ব্যাক ইজ় দ্য নিউ ফ্রন্ট। মসৃণ, সুন্দর গড়নের পিঠ ‘ফ্লন্ট’ করাই ট্রেন্ড। তার জন্যই এত গরম পড়েছে। এসেছে নানা কাটের ব্যাকলেস ড্রেস, ব্লাউজ়। এখন চাই রূপ-রুটিন শাহরুখের পরেই কাজলকে আর কার সঙ্গে পরদায় মানায় বলুন দেখি? কোনও নায়ক নয়, সেই বাজ়িগর হল হল্টারনেক পোশাক। সেই নব্বইতেই ‘হম আপকে হ্যায় কওন’-এ লহেঙ্গায় মাধুরী দীক্ষিতও প্রমাণ করেছিলেন, ‘ব্যাকলেস কা হ্যায় জ়মানা!’ পঁচিশ বছর পেরিয়েও ফ্যাশন-মানচিত্রে ব্যাকলেসের দাপট কমেনি। পার্টি, ডেটিং, নাটকের নিমন্ত্রণ, এমনকী বিয়েবাড়িতে ব্যাকলেস পোশাক বা রিয়ার উইন্ডো ব্লাউজ় পরলে, মুহূর্তে নায়িকা আপনি। রমণীয় এই পোশাককে যোগ্য মর্যাদা দিতে চাই কমনীয় পিঠ। চেষ্টা করলে তা পেতে লাগে ঠিক এক সপ্তাহ।
‘পিঠ’স্থান-এর আদরযত্ন
পার্টিতে-অনুষ্ঠানে পিঠ লুকোই কেন আমরা? অনেকেরই সমস্যা নির্জীব ত্বক। বলেন, একটু আঁচড়েই সাদা দাগ ফোটে। সাধ থাকলেও খোলা পোশাক পরব কী ভাবে? কারও সমস্যা অবাঞ্ছিত রোম ওঠাতে গেলে পিঠের র্যাশ। মুশকিল হল, নিজের পিঠ ঠিক করে দেখতে পাই না। এ দিকে রোজ স্নানের সময় পিঠের গ্রন্থি থেকে তেল বেরোয়। এই বিষয়টিই রুখতে হবে। সবার আগে পিঠকে রোদ আর দূষণ থেকে বাঁচান। আবার চুলের ঢল নামে পিঠ ছাপিয়ে। তাতেই আরও ঘাম আর ময়লা জমে রোমকূপে। সে সবের দৌরাত্ম্যেই ওই ছোপছাপ। রাস্তায় বেরোলে যতটা সম্ভব ত্বক ঢাকা পোশাক পরুন। বাড়িতে স্নানের আগে, বেবি অয়েলে ল্যাভেন্ডারের রস মিশিয়ে পিঠে মাসাজ করুন বা করান। পরের ধাপ ভাল স্ক্রাবিং। লম্বা হাতলওয়ালা লুফা বা আয়রন-স্পঞ্জ (ইস্ত্রি-র মতো দেখতে) কিনুন। এতে স্নানের সময় পিঠ ঘষে মৃত কোষ তুলে ফেলতে সুবিধে হবে। স্নানের সময় টেলিফোন শাওয়ার ব্যবহার করলে জলের তোড়ে প্রত্যেকটি অঙ্গ ভারী ঝকঝকে পরিষ্কার হয়। স্নান শেষে অন্য অঙ্গের সঙ্গে পিঠেও ময়শ্চারাইজ়ার লাগান। এই দৈনন্দিন নিয়মেই পিঠ মখমলি হয়ে উঠবে।
তবু র্যাশ যদি না শেষ হয়?
পিঠ কিন্তু শরীরের অন্যতম সংবেদনশীল এলাকা। রোম তুলতে গেলে বা পিঠ স্ক্রাব করলেই র্যাশ বেরোয় অনেকেরই। তাই কোনও অনুষ্ঠানের আগে রাসায়নিক ব্যবহার করে পিঠ আকর্ষক করে তোলার চেষ্টা না করাই ভাল। রোম তোলার পরই অ্যান্টিসেপটিক পাউডার বা লোশন লাগালে ব্রণর সমস্যা কমে। পরিষ্কার কাপড়ে মুড়ে বরফও দিতে পারেন। আর এতে উপকার না পেলে, ত্বক-চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আলতো কার্ভ, একটু ট্যাটু, অল্প মেকআপ
শুধু চাকচিক্য থাকলেই তো চলবে না। সুন্দর দেখাতে পিঠের গঠনের দিকেও নজর দিতে হবে। অনেকেরই পিঠে অন্তর্বাসের দাগ থাকে। বা অন্তর্বাস সংলগ্ন অংশে অনভিপ্রেত ভাঁজ দেখা যায়। এর জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে ঠিক অন্তর্বাস বাছাই করতে হবে। তাতে শরীরের স্বাভাবিক গড়ন ও ‘কার্ভ’ ফিরে আসবে। তার সঙ্গে সাঁতার বা যোগব্যায়ামের অভ্যেস রাখলে মিলবে ঈর্ষণীয় দেহবল্লরী।
পিঠে ট্যাটু করালে অতিরিক্ত যত্ন নিন। ট্যাটু-অংশের ক্ষত সেরে যাওয়ার পরও সেখানে সরাসরি সূর্যের আলো লাগাবেন না। ওইখানে স্ক্রাবিং বা সাধারণ সাবান দিলেও চলবে না। বিশেষ সাবান ও লোশন লাগাবেন। ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হলেই ট্যাটু ঝকঝক করবে।
ব্যাকলেস পোশাক বা ব্লাউজ় পরলে মুখ, গলা ও শরীরের অন্যান্য অনাবৃত অংশের মতো পিঠেও কনসিলার বা বডি মেকআপ ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে ফোটো তোলার থাকলে। আগে প্রাইমার, তার উপর ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ ও ক্রিম ব্লাশ বোলান। পুল-পার্টিতেও সাজ যথাযথ থাকবে। ঘাম কম উৎপাত করবে।
তোমার দেহের ভঙ্গিমাটি…
ব্যাকলেস ‘ক্যারি’ করার জন্য নির্দিষ্ট দেহভঙ্গি দরকার। এ পোশাক পরে, শরীর টানটান রেখে, একটু সামনে এগিয়ে, তেরচা ভাবে আস্তে আস্তে পা ফেলাই রীতি। ছবি তোলার সময়ে এক হাত কোমরে রেখে ‘পোজ়’ দেবেন। এতে পিঠের দু’পাশের দু’টি হাড় একটু উঠে থাকবে। শরীর ‘V’ অক্ষরের ঢঙে নেমে আসবে কাঁধ থেকে কোমরে। প্রাচ্য কিংবা পাশ্চাত্য বেশে আপনাকে দেখে থামবে সে-ও!
মডেল: শতরূপা, ছবি: দেবর্ষি সরকার।
মেকআপ: উজ্জ্বল দত্ত, পোশাক: কোমল সুদ (ড্রেস), সারঙ্গ (শাড়ি), ভি কাট (ব্লাউজ়)।
জুয়েলারি: সাক্ষী ঝুনঝুনওয়ালা, লোকেশন: সুইসোতেল, রাজারহাট, ফুড পার্টনার: ৬ বালিগঞ্জ প্লেস, রাজারহাট।