তিনি মিশকা হালিম। খবর নিল ‘পত্রিকা’
সকাল হলে রোজই বেরিয়ে পড়ছেন তিনি।
টানা কয়েক ঘণ্টা তাঁর খোঁজ নেই।
কী করছেন? কোথায় যাচ্ছেন মিশকা হালিম? এমনকী বন্ধুরাও তাঁর এই হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার কারণ টের পাচ্ছেন না!
ক’দিন আগে খবর এল, শীত ভাঙা সকালে তিনি তখন ‘নিরঞ্জন সদন’-এর মঞ্চে।
ফোনে ধরতেই রহস্যের কিনারা হল। জট ছাড়ালেন মিশকা নিজেই।
চন্দন সেনের নির্দেশনায় ‘নাট্যআনন’ নাট্যদলের ‘যুগনায়ক’ নাটকে (লেখা চন্দন সেনের) নিবেদিতার চরিত্রে এ বার ‘মহানায়ক’ সিরিয়ালের ‘গৌরী দেবী’।
নিবেদিতা-রূপী মিশকা।ছবি: কৌশিক সরকার।
‘‘চরিত্রটাকে যথাসম্ভব বাস্তব করে তোলার চেষ্টা করছি। তিনটে পর্যায়ে নিবেদিতাকে ধরা হচ্ছে। বিবেকানন্দের সঙ্গে প্রথম দেখা আঠাশ বছরের তরুণী মিস মার্গারেট নোবলের। সেটা একটা পর্যায়। তার পর মার্গারেটের নিবেদিতা হয়ে ওঠা। শেষ ধাপটি বিবেকানন্দ-নিবেদিতা সম্পর্ক,’’ বললেন মিশকা।
বিবেকানন্দ বলেছিলেন, হিন্দুধর্ম ও খ্রিস্টধর্ম— এ দুই ধর্মই ভালবাসাকে সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক আবেগ বলে মনে করে। সেই আবেগেই ভেসেছিলেন নিবেদিতা।
বিবেকানন্দের ভূমিকায় শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়। আর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের চরিত্র করছেন চন্দন সেন নিজে। ইতিহাসের সূত্র ধরেই শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সঙ্গে নাটকে যদিও নিবেদিতার দেখা হচ্ছে না।
এত দিন চন্দন সেনের নাটক মানেই ছিল তপ্ত রাজনীতির ছোঁওয়া। তা’হলে এ বারে?
‘‘নাটকে সমসাময়িক রাজনীতি না এলেও রাজনৈতিক সংলাপ থাকছে। যা এক ধরনের মেটাফরের কাজ করবে,’’ বলছিলেন মিশকা।
নিবেদিতার গেরুয়া পোশাক, বিলাতি কায়দার সাজগোজ, চুলের ছাঁট, সবটাই যথাসম্ভব এক রাখা হচ্ছে এই নাটকে।
আর মুখের আদল?
এ নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না কেউই। মিশকা তো বটেই, ‘নাট্যআনন’-ও তাই। কলকাতা নয়, বোকারোর মঞ্চে দর্শক প্রথম দেখবে এই থিয়েটার। সম্ভবত কলকাতা ফেব্রুয়ারিতে এ নাটক দেখতে পারে।
কাহিনির বুননে কোনও ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ মনীষীকে তুলে ধরার চেষ্টা নেই। বরং ভগিনী নিবেদিতা এখানে পাশের বাড়ির কোনও এক নারী যেন! যে নারীকে কালীর উপাসক হিসেবে ব্যঙ্গ করেছিল এক সময়ের সমাজ।
বিদেশ থেকে উজান বেয়ে চলে এসে ভারতীয় জীবনের অন্দরে জড়িয়ে পড়া সেই মহিলার হৃদয়-জয়ের গল্পেই বাঁধা নাট্যআনন-এর এ বারের নাটক ‘যুগনায়ক’।