‘মিউনাস’-এর প্রযোজনায়
নাটক-এক: ‘দ্য লাস্ট হিরো’। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। বিতর্কিত কিছু বক্তব্যকে মঞ্চে এনে নজর কেড়েছিলেন পরিচালক উৎসব দাস। ওই নাটক নিয়ে ঝড় উঠেছিল দর্শকদের মধ্যেও। কেমন? এই নাটকের সময়কাল ছিল ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫। নেতাজি যখন বুঝলেন কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে জয়লাভ করলেও গাঁধীজি তাঁর জয়কে মেনে নিতে পারছেন না এবং ইংরেজের বিরুদ্ধে সুভাষের সরাসরি জেহাদকেও ভাল চোখে দেখছেন না, তখনই তিনি সভাপতির পদ থেকে সরাসরি ইস্তফা দিলেন। তৈরি হল ফরোয়ার্ড ব্লক।
নাটক-দুই: ‘স্ট্রাইক’। ইদানীং জমি এবং কৃষকদের ভূমিকা নিয়ে নানা বিতর্ক শুধু রাজ্যে নয়, প্রায় সারা দেশ জুড়েই চলছে। প্রশ্ন উঠেছে, চাষের জমিতে শিল্প কতটা যুক্তিযুক্ত। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতির উত্থান-পতনে কার কী ভূমিকা। রাজনীতির পট পরিবর্তন হলেও হয়নি এই সমস্যার সমাধান।
নাটক-তিন: ‘স্বার্থপর’। রণজয় নাটক-পাগল মানুষ। যার জীবন ঘিরে শুধু নাটকেরই স্বপ্ন, তিনি সস্তার বিনোদনকে মেনে নেবেন কী ভাবে? সম্ভব নয়। তাই সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকেন তিনি। এই নিয়ে সাংসারিক বিবাদেও জড়িয়ে পড়লেন। দীর্ঘদিন পরে আবারও তিনি ফিরে এলেন সেই নাটকেই।
এই নাটকগুলি নিয়েই ‘উৎসবের নাটক, নাটকের উৎসব’। এখানে নাটকগুলির অন্তরালে প্রতিধ্বনিত হয় অন্য উৎসবের কথা। তিনি উৎসব দাস। ‘মিউনাস’ দলের প্রায় সব ক’টি তাঁরই নাটক। উপরোক্ত তিনটি নাটক বাদ দিলেও কলকাতায় মঞ্চস্থ হয়েছিল ‘ফুল ফেলার প্রতিবাদ’, ‘বিবর্তিত অধ্যায়’, ‘লজ্জা’ প্রভৃতি এক ডজন নাটক। এ বার সেরা নাটকগুলি আবারও দর্শকদের কাছে তুলে ধরা নতুন আঙ্গিকে। কেন? পরিচালকদের দাবি, সমাজের বিভিন্ন সমস্যা ও জটিলতা খুব কম সময়ের মধ্যে আমরা মঞ্চে তুলে ধরেছিলাম। কিন্তু নিয়মিত করতে পারিনি, আর্থিক কারণে। ‘দ্য লাস্ট হিরো’ নাটকে ঐতিহাসিক কিছু ঘটনাও দর্শকদের কাছে আবারও নতুন করে ফিরিয়ে আনা।
কেমন? ‘দ্য লাস্ট হিরো’—নাটকের সেই সংলাপ প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে পরিচালক-অভিনেতা উৎসবের জোরালো কণ্ঠে ‘বাপুজি, আমি সুভাষচন্দ্র বসু, অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি, আমি কারও প্রতিচ্ছবি নই, প্রতিধ্বনি নই, কারও প্রটোটাইপ নই। আই অ্যাম মাইসেলফ। আপনি আমায় আশীর্বাদ করুন, আমি যেন আমার পথে সফল হই।’ আবারও মঞ্চের জোরালো অভিনয় তপন থিয়েটারে তিন থেকে পাঁচ নভেম্বর তিন দিন।