নানা রকম...

যদি প্রেম দিলে না প্রাণে

রবীন্দ্রসদনে বৈতালিক-এর বার্ষিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ দিয়ে। সে সন্ধ্যার মুখ্য আকর্ষণ ছিল রবীন্দ্রনাথের গীতিমাল্য গীতালি-র গান কবিতা অবলম্বনে সঙ্গীতালেখ্য ‘সেই তো তোমার আলো’। ঘর ও পথের দ্বন্দ্ব, পথে বেরোনোর আয়োজন এবং শেষ পর্যন্ত পথেই বেরিয়ে পড়া এই নিয়েই গীতিমাল্য গীতালি। একক গানে দেবারতি সোম সুরময় কণ্ঠে স্বয়ম্প্রভ। অনায়াসে হৃদয় ছুঁয়ে যায় তাঁর ‘হৃদয় আমার প্রকাশ হল’ কিংবা ‘হার মানা হার পরাব’।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০০:০৫
Share:

রবীন্দ্রসদনে বৈতালিক-এর বার্ষিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ দিয়ে। সে সন্ধ্যার মুখ্য আকর্ষণ ছিল রবীন্দ্রনাথের গীতিমাল্য গীতালি-র গান কবিতা অবলম্বনে সঙ্গীতালেখ্য ‘সেই তো তোমার আলো’। ঘর ও পথের দ্বন্দ্ব, পথে বেরোনোর আয়োজন এবং শেষ পর্যন্ত পথেই বেরিয়ে পড়া এই নিয়েই গীতিমাল্য গীতালি। একক গানে দেবারতি সোম সুরময় কণ্ঠে স্বয়ম্প্রভ। অনায়াসে হৃদয় ছুঁয়ে যায় তাঁর ‘হৃদয় আমার প্রকাশ হল’ কিংবা ‘হার মানা হার পরাব’।

Advertisement

স্বপন সোমের ‘যদি প্রেম দিলে না প্রাণে’ বা ‘তুমি একটু কেবল’ পরিশীলিত ও মাধুর্যময়। প্রায় ১০০ জন সম্মেলক গানে অংশ নিলেন। এমন উজ্জ্বল সম্মেলক প্রায় শোনাই যায় না বললেই হয়। সঙ্গে প্রণতি ঠাকুর ও সৌমিত্র মিত্রের কবিতাপাঠও ছিল উচ্চমানের। দুজনই সুকণ্ঠে যথাযথ অভিব্যক্তিতে আকর্ষণীয়। অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে বৈতালিক-এর ছাত্রছাত্রীদের নিবেদন রবীন্দ্রনাথের প্রেম পর্যায়ের গান অবলম্বনে ‘এসেছ প্রেম, এসেছ আজ’। একক গানে সম্ভাবনা জাগিয়েছেন গার্গী গোস্বামী, মোনালিসা দে, ইন্দ্রাণী দাস প্রমুখ। যন্ত্রানুষঙ্গে উল্লেখযোগ্য দেবাশিস সাহা, রানা দত্ত, পলাশ রায় প্রমুখ।

Advertisement

নৃত্যপদে ষড়রিপু
চৈতী ঘোষ

সম্প্রতি উদক পারফর্মিং আর্টস-এর উদ্যোগে আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত হল ধ্রুপদী নৃত্যানুষ্ঠান ‘মার্গম’। প্রথম পর্বে ভরতনাট্যম নৃত্যাঙ্গিকে আধারিত বিশেষ কিছু পদ যেমন গণপতি কীর্তনম, পদম, তিল্লানা পরিবেশন করেন মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়। তারপর সংকীর্তম আল্লারিপু পরিবেশন করে সকলের নজর কেড়ে নেন মিলন অধিকারী। গুরু অভয় পালের সুচারু নৃত্যবিন্যাস ও মিলনের পরিশীলিত ও পরিমার্জিত দেহভঙ্গিমা এক স্বর্গীয় অনুভূতির সঞ্চার করে। বিশেষত কীর্তনম নৃত্যপদে ষড়রিপু থেকে মোক্ষলাভের দৃশ্যটিতে তার মুন্সিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায়। কুচিপুড়ি নৃত্যাঙ্গিকে মালবিকা সেন তার লাবণ্যমণ্ডিত শরীরী বিভঙ্গে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। সব শেষে, কত্থক নৃত্যে সৌরভ রায়ের সুদক্ষ পদকর্ম ও মীরার ভজনের সঙ্গে পরিণত অভিনয় বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে।

