Bollywood Actress

সাহসী পোশাকে ঝড়, বাবাকে অবহেলা, নামী পরিচালকের সঙ্গে সম্পর্ক! তারকাদের সঙ্গে কাজ করেও হারিয়ে যান ‘অন্য মাধুরী’

মুম্বইয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন অভিনেত্রী। সেখানেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় ‘ঢুন্ডতে রহ যাওগে’। কেরিয়ারের প্রথম ছবিতেই নাসিরুদ্দিন শাহ, সতীশ শাহ, অমরীশ পুরী, প্রেম চোপড়ার মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ১২:০১
Share:
০১ ২০

লাইট-ক্যামেরা, অভিনয়, গ্ল্যামার, খ্যাতি— বলিউডের কথা বললেই মনে পড়ে যায় এই শব্দগুলো। প্রতি দিন হাজার হাজার তরুণ-তরুণী বলি জগতে নাম করার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বইয়ে পা দেন। কেউ কেউ নিজেদের চেষ্টা, কঠোর পরিশ্রম এবং ভাগ্যের উপর ভর করে তারকা হন, কেউ সারা জীবন চেষ্টা করেও তেমন নাম করতে পারেন না। আবার কেউ কেউ রাতারাতি তারকা তকমা পেলেও বলিউড থেকে হারিয়েও যান খুব তাড়াতাড়ি। সেই সংখ্যাও নেহাত কম না।

০২ ২০

সে রকমই এক জন অন্তরা মালি। বলিউডের খ্যাতনামী চিত্রগ্রাহক জগদীশ মালির কন্যা। প্রতিভা এবং ক্যারিশমা দিয়ে এক সময় দর্শককে মুগ্ধ করেছিলেন অন্তরা। তাঁর শরীরী বিভঙ্গ পুড়িয়েছিল বহু পুরুষ-মন। উর্মিলা মাতন্ডকরের সঙ্গে তুলনা করা হত তাঁর।

Advertisement
০৩ ২০

১৯৯৮ সালে বলিউডে অভিষেক হয় অন্তরার। ছবির নাম ‘ঢুঁঢতে রহ যাওগে’। বক্স অফিসে একেবারেই সাফল্যের মুখ দেখেনি সেই ছবি। তবে এর পরই একাধিক ছবির মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বলি নায়িকা। বলিউডের জনপ্রিয় ছবিনির্মাতা রামগোপাল বর্মার একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। কিন্তু কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেই বলিউড থেকে অদৃশ্য হয়ে যান অন্তরা। রেখে যান বিতর্ক।

০৪ ২০

মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে ১৯৭৫ সালের ১ জুলাই অন্তরার জন্ম। রেখা, অনুপম খের, মনীষা কৈরালা, ইরফান খান, শাবানা আজ়মির মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁর আলোকচিত্রী বাবা জগদীশ।

০৫ ২০

মুম্বইয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন অন্তরা। সেখানেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় ‘ঢুন্ডতে রহে যাওগে’। কেরিয়ারের প্রথম ছবিতেই নাসিরুদ্দিন শাহ, সতীশ শাহ, অমরীশ পুরী, প্রেম চোপড়া, জাভেদ জাফ্রি, শম্মি কপূরের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান অন্তরা। কিন্তু সেই ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।

০৬ ২০

হিন্দি ছবির মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু করলেও ১৯৯৯ সালে রামগোপাল বর্মা পরিচালিত ‘প্রেম কথা’ নামের একটি তেলুগু ছবিতে এবং ‘মস্ত’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন অন্তরা। এক বছর পর একটি মালয়ালম ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।

০৭ ২০

কখনও রামগোপালের পরিচালিত হিন্দি ছবিতে, কখনও বা তাঁর প্রযোজিত ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেতেন অন্তরা। ‘মস্ত’, ‘খিলাড়ী ৪২০’, ‘কোম্পানি’, ‘নাচ’, ‘রোড’ এবং ‘ডরনা মনা হ্যায়’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। অভিনয় করেন অভিষেক বচ্চন, বিবেক ওবেরয়, তুষার কপূর, আফতাব শিবদাসানি, রীতেশ দেশমুখের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, হুবহু বলি অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের মতো দেখতে অন্তরা।

০৮ ২০

সাহসী পোশাকে অভিনয় করে সে সময় বলিপাড়ায় হইচই ফেলেছিলেন অন্তরা। তাঁকে নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়। বহু পুরুষ দর্শকের মনেও ছাপ ফেলেছিলেন তিনি।

০৯ ২০

২০০৩ সালে ‘ম্যায়ঁ মাধুরী দীক্ষিত বননা চাহতী হুঁ’ নামে একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন অন্তরা। এই ছবিতে অভিনয়ের পরই চর্চা শুরু হয় অভিনেত্রীকে ঘিরে। কিন্তু একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও কেরিয়ারে সাফল্যের স্বাদ সে ভাবে উপভোগ করতে পারেননি অন্তরা।

