photogallery

Saxon Mullins: ‘না’ মানে ‘না’! এই অষ্টাদশীর দীর্ঘ লড়াইয়ে বদলে গেল ধর্ষণ আইন

ধর্ষকের কেবল কারাদণ্ড হলেই কি যথেষ্ট শাস্তি হল! যৌনতায় সম্মতির জন্য কেন আইন নেই? এই প্রশ্ন তুলে আইনি লড়াই করেন মুলিনস।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
সিডনি শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২২ ১৫:৪২
Share:
০১ ১৭

জীবনের প্রথম বার চুম্বন, যৌনানুভূতির স্বাদ ইত্যাদি নিয়ে মনে মনে অনেক কল্পনা ছিল অষ্টাদশী স্যাক্সন মুলিনসের। কিন্তু কয়েক মুহূর্তের ঘটনা বদলে দিল তাঁর জীবন। মাত্র কয়েক মিনিট আগে আলাপ হওয়া এক যুবক এমন কাজ করতে পারেন, দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি তিনি।

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ১৭

২০১৩ সাল। সিডনির একটি পানশালার বাইরে সদ্য পরিচিত এক যুবক মুলিনসের সঙ্গে যৌন্সম্পর্কে লিপ্ত হন। মুলিনসের দাবি, তিনি বার বার ‘না’ বলেছিলেন। তাঁর আপত্তি কানে তোলেননি সেই যুবক। ধর্ষণের অভিযোগে ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

Advertisement
০৩ ১৭

কিন্তু এই যৌনমিলনে মুলিনসের সম্মতি ছিল কি নেই, তা প্রমাণ করাই কঠিন হয়ে পড়ে। এখন তাঁর বয়স ২৭ বছর। সেদিনের ওই অষ্টাদশীর লড়াইয়ের কারণেই সদ্য আইনি সংস্কারের পথে হেঁটেছে অস্ট্রেলিয়া।

প্রতীকী চিত্র।

০৪ ১৭

নিউ সাউথ ওয়েলস্ প্রদেশে ধর্ষণ সংক্রান্ত নতুন এই আইনের নাম ‘অ্যাফার্মেটিভ কনসেন্ট’। যে আইনে বলা হয়েছে, যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রাক্‌মুহূর্তে দু’জনকেই সম্মতি দিতে হবে। তা বার্তালাপের মাধ্যমে সঙ্গীর ইচ্ছে-অনিচ্ছা বুঝে নেওয়া হতে পারে। কিংবা অন্য কোনও ভাবেও হতে পারে। কিন্তু যৌনমিলনের আগে সম্মতি জরুরি।

প্রতীকী চিত্র।

০৫ ১৭

এই গোটা আইনের সংশোধনের মূলে রয়েছে এক তরুণীর অদম্য লড়াই। আইনের দরজায় কড়া নেড়ে জীবনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন। ব্যয় হয়েছে অর্থ। পাঁচ বছর আগে হতাশ হয়েছিলেন আদালতের রায়ে। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি মুলিনস। অবশেষে এল জয়।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ১৭

আইন সংস্কারের ফলে মুলিনসের সেই ধর্ষক জেলে গিয়েছেন।

প্রতীকী চিত্র।

০৭ ১৭

মুলিনসের কাছে প্রথম পাঁচ বছরের আইনি লড়াই ছিল যুদ্ধের মতো। প্রথম বার জুরির সামনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাঁদের সামনে সেদিনকার ঘটনার কথা বলতে বলতে গলা বুজে আসছিল। কিন্তু বলেছিলেন। মুলিনসের কথায়, ‘‘আমি ওকে 'না' বলার পর ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। জোর খাটায়। আমি বলি, বন্ধু নাইট ক্লাবে অপেক্ষা করছে। ছেড়ে দাও। ও ছাড়েনি...’’

প্রতীকী চিত্র।

০৮ ১৭

সে বার অভিযুক্তকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারকরা। কিন্তু এ তো চাননি মুলিনস!

০৯ ১৭

যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আর কী চাই? বিচারপতিদের কাছে মুলিনস জানান, এই বিচারে তিনি খুশি হয়েছেন। কিন্তু নিজেকেও তাঁর দোষী মনে হচ্ছে। কারণ, তাঁর মনে হয়েছে ওই যুবকের জীবন শেষ হয়ে গেল তাঁর জন্য।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ১৭

তাহলে চান কী? মুলিনস চাইলেন আইনের সংস্কার। যেখানে দু’জন মানুষ তাঁদের একান্ত মুহূর্ত কাটানোর আগে পরস্পরের সম্মতি নেবেন। এ ভাবে এক একজনকে শাস্তি দিয়ে কি কোনও বদল আসে!

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

১১ ১৭

মুলিনসের আবেদনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় বার বিচার শুরু হল। এ বার ওই যুবককে বেকসুর খালাস করলেন বিচারক। যে মানুষটির জন্য তাঁর জীবন তছনছ গিয়েছে বলে মুলিনস মনে করেন, দেখলেন তিন হাত দূরে দাঁড়িয়ে তিনি হাসছেন। এ কেমন বিচার হল!

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

১২ ১৭

২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য, অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মুলিনস। তার পর আইন মহলে আলোড়ন শুরু হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ১৭

মুলিনসের লড়াই কঠিন ছিল। কারণ, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান এবং নিউ ইয়র্কের মতো দেশের ও সেখানকার বিভিন্ন প্রদেশের আইনে ধর্ষণ মানে শুধু যৌন হেনস্থা নয়। যৌনতার চরিত্র হিংসাত্মক হলেই তবে তাকে ধর্ষণের আওতায় ফেলা হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ১৭

মুলিনসের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আইনে বদল এসেছে কয়েক দিন আগে। এ নিয়ে তরুণীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তার তো কোনও পরিবর্তন হবে না। কিন্তু আমার লড়াইয়ের জন্য যদি আর কারও সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে, সেটাই হবে আমার জয়।’’

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

১৫ ১৭

এই আইনি লড়াইয়ে প্রচুর অর্থ, সময় ব্যয় হয়েছে মুলিনসের। এক এক সময় মনে হয়েছে, এ বার বোধ হয় থেমে যাওয়া উচিত। কিন্তু আবার লড়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ১৭

মুলিনসের নিজের কথায়, ‘‘এক এক সময় মনে হয়েছে, হাত ধুয়ে ফেলি। মনে হয়েছে, আমি এই লড়াই লড়তে পারব না।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ধর্ষিতা যদি বিচার পান, তার চেয়ে তো ভাল কিছু হতে পারে না। কিন্তু সেখানেও তাঁরা যদি অপমানিত হন, তার চেয়ে দুঃখের কিছু থাকতে পারে না।’’

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

১৭ ১৭

যদিও নয়া আইন নিয়ে বিতর্কও কম হচ্ছে না। সমালোচকদের একাংশ বলছেন, সংশোধিত আইনের সুবিধা নিয়ে প্রাক্তনকে ফাঁসাতে পারেন অনেকে। ওই মুহূর্তে সম্মতি ছিল কি ছিল না, সব সময় তা প্রমাণ করাও তো অসম্ভব! তবে স্যাক্সন মুলিনসের লড়াইকেও মান্যতা দিচ্ছেন অগণিত মানুষ। যাঁর একার লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার ধর্ষণ আইনের বদল তো এল!

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement