ভাবী কনের ফিটনেস মন্ত্র

বিয়ের আগে ওজন কমাতে চান অনেকেই। তাঁদের মুশকিল আসানের সন্ধান দিল পত্রিকা বিয়ের আগে ওজন কমাতে চান অনেকেই। তাঁদের মুশকিল আসানের সন্ধান দিল পত্রিকা

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

প্লাস সাইজ এখন ফ্যাশনে ইন। তবু ওজন বেশি মেয়েদের বরাবরের চেষ্টা রোগা হওয়ার। মাঝেসাঝে তারা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কোমর ঘুরিয়ে নিজেকে দেখে... আর ভাবে, সামনের বছর ঠিক দীপিকা পাড়ুকোনের মতো কোমরের সাইজ করে ফেলব। এই ভাবে অনেকগুলো বছর কেটেও যায়... তবে বিয়ের ঘণ্টা বাজলেই সিংহভাগ মেয়েদের মধ্যে একটা অন্য এনার্জি কাজ করে। শাড়ি হোক বা লেহঙ্গা, বিয়ের দিন যেন তাকে পারফেক্ট দেখায়, সকলের চোখ যেন কনেতেই আটকে থাকে, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই রোগা হওয়ার বিশেষ তোড়জোড় দেখা যায় ভাবী কনেদের মধ্যে। তবে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে, না খেয়ে, সকাল বিকেল জিমে গেলেই রোগা হওয়া যায় না।

Advertisement

কাজের কথা

Advertisement

আমেরিকান কলেজ অব স্পোর্টস মেডিসিনের গবেষণা অনুযায়ী, এক মাসে তিন কেজি কমানো স্বাস্থ্যসম্মত। অর্থাৎ হাতে যদি পাঁচ মাস সময় থাকে, তবে আট-দশ কেজি কমানো হবে টার্গেট।

‘আমাকে সেরা দেখতে লাগবে’, এই ভাবনা যদি দুশ্চিন্তায় পরিণত হয়, তবে কষ্ট-কসরত করলেও ওজন কমবে না। তাই
এ ক্ষেত্রে কাউন্সেলিংয়েরও দরকার আছে। ওজন কমানোর প্রসেসটা ভাল করে উপভোগ করতে হবে।

ছুটোছুটি করার চেয়ে ওজন নিয়ে ব্যায়ামে বেশি ভাল ও দ্রুত ফল পাওয়া যায়। পেটের অংশের মেদ কমানোর জন্য সিট-আপ, ক্রাঞ্চ উপযোগী নয়।

ব্যায়ামের উপযোগিতা

প্রতিটি মেয়ের শারীরিক গঠন আলাদা। বিয়ের কনেদের নজর থাকে থাই, হিপের মেদ কমানোর দিকে। সঙ্গে অ্যাবস টোন করা। তবে এই অংশে যে ‘স্টাবর্ন ফ্যাট’ থাকে, তা কম সময়ে কমানো মুশকিল। তাই এমন ব্যায়াম বাছতে হবে, যাতে কম সময়ে বেশি ফল পাওয়া যায়।

ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়ের মতে, প্রাথমিক ভাবে ছ’-সাতটি জোর বাড়ানোর ব্যায়াম বেছে নিতে হবে। যেমন ধরুন, স্কোয়াট, রোয়িং, হ্যামকার্ল, লাঞ্জ। এই ব্যায়ামগুলি বিনা বিশ্রামে নিয়মিত করলে অনেকটা উপযোগিতা পাওয়া যায়। দৌড়নোর চেয়ে এর সুফল বেশি। কারণ
এ ক্ষেত্রে আমাদের পেশি প্রস্থে বাড়ে। আর পেশি বাড়লে ফ্যাট ঝরতে থাকে।

পেটের অংশের মেদ কমানোর জন্য কোর এক্সারসাইজ প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজ করা প্রয়োজন। অ্যাবস টোন করার জন্য এই ব্যায়ামগুলি অব্যর্থ।

এ ছাড়াও ব্যক্তির মেজাজ বুঝে তার পছন্দের কতকগুলি ব্যায়াম দেওয়া হয়। যেমন বক্সিং, বল নিয়ে খেলা। ট্রেডমিলে হাঁটা বা দৌড়নোয় একঘেয়েমি আসে। বরং এই ব্যায়ামগুলিতে ফ্যাট বার্ন হয় অনেক বেশি। আবার একঘেয়েমিও আসে না।

ডায়েটের দাপট

যদি আপনার ওজন আদর্শ ওজনের চেয়ে ১৫-২০ কেজি বেশি হয়, তা কমাতে ছ’মাসের বেশি সময় লাগবে। তবে ৫-৭ কেজি ওজন বেশি হলে, সেটা তিন-চার মাসের মধ্যে সামলানো যায়।

কী কী খাবেন না?

জ্যাম-জেলি, মাখন, ঘি, মার্জারিন, ডেজার্ট, আইসক্রিম, পেস্ট্রি, ফুচকা, চিপস, চকলেট, ক্যাডবেরি, ফাস্ট ফুড, হাই ক্যালোরি ফল (কলা, সবেদা, আম, আতা, কাঁঠাল), ড্রাই ফ্রুটস খেলেও (আখরোট, কাজুবাদাম, চিনেবাদাম) ২-৪টি, বড়া, ভাজা, আলুর কোনও পদ, সফট ড্রিঙ্কস, প্যাকেটজাত ফলের রস।

গালে হাত দিয়ে বসে পড়লেন তো? সবেতেই না। তবে খাবেনটা কী? ডায়েটেশিয়ান রুনু দত্ত পাল বলছেন, খিদে পেলে খেতে হবেই। মিল স্কিপ করে বা না খেয়ে ওজন কমানো ঠিক নয়। সেই জন্য এই সময়ে লো-ক্যালোরি ডায়েট ফলো করতে হবে। পেট ভরানোর জন্য মাখন ছাড়া ভেজিটেবল ক্লিয়ার সুপ, দইয়ের ঘোল, চিনি ছাড়া লেবুর জল খাওয়া যেতে পারে। লাঞ্চে স্যালাডের পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন। ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চের মাঝে ফল খেতে পারেন। রাতে ভাতের বদলে রুটি কিংবা ডালিয়া খান। দিনের রান্না ৪-৫ চা চামচ তেলে করতে পারলেই ভাল। রান্না করার আগে আনাজ সেদ্ধ করে নিতে পারেন।

আর খাওয়ার পর অন্তত ২০ মিনিট হাঁটাচলার পরামর্শ দেওয়া হয়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পেট টানটান হলেও ওজন তেমন কমেনি। তার ব্যাখ্যা, তাদের ক্ষেত্রে ফ্যাট পেশিতে ট্রান্সফর্মড হয়ে যায়। সুস্থ থাকা, টাটকা খাবারের কোনও বিকল্প নেই। তবে বিয়ের খাতিরে যদি এই কষ্টসাধন করতে চান, নিয়ম মেনেই তা করা শ্রেয়।

মডেল: মৃত্তিকা, তৃষা

মেকআপ: নবীন দাস

পোশাক: সুরুচি

লোকেশন: সুরুচি, পার্ক স্ট্রিট

ছবি: আশিস সাহা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন