চা করেন। ক্লেনজিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং... ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ানোর পিছনে থাকে অনেক ধাপ। এইখানেই জড়িয়ে ঘামের সঙ্গে ত্বকের সম্পর্ক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত দু’ধরনের ঘামের গ্ল্যান্ড থাকে। প্রথমটা হল এক্রিন সোয়েট গ্ল্যান্ড যা গোটা শরীরে ছড়িয়ে থাকে। দ্বিতীয়টা হল অ্যাপোক্রিন সোয়েট গ্ল্যান্ড যা থাকে স্কাল্প, আর্মপিট আর জেনিটাল এরিয়ায়। মেয়েদের শরীরে সোয়েট গ্ল্যান্ডের সংখ্যা বেশি হলেও ছেলেদের সোয়েট গ্ল্যান্ড অনেক বেশি সক্রিয় হয় এবং ঘামও নিঃসরণ করে বেশি।
জিমে শারীরচর্চা করাকালীন অথবা দৌড়ে বাস ধরার সময়ে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায়। সেই তাপমাত্রা যাতে অতিরিক্ত বেড়ে না যায়, তার জন্যই ঘাম হয়। অর্থাৎ ঘাম নিঃসৃত হয়ে শরীরের তাপমাত্রার সমতা বজায় রাখে। এ ছাড়া, ঘাম বেরোনোর সময়ে রোমকূপ খুলে যায়। ফলে ব্ল্যাকহেড, অ্যাকনে-সহ ত্বকের ভিতরের ময়লা বেরিয়ে যায় সহজে। নির্মল হয়ে ওঠে ত্বক।
আবার শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য নানা পানীয় পান করেন? তা হলে জানাই, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যায় শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন। এর ফলে আভ্যন্তরীণ জীবাণুর সঙ্গে শরীরের লড়ার ক্ষমতা বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘামের নিঃসরণ কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।
অর্থাৎ ঘামের যে উপকারিতা অনেক, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই মোটেও। ঝকঝকে ত্বক মেনটেন করতে চান অথবা সুস্থ থাকতে চান, ঘাম ঝরান নির্দ্বিধায়।