শীতের শাকসবজি বেশি খান

বাড়ুক সৌন্দর্য, সমস্যা নয়। এমনকী থাকবে না অপারেশনের কোনও চিহ্ন। বললেন ডা. অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায় ।যোগাযোগ-৯৮৩০৭৭৭৯৮৯ শীত মানেই সবুজ শাকসবজি আর ফল। এগুলো বেশি খেলে মেয়েদের অনেক সমস্যাই কমে যায়। সত্যি?

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

শীত মানেই সবুজ শাকসবজি আর ফল। এগুলো বেশি খেলে মেয়েদের অনেক সমস্যাই কমে যায়। সত্যি?

Advertisement

উ: হ্যাঁ। শাকসবজি ও ফল-এর যা গুণাগুণ তাতে মেয়েদের ফাইব্রয়েডের সমস্যা থেকে পিরিয়ড সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। সমীক্ষাতেও দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত ফল ও শাকসবজি খান তাঁদের ওই সব সমস্যা তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। প্রাকৃতিক টোটকাও বলতে পারেন।

প্র: তা হলে বছরভর শাকসবজি ও ফল খেলেই তো হয়!

Advertisement

উ: ক’জন তা মেনে চলবেন সন্দেহ আছে। কারণ এখন আমাদের লাইফস্টাইল পুরোপুরি বদলে গেছে। স্ট্রেস, টেনশন, ফাস্টফুড, সবই জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনে। সময়ের সঙ্গে ছুটতে গিয়ে দিশাহারা অবস্থা। শাকসবজি ও ফলের সবচেয়ে বড় গুণ মেয়েদের সূক্ষ্ম চামড়ায় ঔজ্বল্য বাড়ে, স্ট্রেস, টেনশনও কমায়। স্ট্রেস, টেনশন শুধু মুখের ঔজ্বল্য বা সৌন্দর্য নষ্ট করে তা নয়, শরীরের অন্যান্য অংশেও প্রভাব পড়ে।

প্র: সৌন্দর্য ধরে রাখতে সবাই সচেতন। এমনকী অপারেশনের পর তো কেউ কেউ পেটে সামান্য দাগ বা আঁচড়ও রাখতে চান না। তা সে টিউমার অপারেশন হোক বা অন্য কোনও অপারেশন।

উ: কেই বা চায়, বিশ্রী দাগ নিয়ে নিজের সৌন্দর্য বিসর্জন দিতে। এখন তো বেশির ভাগ অপারেশনই হয় ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে।

প্র: শাড়ি পড়লে যে কোনও মহিলার পেটের কিছুটা অংশও বেরিয়ে পড়ে। সেখানে ছোট দাগ বা সেলাইয়ের চিহ্ন সৌন্দর্যের বড় খুঁত। অস্বস্তি থাকবেই। কিন্তু ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে সত্যি-ই পেটে কোনও দাগ বোঝা যাবে না?

উ: মেদহীন ও সুন্দর পেটে ক্ষত বা ছিদ্রের কোনও দাগ থাকবে না। ল্যাপারোস্কোপির পরে তা কয়েক দিনের মধ্যেই মিলিয়ে যাবে।

প্র: কী ভাবে তা সম্ভব?

উ: এই পদ্ধতিতে মাত্র কয়েকটা ছোট ছিদ্র করা হয়। এবং সেখানে এক ধরনের আঠা লাগিয়ে সেই ছিদ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিছু দিন যেতে না যেতেই দাগের কোনও অবশিষ্ট থাকে না। অনেকেই আছেন, এটাও করতে চান না। ছিদ্র করতে না চাইলে সেই ব্যবস্থাও আছে।

প্র: কী রকম?