১০ ২০

২০০৫ সালে ‘মিস্টার ইয়া মিস্’ নামের ছবিতে অভিনয় করেন অন্তরা। এই ছবির পরিচালনা এবং চিত্রনাট্য বুননের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। প্রযোজকের আসনে দেখা গিয়েছিল রামগোপাল বর্মাকে। কিন্তু ‘মিস্টার ইয়া মিস্’ ছবিটি বক্স অফিসে সাড়া ফেলতে ব্যর্থ হয়। তার পরেই বলিপাড়া থেকে যেন হঠাৎ উধাও হয়ে যান অন্তরা। কোনও ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি তাঁকে।

১১ ২০

অভিনয়জগৎ থেকে সরে গিয়ে ২০০৯ সালে সর্বভারতীয় এক পত্রিকার সম্পাদক চে কুরিয়েনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অন্তরা। বিয়ের এক বছর পর আবারও এক বার বড় পর্দায় ফেরেন অন্তরা। ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘...অ্যান্ড ওয়ান্স এগেন’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। অমল পালেকর পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয় করেন রজত কপূর এবং বাঙালি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

১২ ২০

‘...অ্যান্ড ওয়ান্স এগেন’ ছবিতে এক সন্ন্যাসিনীর চরিত্রে অভিনয় করেন অন্তরা। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে অভিনয়ের জন্য মাথা মুড়িয়ে ফেলতে হয় তাঁকে। কিন্তু সেই ছবিও দর্শকের মনে বিশেষ ছাপ ফেলতে পারেননি। ফলে কেরিয়ারে ‘কামব্যাক’ হয়নি অন্তরার।

১৩ ২০

এর পর বড় পর্দা থেকে একেবারেই নিজেকে সরিয়ে নেন অন্তরা। বিয়ের তিন বছর পর ২০১২ সালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন অভিনেত্রী।

১৪ ২০

অন্তরাকে নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল বিস্তর। রামগোপালের অভিনেত্রী হিসাবে তকমা লাগার পর তাঁদের সম্পর্ক নিয়েও অনেক কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল।

১৫ ২০

তবে বলিপাড়া থেকে বিদায় নেওয়ার পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি অন্তরার। অন্তরা যখন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, তখন তাঁর বাবা জগদীশকে রাস্তায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। ‘বিগ বস্’ রিয়্যালিটি শোয়ের প্রতিযোগী তথা অভিনেত্রী মিঙ্ক ব্রারের দাবি, জগদীশ রাস্তায় এমন ভাবে বসেছিলেন যে, একনজরে তাঁকে দেখে ভিক্ষুক মনে করেছিলেন মিঙ্ক।

১৬ ২০

মিঙ্কের দাবি, জগদীশকে নাকি একটি কম্বলও দান করেছিলেন তিনি। এই ঘটনাটি পরে বলি অভিনেতা সলমন খানকে জানালে অন্তরাকে তাঁর বাবার খোঁজ দেওয়া হয়। কানাঘুষো শোনা যায়, অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে নাকি বাবার দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে চাননি অন্তরা।

১৭ ২০

পুরো বিষয়টি নিয়ে অন্তরার সমালোচনা করে নাকি বিবৃতি প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল সলমনকে। সলমন নাকি বলেছিলেন, ‘‘তোমার বাবা রাস্তায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় ঘুরছেন আর তুমি বলছ তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন নেই। তা হলে বলো কার সাহায্যের প্রয়োজন? যখন আমি খবর পেলাম, তখন আমি খুব কম লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কাউকে সাহায্য করার জন্য বেশি পরিশ্রম করতে হয় না।’’

১৮ ২০

অন্তরার বাবা তথা আলোকচিত্রী জগদীশের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সলমন নাকি আরও বলেন, ‘‘জগদীশ মালি একজন খুব বড় চিত্রগ্রাহক। তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার জন্যও আমাদের অনেক কষ্ট করতে হত।’’ জগদীশ এর কয়েক মাস পরেই মারা যান।

১৯ ২০

অন্য দিকে অন্তরা জানিয়েছিলেন, জগদীশ অত্যধিক মদ্যপান করতেন। ডায়াবিটিস ছিল তাঁর। কখনও ওষুধ খেতে ভুলে গেলে বাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে যেতেন তাঁর বাবা। মিঙ্কের বিরুদ্ধে তাঁর বাবাকে প্রচারের জন্য ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে সমালোচনাও করেছিলেন অন্তরা।

২০ ২০

বর্তমানে বলিপাড়া থেকে শতহস্ত দূরে স্বামী, সন্তান-সহ সংসার নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন অন্তরা। সমাজমাধ্যমেও তেমন সক্রিয় নন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement