অনিতা ডোংরের পোশাকে শাহিদ ও মীরা, শ্যামল অ্যান্ড ভূমিকার পোশাকে কঙ্গনা এবং কোতওয়ারার শো স্টপার সুস্মিতা।
ঘড়ির কাঁটা তখন রাত দশটা ছাড়িয়েছে। ডিজাইনার অনামিকা খন্নার ফিনালে শো। বান্দ্রা দুর্গ সেজেছে আলো-আঁধারিতে। ড্রামের তালে শুরু ক্যাটওয়াক। দুর্গের সিঁড়ি দিয়ে স্রোতের মতো নেমে আসছেন মডেলরা। আউটফিটের কাট, ড্রেপ, এমব্রয়ডারি, ফ্যাব্রিক... সবই অনন্য। অনামিকার কালেকশনে নুডের নানা শেডের টেক্সটাইলে জারদৌসির নিখুঁত বুনন তো বটেই নজর কাড়ে মিক্সড মেটিরিয়াল ও প্রিন্টে এক্সপেরিমেন্টও।
এ বার শো স্টপারদের আউটফিটে জর্জেট, শিফন, জারদৌসির প্রাধান্য থাকলেও শোয়ের বিচারে এই সামার-রিসর্ট সিজনে লিনেন, খাদি জামদানির মতো আরামদায়ক মেটিরিয়াল ভীষণ ভাবে উঠে এসেছে। এ বারের মন্ত্র যে সাসটেনেব্ল ফ্যাশন!
প্রথম দিন অনিতা ডোংরের শো স্টপার শাহিদ কপূর ও মীরা রাজপুত ফেয়ারি টেলের দম্পতি, হু লিভ্ড হ্যাপিলি এভার আফটার... আইভরিরঙা বন্ধগলা শেরওয়ানিতে শাহিদ এবং মীরার আইভরি লেহঙ্গায় ফ্যাকাশে নীল ও গোলাপি রঙা ফুলের বাগিচা... হালকা ফ্যাব্রিক ও বোটানিক্যাল মোটিফই তাঁর কালেকশনে প্রধান।
অনামিকা খন্নার আউটফিটে করিনা, শান্তনু ও নিখিলের পোশাকে সেফ, ফাল্গুনী ও শেন পিককের আউটফিটে কর্ণ এবং জয়ন্তী রেড্ডির শো স্টপার শিল্পা শেট্টি।
তরুণ তাহিলিয়ানির পোশাকে লেস, চান্দেরি, কটন জর্জেট, ক্রেপ মেটিরিয়ালে বিড, রেশম, ক্রিস্টাল, সিকুইনের খেলা চলেছে শাড়ি, কুর্তা, ড্রেস, শার্ট, লেহঙ্গা স্কার্টে। তরুণের কথায় তিনি এ বার পোশাক বানিয়েছেন ‘লেয়ার্ড অ্যান্ড ওয়েটলেস ফ্যাশন’-এর কথা মাথায় রেখে, যা পরে চলাফেরায় অসুবিধে হবে না।
নজরকাড়া কালেকশন মুজফফ্র আলি ও মীরা আলির কোতওয়ারা কালেকশনও। ক্লাসিক চিকনকারিতে এমব্রয়ডারি টেকনিক জারদৌসি, মুকাইশ ও আরি কাজের চমক। একই সঙ্গে ‘ইন আখোঁ কী মস্তি’ গানের তালে সুস্মিতা সেনের ক্যাটওয়াক। ডিজাইনার ডুয়ো শান্তনু নিখিলের ‘ট্রাইব: দি ইন্ডিয়া স্টোরি’ শো আধুনিক। ভারতের নানা জায়গার টেলরিং টেকনিক ব্যবহার করেছেন লেয়ার্ড প্লিট, বোল্ড কালার ব্লক, লং লাইন কেপ স্ট্রাকচার, ড্রেপের মধ্য দিয়ে।
ফাল্গুনী এবং শেন পিকক এ বার মেনসওয়্যার লঞ্চ করলেন। ‘শাইনি এরা অব সেভেন্টিজ’-এর আদলে তাঁদের ডিজাইনারওয়্যার গ্রে ব্লিংগি ব্ল্যাক ও ডার্ক ব্লু রঙে সীমাবদ্ধ রাখলেও চোখ টানে তাঁদের সিকুইনড জ্যাকেট, বম্বার্সে এমবেলিশমেন্ট এবং থ্রি পিস সুট।
তবে তারার ঝলকানি অন্যান্য বারের তুলনায় এ বার একটু হলেও যেন কম। কালেকশনও কিছু অনবদ্য, কিছু মাঝারি মানের... সব মিলিয়ে ঠিক হয়ে গেল এ বারের সামার ট্রেন্ড। সেই সঙ্গে আরামই যে এখন ফ্যাশনে মূল কথা, সেই বার্তাও বেশ স্পষ্ট এই উৎসবে।