• বাবার নামে তিন কাঠা জমি ছিল। তিনি মারা গিয়েছেন। সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনও উইল বা দানপত্র করে যাননি। এখন আমি, মা, ভাই এবং এক বোন রয়েছি। বোনের বিয়ের সময়ে বাবার মৃত্যুর পর পাওয়া টাকায় মা ‘প্ল্যান’ পাশের মাধ্যমে সেখানে একটি তিন কামরার একতলা বাড়ি করেন। পরে বাকি অংশও শেষ করেন। সেখানে আমিও নিজের রোজগারের টাকায় একটি ঘর, রান্নাঘর এবং সিঁড়ির-ঘর তৈরি করেছি। বাড়ির মিউটেশন সার্টিফিকেটে চার জনেরই নাম আছে এবং করও চার জনের নামেই জমা পড়ে। কিন্তু ভাই ও তার স্ত্রী আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করছে। ওরা চায় পুরো সম্পত্তি হস্তগত করতে। যদিও ওই বাড়িতে আমার নিজের দুটো ঘর ও রান্নাঘর রয়েছে। কিন্তু বাধ্য হয়ে আমার অংশ তালাবন্ধ রেখে অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছি। সঙ্গে মা। তিনি অসুস্থ। বোনের সম্পত্তি নিয়ে দাবি নেই।
আমার প্রশ্ন, ভাই কি তালা ভেঙে আমার অংশের দখল নিতে পারে? যদি সত্যি তাই করে, তবে কী করব?
সোনু কুমার
এখন ওই জমির মালিক আপনারা চার জনই। বাড়ির মিউটেশন হয়েছে চার জনের নামে। ট্যাক্স বিলও সকলের নামেই আসে। তার মানে বাবার মৃত্যুর পরে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন মেনে চার জনই ওই জমি ও বাড়ির সমান মালিকানা স্বত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন ও তা নথিবদ্ধ হয়েছে। বাড়ি তৈরির সময়ে মা বা পরে আপনি নিজের অর্থ খরচ করেছেন। তার মানে এই নয় যে, সম্পত্তির মালিকানা আপনার ও মায়ের নামে হয়েছে। বোনের সম্পত্তির দাবি নেই। কিন্তু তিনিও বাড়ি-সহ জমির মালিক তো বটেই। নিজের অংশ ছাড়তে চাইলে তাঁকে রেজিস্টার্ড দলিল করতে হবে। দানপত্র করেও তাঁর অংশ আপনাকে বা ভাইকে দিতে পারেন।
কিন্তু, আপনার ভাই আইনত তালা ভেঙে আপনার অংশে ঢুকতে পারেন না। এ রকম বেআইনি কাজ করলে আইনের আশ্রয় নিন। তবে ওই জায়গা ছেড়ে না-যাওয়াই ভাল। ‘ফিজিক্যাল পজেশান’ ছাড়াটা বোকামি। আপনারা নিজেদের মধ্যে ‘পার্টিশন’ করে নিলে ভাল। আপনারা এখন দখলদারির ভিত্তিতেই অবিভক্ত অংশ দখল করে থাকছেন। আইনি ঝামেলায় না-জড়িয়ে নিজেরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিলেই ভাল হয়।
পরামর্শদাতা আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়