প্রঃ মহকুমা শহরে আগের প্রজন্মের নামে জমি ছিল। কিন্তু তাঁরা সকলেই মৃত। উত্তরাধিকারীদের নামে তা রেজিস্ট্রেশনও হয়নি। ৬০ বছর ধরে নিয়মিত খাজনা দেওয়া হয় ও পরচা রয়েছে। কিন্তু শোনা যাচ্ছে দলিল হারিয়ে গিয়েছে। সেটি মহকুমা বা জেলা হেড অফিসের কোথা থেকে পাওয়া যাবে? এত দিন আগের দলিল না পেলে, পরচার ভিত্তিতে উত্তরাধিকারীদের নামে দলিল বানানো যায় কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
প্রথমত, দলিল হারিয়ে গেলে সাধারণত স্থানীয় থানায় জেনারেল ডায়েরি-র মাধ্যমে জানিয়ে রাখা উচিত। অনেকে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কথাও বলে থাকেন। তা-ও করতে পারেন।
এমনিতে যাঁর বা যাঁদের নামে বাড়ির দলিল, তাঁরা মারা গেলে উত্তরাধিকারীদের উপর জমি বা বাড়ির স্বত্ব বা মালিকানা স্বাভাবিক নিয়মেই বর্তায়। উত্তরাধিকারীদের নামে আলাদা করে রেজিস্ট্রি করতে হয় না। তবে জমি বা বাড়ির পূর্বতন মালিক বা মালিকরা গত হলেও খাজনা নিয়মিত ভাবে দিয়ে যাওয়া জরুরি। যা আপনারা করছেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, আপনাদের হাতে
থাকা পরচায় ওই জমির সব উত্তরাধিকারীর নাম নথিবদ্ধ আছে কি না। যে সমস্ত উত্তরাধিকারীর নাম নথিভুক্ত নেই, তাঁদের উচিত পরচায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য স্থানীয় অফিসে আবেদন করা।
দলিল হারিয়ে গেলে ‘ডুপ্লিকেট’ বা ‘সার্টিফায়েড’ কপির জন্য আবেদন করতে হয়। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে আবেদনপত্র এনে, সেটিকে যথাযথ ভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। সঙ্গে খাজনার রসিদ, পরচা ও জেনারেল ডায়েরির কপি-ও জমা দিন। এই প্রক্রিয়াটি এখন অনলাইনেও হয়।
এ ছাড়া সরাসরি জমির মালিকানা চেয়ে আদালতে যাওয়া যায়। আনডিভাইডেড এবং আনডিমার্কেড জমির প্রাপ্য অংশ দাবি করে, যৌথ মালিকানার শরিকরা পার্টিশন চেয়ে মামলা করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, জমির মালিকানা সংক্রান্ত কিছু নথি দেখানো প্রয়োজন। নইলে আপনারা সত্যিই মালিক কি না, তা প্রমাণ করতে পারবেন না।
পরামর্শদাতা: আইনজীবী
জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়