প্র: তীব্র গরমের পর একচোট ঝড়-বৃষ্টি, ঠান্ডা-গরমে তো নাজেহাল অবস্থা। সকালে উঠেই গলা ব্যথা। কী করব?
উ: রাতের দিকটা একটু সতর্ক থাকবেন। ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে জানলা বন্ধ রাখবেন। অবশ্যই ভোরের দিকে পাখা কমিয়ে দেবেন। এসি না চালালেই ভাল।
প্র: ঠান্ডা যদি লেগেই যায়?
উ: গলা ব্যথা ও ঢোক গিলতে কষ্ট হলে দিনে দু-বার নিয়ম করে গরম জলে গার্গল করুন।
প্র: যখন গরম পড়ছে যাঁরা এমনিতে সহ্য করতে পারেন না, তাঁঁরাও বাধ্য হচ্ছেন এসি-তে থাকতে। তাতেও তো দুম করে ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে।
উ: খুব বেশি চড়া রোদ থেকে এসেই এসি-তে ঢুকে পড়বেন না। খানিক জিরিয়ে নিয়ে তার পর ঢুকুন।
প্র: জিরাবো আর কোথায়? হয় বাইরের গরম নয়তো অফিসে এসি।
উ: এসি’র তাপমাত্রা ২৩-২৫-এর মধ্যে হলে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। তবে যাঁদের একটুতেই ঠান্ডা লেগে যায়, তাঁরা এসি’তে ঢোকার আগে ঘামটা মুছে নেবেন। খেয়াল রাখবেন এসি-র হাওয়া যেন সরাসরি না লাগে। ওড়না গলায় জড়িয়ে নিতে পারেন। প্রয়োজনে হালকা একটা মাফলারও সঙ্গে রাখতে পারেন। আস্তে আস্তে সয়ে যাবে।
প্র: তা হলে আর ঠান্ডা লাগবে না?
উ: একটানা এসি’তে বসে থাকলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে বার বার এসি-র থেকে বাইরে বেরোলে আর ঢুকলে কিন্তু ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই এটা যতটা কম করা যায় তার চেষ্টা করবেন। আর রাস্তায় প্রচণ্ড গরমে কনকনে ঠান্ডা পানীয় গলায় ঢালবেন না।
প্র: এই গরমে ঠান্ডা পানীয় ছাড়া চলবে কী করে?
উ: বাইরে না খেয়ে বাড়িতে নিয়ে এসে খান। তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসায় সেটা অনেক নিরাপদ।
প্র: ঠান্ডা জল গলায় ঢাললে অনেক সময় গলা আটকে যায়। তখন কী করব?
উ: গলা বসে গেলে কথা বলবেন না।
প্র: তা বললে কী করে হয়?
উ: যতটুকু না বললেই নয়, সেটুকুই বলবেন। আর যতটা সম্ভব আস্তে আস্তে কথা বলবেন। অনেকে জোরে কথা বলে দেখতে চান গলা ঠিক হল কি না। এটা করবেন না। বাড়িতে স্টিম ভেপার নিতে হবে।
প্র: জলে কিছু মিশিয়ে নেব?
উ: কিছু দরকার নেই। বড় পাত্রে ফুটন্ত জল নিয়ে একটা তোয়ালে ঢাকা দিয়ে নাক-মুখ দিয়ে টানবেন। যতক্ষণ সহ্য করতে পারেন। যদি জ্বর না আসে, তবে এতেই কাজ হবে।
প্র: আর জ্বর এলে?
উ: দিন দুই ভেপার নিয়েও যদি দেখেন কমেনি, আর সঙ্গে জ্বরও রয়েছে, তবে ডাক্তার দেখাতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।
প্র: গলা ব্যথা বা খুশখুশে কাশি হলে তো রাতের ঘুমের বারোটা বাজে। কাশতে কাশতেই রাত কাবার। তখন কী করব?
উ: লবঙ্গ বা আদা কুচি মুখে দিয়ে ঘুমোতে পারেন। মাঝে মাঝে চিবোলে কাশির দমক কমবে। হার্বাল লজেন্স আরাম দেয়। কিন্তু লজেন্স মুখে দিয়ে শোবেন না।
প্র: নাক দিয়ে একটানা জল পড়তে থাকলে? সঙ্গে বিচ্ছিরি হাঁচি?
উ: হাঁচি বা কাশি হতে থাকলে কাফ সিরাপ খেতে হতে পারে। নাক সুড়সুড় করলেও নাক চুলকোবেন না। অনেক সময় মনে হতে পারে নাকের ভেতরটা শুকিয়ে গেছে। নাকে হাত দিতে ইচ্ছে করবে। কিন্তু দেবেন না। কারণ নাকে হাত দিলে ব্লিডিং হতে পারে।
প্র: শুনেছি বেশি গরমে অনেকের নাকি নাক শুকিয়ে গিয়ে রক্ত পড়ে?
উ: হ্যা।ঁ
প্র: এ রকম হলে কী করব?
উ: বসে পড়ে নাকের পাটাটা আঙুল দিয়ে চেপে ধরে মুখ দিয়ে বড় বড় করে শ্বাস নিতে হবে। তাতেই ব্লিডিং কমবে। নাকের গোড়ায় বরফ বা বরফ জল দিতে পারেন। তাতেও কাজ হবে। তবে কখনই শুয়ে পড়বেন না। তাতে গলায় কয়েক ফোঁটা রক্ত চলে যেতে পারে। এতে না কমলে ডাক্তার দেখাতে হবে।
প্র: এই গরমে সুস্থ থাকতে আর কী করব?
উ: বার বার জল খান। বাইরে বেরোনোর আগে খানিকটা জল খেয়ে বেরোন। শরীরকে ঢেকে রাখুন। বাইরে বেরিয়েও জল খান। বাইরে থেকে ফিরেই স্নান করবেন না। আগে ঘামটা শুকিয়ে নেবেন।
যোগাযোগ: ৯৮৩০২১৪০৮৮
সাক্ষাৎকার: রুমি গঙ্গোপাধ্যায়