উ: সে ক্ষেত্রে ওই মহিলার নাভির সাহায্য নেওয়া হয়। ঠিক সেই নাভির মধ্যস্থল থেকে অপারেশন করা হয়। এতেও কোনও দাগের বালাই থাকে না।

প্র: ঠিক বিয়ের আগে কারও যদি অপারেশন হয়, তবে তার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছেন তো? শর্ট লেন্থ ব্লাউজ বা নাভির নীচে শাড়ি পরা অসম্ভব ব্যাপার।

উ: সে তো স্বাভাবিক ব্যাপার। মেয়েটির দুশ্চিন্তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এর ওপর আছে, বিয়ের আগে পেটে অপারেশন হয়েছে শুনলে চেনা-জানারা নানা মন্তব্য করে থাকেন। অনেকে স্বাভাবিক ভাবে মানতে চান না। এখনও অনেকের ধারণা, পেটে অপারেশন হয়েছে মানে সেই মেয়ে আর মা হতে পারবে না। এখনও অনেক পরিবারে এ রকম ভুল ধারণায় বিয়ে ভন্ডুল করে দেন।

প্র: অবিবাহিতা মেয়েদের ল্যাপরোস্কোপি করাই কি ভাল?

উ: হ্যাঁ। কারণ দাগ বা সেলাইয়ের কোনও চিহ্ন থাকে না। ইউটেরাসের মধ্যে টিউমার থাকলে ছোট যন্ত্রের সাহায্যে তা বের করে আনা হয়। বিপদও কাটল, আবার দাগ-এর দুশ্চিন্তাও কাটল।

প্র: কিন্তু এর পরেও গর্ভধারণ সম্ভব?

উ: অবশ্যই সম্ভব। অপারেশনের চার থেকে পাঁচ মাসের পর গর্ভধারণ সম্ভব। দেখা গেছে, অপারেশনের পরে গর্ভধারণ ক্ষমতার হার বহু গুণ বেড়েছে। যখন ল্যাপারোস্কোপি পদ্ধতি ছিল না তখন তো মেয়েদের যে কোনও অপারেশনেই ছুরি চালাতে হতো। অতিরিক্ত ব্লিডিং হলে তো কথাই নেই। শরীরের ধকল, মনের ধকল। নিট ফল সৌন্দর্যের ভাঙন।

প্র: ল্যাপারোস্কোপিতে তা হলে অতিরিক্ত ব্লিডিং এর ভয় নেই?

উ: একদমই না। যে সব ছোট ছোট শিরা-উপশিরা থেকে রক্ত বেরোতে পারে সেখানে আমরা আগেই সাময়িক ভাবে ক্লিপ পরিয়ে দিই। পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হয়।

প্র: ছিদ্র বন্ধ করতে আঠা লাগানো হয়। সেই আঠা পরবর্ত়ীতে কোনও ক্ষতি করে না?

উ: একদম নয়। সবচেয়ে বড় কথা সেই আঠা শরীরের পক্ষেও অনেক নিরাপদ।

প্র: স্ট্রেচ মার্কের সমস্যাও তো যে কোনও মহিলার কাছেই বড় সমস্যা। তাই না?

উ: এই সমস্যা কমাতে হলে ত্বককে আর্দ্র রাখতে হবে। দিনে প্রচুর জল খেতে হবে। মনে রাখবেন, ওজন বাড়লে স্ট্রেচ মার্কের সমস্যাও কমতে থাকবে। অনেকের আবার প্রেগন্যান্সিতে মুখে কালো ছোপ দেখা দেয়। তাঁরা সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন।

প্র: ইদানীং তো দেখছি কমবয়সি মেয়েদেরও ইউটেরাসে টিউমার হচ্ছে। ছোট ছিদ্র দিয়ে কি বড় টিউমার বেরোবে, নাকি পেট কাটতে হবে?

উ: না, না। পেট কাটার তো দরকার নেই। ইউটেরাসের বাইরে টিউমার হলে ল্যাপারোস্কোপি পদ্ধতিতে বের করে দেওয়া যায়। আর তা যদি ভেতরে হয়, এক রকমের যন্ত্র দিয়ে তা টুকরো টুকরো করে প্রসবের রাস্তা দিয়ে বের করানো হয়। কেউ বুঝতেই পারবেন না এত বড় টিউমার অপারেশন হয়েছে।

স্ট্রেস, টেনশন নয়

•বছরভর কিছু না কিছু শাকসবজি খান

•মাঝে মধ্যেই পেটে ব্যথা হলে সাবধান

•স্ট্রেস, টেনশন ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন

•মরসুমি ফল বেশি খাবেন

•লাইফস্টাইল যাই হোক, কিছুটা সময় হলেও হাঁটুন

•শুরুতেই সতর্ক না থাকলে ক্যানসারেরও সম্ভাবনা থাকে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন