খুসকির জন্য ঘরোয়া সমাধান

শীতের শুরুতে অনেকেই যে নাজেহাল হন খুসকির সমস্যায়। ঘরোয়া পদ্ধতিতেই করা যায় তার সমাধান!শীতের শুরুতে অনেকেই যে নাজেহাল হন খুসকির সমস্যায়। ঘরোয়া পদ্ধতিতেই করা যায় তার সমাধান!

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৭:২০
Share:

মডেল: দর্শনা, ছবি: দেবর্ষি সরকার

শীতকাল মানে ঘাম তেলতেলে ভাব থেকে মুক্তি, শীতকাল মানে মন খুলে সাজগোজ। কিন্তু অনেকের কাছে শীতকাল এক বিভীষিকাও। এই আর্দ্র ঋতুতে শুধু হাত-পায়ের ত্বকই নয়, মাথার স্ক্যাল্পও শুষ্ক হয়। অতিরিক্ত শুষ্ক স্ক্যাল্পে ফাঙ্গাস দ্রুত বংশবিস্তার করার ফলেই খুসকি বা ড্যানড্রফের সমস্যায় নাজেহাল হতে হয়। আবার উল্টোটাও হয়। এই সময় অনেকের স্ক্যাল্প তেলতেলে হয়ে যায়, সেখান থেকেও খুসকির সমস্যা হয়। আবার শুধু শুষ্ক বা তেলেতেলে স্ক্যাল্পের জন্য নয়— এই সময় চুল ভাল করে ব্রাশ না করলে, অপরিষ্কার রাখলে, ডায়েটের গোলমাল বা পারকিনসন, এগজিমার মতো অসুখ থেকেও খুসকির সমস্যা হয়। এমনকী অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকেও খুসকি হয়। আর এই খুসকির জন্য চুল খুলে রাখা, কালো বা ডার্ক রঙের পোশাক পরা যায় না। এই সমস্যা যে কোনও বয়সেই হতে পারে। কিন্তু ঘাবড়াবেন না, এর ঘরোয়া সমাধান আছে আপনার হাতের মুঠোয়।

Advertisement

টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করুন শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারের সঙ্গে মিশিয়ে। এই টি ট্রি অয়েল সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগিয়েও মাসাজ করতে পারেন। সপ্তাহে দু’দিন করলে ফল তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ১২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল জলপাই তেল বা নারকেল তেলে মিশিয়ে আধঘণ্টা লাগিয়ে মাইল্ড কোনও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

Advertisement

নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তার মধ্যে জলপাই তেল মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ভাল করে লাগিয়ে একঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। ড্রাই স্ক্যাল্প হলে কনডিশনার দিতে হবে শ্যাম্পুর পর। নিমপাতা সিদ্ধ করে বেটেও সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে এক দিন অন্তর লাগালে দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে। শিশুদের ক্ষেত্রে নিমপাতার ব্যবহার অবশ্যই করতে পারেন।

দু’ চামচ নারকেল তেল, দু’ চামচ জলপাই তেল, দু’ চামচ মধু ও দু’চামচ দই ভাল করে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ১০ মিনিট মাসাজ করুন। ৩৫ থেকে ৪৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু করার পর দু’-তিন ফোঁটা নারকেল তেল চুলে লাগিয়ে নিন।

শীতের খুসকির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আর একটি ঘরোয়া পদ্ধতি বেশ উপকারী, তা হল ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার শাঁসের সঙ্গে লেবুর রসের মিশ্রণ। অ্যালোভেরা ত্বকের রুক্ষতা কাটিয়ে ন্যাচারাল ময়েশ্চার তৈরি করতে সাহায্য করে। অন্য দিকে লেবুর রস ফাঙ্গাস দূর করতে সাহায্য করে। একটি বাটিতে অ্যালোভেরার শাঁস ও দু’চামচ লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। আধঘণ্টা পর ভাল করে জল দিয়ে ধুয়ে, তার পর শ্যাম্পু করুন। চুল শুকিয়ে নিয়ে ভাল করে ব্রাশ করে নিন।

বেকিং সোডা আঙুলে করে নিয়ে স্ক্যাল্পে ঘষে ঘষে মাসাজ করুন। তিন মিনিট রাখার পর উষ্ণ জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু করার দরকার নেই।

আদার রস ফাঙ্গাস দূর করার জন্য মোক্ষম। আদার রস স্ক্যাল্পে ভাল করে মাসাজ করে তিরিশ মিনিট পরে মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। মাসে দু’বার করলেই ভাল ফল পাওয়া যায়। স্ক্যাল্প অতিরিক্ত শুষ্ক হলে আদার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করার আগে দেখে নিন কোনও উপকরণে আপনার অ্যালার্জি নেই তো! খুসকি নিবারণের জন্য বাজারে অনেক রকমের মেডিকেটেড শ্যাম্পু পাওয়া যায়, কিন্তু সেগুলো ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শিশুদের ক্ষেত্রে মেডিকেটেড শ্যাম্পু বা ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে না চাইলে বেবি শ্যাম্পু দিয়ে একদিন অন্তর চুল ধুয়ে দিন। কিন্তু তাতেও সমাধান না হলে, ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ, খুসকির জন্য মুখে ব্রণ হতে পারে, র‌্যাশ বেরোতে পারে কিন্তু!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন