স্ট্রং গ্র্যাভিটিতে কিছুটা কুপোকাৎ আপেক্ষিকতাবাদ

বিদেশে পাড়ি দেওয়ার আগে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বিজ্ঞানী পার্থ ঘোষ।আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ ১৯১৫-য় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু তা প্রথম প্রমাণিত হয়েছিল তার চার বছর পর, ১৯১৯ সালে। পশ্চিম আফ্রিকায় একটি পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে গিয়ে বিশিষ্ট ব্রিটিশ বিজ্ঞানী আর্থার এডিংটন যখন প্রথম প্রমাণ পেলেন আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের, তখন গোটা বিশ্বেই হই চই পড়ে গিয়েছিল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:০৬
Share:

প্রশ্ন-১: আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ যখন প্রথম প্রমাণিত হল, তখন ভারতে তা কী ভাবে সমাদৃত হয়েছিল? তাতে কী ভূমিকা ছিল বাঙালিদের?

Advertisement

পার্থ ঘোষ: আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ ১৯১৫-য় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু তা প্রথম প্রমাণিত হয়েছিল তার চার বছর পর, ১৯১৯ সালে। পশ্চিম আফ্রিকায় একটি পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে গিয়ে বিশিষ্ট ব্রিটিশ বিজ্ঞানী আর্থার এডিংটন যখন প্রথম প্রমাণ পেলেন আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের, তখন গোটা বিশ্বেই হই চই পড়ে গিয়েছিল। আর তাতে দারুণ উৎসাহিত হয়ে বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা একটি অসাধারণ প্রবন্ধ লিখেছিলেন ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকায়। সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে সেটিই ভারতে প্রকাশিত প্রথম কোনও প্রবন্ধ। আর সেই প্রবন্ধটি লিখেছিলেন এক জন বাঙালিই। শুধু তাই নয়, এর পর আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে আইনস্টাইনের যত গুলি পেপার ছিল, সেই সবক’টি পেপারই অনুবাদ করেছিলেন দুই প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু। সেই পেপারগুলি নিয়ে সেই সময় একটি বই প্রকাশ করেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ‘Principles of Relativity’ নামে সেই বইটির মুখবন্ধ লিখেছিলেন আরও এক দিকপাল বাঙালি ব্যক্তিত্ব। প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ।

Advertisement

প্রশ্ন-২: আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে সেই সময় ভারতে কারা কারা কাজ করতে শুরু করেছিলেন?

পার্থ ঘোষ: সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে ভারতে খুব সম্ভবত প্রথম কাজটা শুরু করেছিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী পি সি বৈদ্য এবং জয়ন্তবিষ্ণু নারলিকরের বাবা অধুনাপ্রয়াত ভি ভি নারলিকর। তার পরেই কাজ করতে শুরু করেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। আর তার ঠিক পরেই রয়েছেন আরও এক জন বাঙালি। এ কে রায়চৌধুরী। যাঁর ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশন’-এর নাম জানেন না, এমন পদার্থবিদ বিশ্বে নেই এক জনও। ওই ‘রায়চৌধুরী ইক্যুয়েশনে’ মজেছিলেন স্টিফেন হকিংও। পরবর্তী কালে এ ব্যাপারে আরও এক দিকপাল বিজ্ঞানীর নাম- অভয় আষ্টেগর।

প্রশ্ন-৩: আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ সম্পর্কে কী অভিমত ছিল দুই কিংবদন্তী বিজ্ঞানী রজার পেনরোজ ও স্টিফেন হকিংয়ের?

পার্থ ঘোষ: ওঁরা বলেছিলেন কিছু ‘Singularity’ থাকবে। এর মানে, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ দিয়ে ব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু ব্যাখ্যা করা যাবে না। ‘বিগ ব্যাং’ বা ব্ল্যাক হোলের মতো ব্রহ্মাণ্ডের কয়েকটি বিশেষ অবস্থায় আপেক্ষিকতাবাদের সমীকরণগুলির ফলাফল বা ‘রেজাল্ট’গুলি অসীম হবে। তা অর্থহীন হয়ে পড়বে।

প্রশ্ন-৪: পেনরোজ-হকিংয়ের সেই পূর্বাভাস কি মিলেছে?

পার্থ ঘোষ: এই টুকুই বলি, ব্রহ্মাণ্ডে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ যেখানে যেখানে অত্যন্ত শক্তিশালী, সেই সব ক্ষেত্রে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ এখনও ‘অকেজো’ই রয়ে গিয়েছে!

সাক্ষাৎকার- সুজয় চক্রবর্তী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন