মডেল: শ্রীময়ী, ছবি: অমিত দাস
অফিসের ব্যস্ততা বা হেঁসেল ঠেলার দায়দায়িত্ব— এ সব চাপের মধ্যে রূপচর্চার সময় কোথায়! সকলেই খুঁজতে চান চটজলদি উপায়। সালোঁ বা পার্লারে যদিও বা যাওয়ার সময় বের করলেন তো মাসের শেষে পকেটে টান! তা হলে উপায়? শিট মাস্ক (sheet mask)! সেটা কী বস্তু? কী ভাবেই বা করা হবে তার ব্যবহার? আসুন জেনে নিই।
জিনিসটা আসলে কী
প্রাথমিক ভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিউটি ট্রিটমেন্ট হিসেবে পরিচিত ছিল শিট মাস্ক। এখন অবশ্য গোটা দুনিয়ায় জাঁকিয়ে বসেছে সে! বিভিন্ন অনলাইন সাইট এবং বিউটি রিটেল স্টোরে পেয়ে যাবেন হরেক ধরনের এই মাস্ক। দামও এমন কিছু আহামরি নয়। জিনিসটা হল, মুখের আকারের মতোই একটা পাতলা-নরম ফ্যাব্রিক, যা কিনা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরপুর সেরামে ভেজানো অবস্থায় পাওয়া যায়। দেখতে ফেশিয়াল মাস্কের মতোই। কিন্তু এই চটজলদি মাস্ক ক্রিম বেসড নয়। প্যাকেটে থাকে বলে এটা ব্যাগে নিয়ে কাজে বেরোনো বা ট্র্যাভেল করা সবই সম্ভব। তবে একটি প্যাকেটে একটাই মাস্ক পাবেন এবং একটা মাস্ক একবারই ব্যবহারযোগ্য।
ব্যবহার করার উপায়
হাতে সময় থাকলে মুখটা ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করে ভাল ভাবে এক্সফোলিয়েট করে নিন। তার পর ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী একটা মাস্ক বেছে নিয়ে, মুখে সেটা লাগিয়ে নিন। দশ থেকে কুড়ি মিনিট পর্যন্ত মাস্কটি রাখতে পারেন মুখে। ধুয়ে ফেলবেন না। সেরাম মুখে বসতে দিন। চটজলদি উজ্জ্বল হয়ে উঠবে মুখের ত্বক। ব্যস্ততার সময়েও এই মাস্ক ব্যবহার করা কোনও সমস্যাই নয়। অফিসের পর পার্টি থাকলে হাতে দশ মিনিট সময় নিয়ে এটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। হাতেনাতে ফল পাবেন। ঘরের কাজ সারতে সারতে বা টিভি দেখে রিল্যাক্স করতে করতেও লাগানো যেতে পারে শিট মাস্ক। সপ্তাহে তিন বার এই মাস্ক ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।
এর কাজ কী
বিভিন্ন ধরনের শিট মাস্ক পাওয়া যায়। কোনওটা শুষ্ক ত্বকের জন্য। কোনওটা তৈলাক্ত ত্বকের, আবার কোনওটা মিশ্র ত্বকের জন্য। কাজ অনুযায়ী এর উপাদানগুলোও বদলে যায়। অ্যালো ভেরা, বেদানা, শসা, মধু, ভিটামিন সি, মুক্তোর নির্যাস, সি উইড বা চারকোল— অনেক কিছুই থাকতে পারে এই মাস্কে। তবে এর সঙ্গে ক্লেনজিং টিসু বা এক্সফোলিয়্যান্টের কোনও সম্পর্ক নেই। এই মাস্কের কাজ ত্বকে পুষ্টির জোগান দেওয়া এবং ত্বক উজ্জ্বল করে তোলা। কিছু কিছু মাস্ক আবার দাবি করে, স্কিন ফার্মিং এবং লিফ্টিংয়ের কাজও করে তারা। তবে এই ধরনের মাস্কে কিছু রাসায়নিক দেওয়া থাকে, যাতে ব্যাকটিরিয়ার উৎপাত না হয়। তাই ব্যবহার করার আগে উপাদানের তালিকায় এক বার দেখে নেবেন সেগুলো আপনার ত্বক সইতে পারবে কি না।
কেন কিনবেন?
হয়তো ব্যস্ততার কারণে দিনের পর দিন পার্লারে যেতে পারছেন না। ত্বকে ম্যাড়ম্যাড়ে ভাব স্পষ্ট। এ দিকে সামনে কোনও বিয়েবাড়ি বা আফটার ওয়র্ক পার্টি। কী করবেন? গোল্ড ইনটেন্স শিট মাস্ক ব্যবহার করে দেখতে পারেন। পার্ল মাস্কও এ ক্ষেত্রে কাজে দেবে। বাড়িতে ফাঁকা সময়ে বসে হয়তো আবিষ্কার করলেন, মুখে কালো দাগছোপ জমেছে। এ দিকে বাড়িতে গেস্ট আসার কথা। কী করবেন? হাইড্রেটিং বা ক্ল্যারিফাইং শিট মাস্ক ব্যবহার করুন। আবহাওয়ার কারণে ত্বকে জৌলুস কম বলে মনে হচ্ছে? ডিটক্স শিট মাস্ক ব্যবহার করুন। নিজের সঙ্গে সঙ্গে কাছের বন্ধুদেরও বিশেষ দিনে উপহার হিসেবে বিভিন্ন শিট মাস্কের ডালি সাজিয়ে দিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, এই মাস্ক কিন্তু শুধু চটপট সুরাহা পেতেই কাজে লাগে। দীর্ঘস্থায়ী ফলের জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।