লাস্যময়ী ভঙ্গিমা
চৈতী ঘোষ

‘লাই হারাওবা প্রাচ্য নাচের পাঠশালা’ সম্প্রতি উত্তম মঞ্চে নিবেদন করে তাদের তৃতীয় বার্ষিক নৃত্যানুষ্ঠান। শুরুতেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফিরহাদ হাকিম, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। নটরাজ বন্দনা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সৃজন ছন্দে আনন্দে’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা। মূল পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয় যার বিশেষ আকর্ষণ ছিল ‘রবিঠাকুরের বিবাহ’, ‘কথা ও কাহিনি’-র অন্তর্গত এই রচনাটির সঙ্গে বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতের অপূর্ব মেলবন্ধনের মাধ্যমে রচিত এই নৃত্যনাট্যটি সত্যিই একটি নবতম সংকলন। সদ্যবিবাহিত ক্ষেত্রিরাজকুমার রামসিংহ রানার আহ্বানে যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করলে নববধূ তাঁর সঙ্গে চিতায় আত্মাহুতি দেয়। অবশেষে পরলোকে নবদম্পতির মিলন ঘটে। নৃত্যপরিচালনা ও মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন দেবলীনা কুমার যাঁর লাস্যময়ী ভঙ্গিমা মুগ্ধ করার মতো। ‘দীপ নিভে গেছে মম’ গানটির সঙ্গে দেবলীনার মুখজ অভিনয় ও ‘ভালবেসে সখী’ গানটির সঙ্গে কৌশিক ও দেবলীনার দ্বৈতনৃত্য উল্লেখযোগ্য। সহ-শিল্পীরাও সমান পারদর্শী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন মধুমিতা বসু এবং বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়।

শুধু গান নয়

‘শ্রুতিনিকেতন’ আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘দীপশিখা’ পরিবেশন করল একটি সুন্দর নৃত্যগীতি আলেখ্য। পরের পর্বে সমবেত সঙ্গীত শোনাল ‘ময়ূখ’ এর শিল্পীরা। এ দিনের অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল বিভিন্ন শিল্পীর একক গান। শুরুতেই তনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় শোনালেন ‘এসো গো জ্বেলে দিয়ে যাও’। প্রবুদ্ধ রাহা গাইলেন ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’। এ দিন অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, পূবালি দেবনাথ, তানিয়া দাশ, সুছন্দা ঘোষ, দেবারতি সোম, স্বপন সোম, সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, শমীক পাল প্রমুখ।

নজর কাড়ে বাল্মীকি প্রতিভা

হাওড়া শরৎ সদনে ‘অন্বেষণ’-এর অনুষ্ঠানে ভরতনাট্যম নৃত্যপর্বের পর সমবেত নৃত্যে ছিল সংস্থার শিশুশিল্পীরা। ঋতুপর্যায়ের গানের সংকলনের সঙ্গে নৃত্য-গীতি অত্যন্ত মনোরম ও প্রশংসার দাবি রাখে। পরিচালনায় ছিলেন দেয়া ভাদুড়ি। গীতিনাট্য বাল্মীকি প্রতিভা পরিবেশনের পর ছিল নীপবীথি ঘোষের গান। পর পর ৬টি গান শোনালেন তিনি।

নিখুঁত অভিব্যক্তি

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল ঈশিতা ভট্টাচার্যের নৃত্যানুষ্ঠান। প্রথম পর্বে তিনি নিবেদন করলেন ভরতনাট্যম ‘শংকর শ্রী গিরি’। কোরিওগ্রাফার সুধা দেবুলাপল্লি। দ্বিতীয় নিবেদন ছিল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। তাঁর অসাধারণ নৃত্যশৈলী এবং নিখুঁত অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে প্রতিটি ভঙ্গিতে। এ দিন শুরুতেই কলাবতী দেবী ও থাঙ্কমণি কুট্টিকে সংবর্ধনা জানানো হয়। দ্বিতীয় পর্বে ঈশিতা পরিবেশন করেন সুকল্যাণ ভট্টার্চাযের নৃত্য নির্দেশনায় দু’টি নৃত্য। প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিল্পী নিজের যোগ্যতা ও পারদর্শিতা তুলে ধরতে পেরেছেন। বিশেষ করে তাঁর নিখুঁত অভিব্যক্তি মনে রাখার মতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন