Carl Tanzler

প্রেমে হাবুডুবু খেতেন বিবাহিত প্রেমিক, প্রেয়সীর দেহ চুরি করে সংরক্ষণ করেন! অবাক করবে কার্ল ট্যানজলারের কাহিনি

১৯৩০-এর দশকের গোড়ার দিকের কথা। আমেরিকার ফ্লরিডার কি ওয়েস্টের একটি হাসপাতালে কাজ করতেন জার্মান অভিবাসী কার্ল। সেখানেই মারিয়া এলেনা মিলাগ্রো ডি হোস্‌ নামে এক কিউবান-আমেরিকান তরুণীর প্রেমে পড়েন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৫ ০৯:২৯
Share:
০১ ১৮

একরাশ স্বপ্ন, একসঙ্গে পথচলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে শুরু হয় সম্পর্ক। পারস্পরিক সমীকরণ, ব্যক্তিগত বোঝাপড়া, অমোঘ আকর্ষণ সেই সম্পর্কের ভিত শক্ত করে। প্রিয় মানুষটি পাশে নেই, এমন চিন্তা মনে এলেও যেন বুক কেঁপে ওঠে। তবে অনেকের ভালবাসার যাত্রাপথ হয় গল্পের মতো। আবার অনেকের যাত্রাপথে বিছানো থাকে বিস্তর কাঁটা।

০২ ১৮

কিন্তু ইতিহাসে এমন এক জন ছিলেন, যিনি ভালবাসে সব সীমা ছাড়িয়েছিলেন। প্রেমিকার মৃত্যুর পরেও তাঁর সঙ্গ ছাড়েননি। কোনও মামলা-মোকদ্দমা, পুলিশের ভয়ও তাঁকে ঠেকাতে পারেনি। কথা হচ্ছে কার্ল ট্যানজলারের।

Advertisement
০৩ ১৮

১৯৩০-এর দশকের গোড়ার দিকের কথা। আমেরিকার ফ্লরিডার কি ওয়েস্টের একটি হাসপাতালে কাজ করতেন জার্মান অভিবাসী কার্ল। সেখানেই মারিয়া এলেনা মিলাগ্রো ডি হোস্‌ নামে এক কিউবান-আমেরিকান তরুণীর প্রেমে পড়েন তিনি।

০৪ ১৮

কার্ল বিবাহিত ছিলেন। সন্তানও ছিল। কিন্তু মারিয়ার প্রতি কার্লের অমোঘ টান এমনই ছিল যে সংসারের বাঁধন আটকাতে পারেনি তাঁকে। মারিয়ার প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকেন কার্ল।

০৫ ১৮

কার্লের ভালবাসায় সাড়া দিয়েছিলেন মারিয়াও। তবে তাঁদের প্রেমযাত্রা সুখের হয়নি। যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন মারিয়া। কার্ল মনে করতেন মারিয়া তাঁর জীবনের সৌভাগ্য। তাই মৃত্যুকে প্রেমের পথে বাধা হতে দিতে রাজি ছিলেন না তিনি। মারিয়াকে সুস্থ করে তুলতে উঠে পড়ে লাগেন কার্ল।

০৬ ১৮

অসুস্থ মারিয়াকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান কার্ল। প্রেয়সীর চিকিৎসার এবং দেখভালের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পরিবারের সদস্যেরা তাঁর সেই সিদ্ধান্ত বেঁকে বসলেও বহু চেষ্টার পর সকলের সম্মতি আদায়ে সক্ষম হন কার্ল।

০৭ ১৮

এর পর মারিয়ার জন্য ওষুধপথ্যের ব্যবস্থা করেন কার্ল। বাড়িতেই চিকিৎসক এসে মারিয়াকে দেখে যেতেন। এমনকি, মারিয়ার চিকিৎসার জন্য কার্ল বাড়িতে এক্স-রে যন্ত্রও বসিয়েছিলেন।

০৮ ১৮

এত করেও শেষরক্ষা হয়নি। ২১ বছর বয়সে মৃত্যু হয় মারিয়ার। চোখের জলে প্রেয়সীকে বিদায় জানান কার্ল। পরিবারকে রাজি করিয়ে মারিয়ার শেষকৃত্যের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নেন।

০৯ ১৮

মারিয়ার স্মৃতির উদ্দেশে কি ওয়েস্টের সমাধিক্ষেত্রে একটি সৌধও বানিয়েছিলেন কার্ল। তার নীচেই শায়িত রাখা হয়েছিল মারিয়ার দেহ। প্রায় প্রতি রাতে ওই সমাধিস্থল পরিদর্শন করতে যেতেন কার্ল। তবে দিন যতই পেরোচ্ছিল ততই প্রেমিকার অনুপস্থিতি কুরে কুরে খাচ্ছিল তাঁকে।

১০ ১৮

মারিয়ার মৃত্যুর কিছু সময় পর আর নিজেকে আটকাতে পারেননি কার্ল। মৃত প্রেয়সীর সমাধিস্থল খুঁড়ে দেহাবশেষ তুলে আনেন তিনি। এর পর একটি গাড়িতে করে মারিয়ার দেহের অবশিষ্ট বাড়ি নিয়ে আসেন।

১১ ১৮

মারিয়ার দেহাবশেষ বাড়ি নিয়ে আসার পর তা কী ভাবে সংরক্ষণ করা যায়, সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন কার্ল। পচনশীল দেহের আকার বজায় রাখার জন্য প্রথমে সেটি ন্যাকড়া দিয়ে ভাল করে মুড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

১২ ১৮

মারিয়ার কঙ্কাল অক্ষত রাখতে তা পিয়ানোর তার দিয়ে বেঁধে দিয়েছিলেন কার্ল। অক্ষিকোটরে বসিয়েছিলেন কাচের চোখ। পচনশীল মাংসের উপর সিল্ক, মোম এবং প্লাস্টারের প্রলেপ দিয়েছিলেন। এমনকি মারিয়ার চুল দিয়ে একটি পরচুলও তৈরি করিয়েছিলেন।

১৩ ১৮

কার্ল শুধুমাত্র মারিয়ার দেহই সংরক্ষণ করেননি, মৃতদেহের সঙ্গে ওঠাবসাও ছিল তাঁর। সংরক্ষিত মৃতদেহ পাশে নিয়েই ঘুমোতেন। মাঝেমধ্যে সেটিকে জড়়িয়ে নাচতেনও। তবে মারিয়ার মৃতদেহ নিয়ে কার্লের পাগলামি দিন দিন বাড়তে থাকে।

১৪ ১৮

মারিয়ার মৃতদেহ আকাশে পাঠানোর জন্য একটি মহাকাশযান তৈরি পরিকল্পনাও করে ফেলেছিলেন কার্ল। তাঁর ধারণা ছিল, সূর্যের রশ্মি গায়ে পড়লে আবার জীবন্ত হয়ে উঠবেন মারিয়া। যদিও সেই চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হয়নি।

১৫ ১৮

বছর সাতেক পর মারিয়ার বোন পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। পুলিশ নিয়ে কার্লের বাড়ি পৌঁছোন তিনি। তবে সমাধিস্থল থেকে মৃতদেহ চুরি নিয়ে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে কার্লকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে মারিয়ার মৃতদেহ ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।

১৬ ১৮

স্থানীয় একটি সমাধিস্থলে মারিয়ার সংরক্ষিত দেহ জনসাধারণের প্রদর্শনীর জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। মোমের মূর্তির মতো দেখতে সেই দেহ দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তবে এঁদের অনেকেই কার্লের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন!

১৭ ১৮

কার্লের বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও মারিয়ার সংরক্ষিত দেহ তাঁকে আর ফেরত দেওয়া হয়নি। কি ওয়েস্টের একটি সমাধিক্ষেত্রে আবার সমাধি দেওয়া হয় দেহটিকে। কার্ল যাতে আর কোনও কাণ্ড না ঘটান, তার জন্য দেহটি কোথায় সমাধি দেওয়া হয়েছে, তা কাউকে জানানো হয়নি।

১৮ ১৮

মনের দুঃখে কি ওয়েস্ট ছেড়েছিলেন কার্ল। ফ্লরিডার পাসকো কাউন্টিতে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই বসবাস করতেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী এবং সন্তানেরা। শেষ জীবন তাঁদের সঙ্গেই কাটিয়েছিলেন কার্ল। তবে সেখানে গিয়েও মারিয়া-মোহ কাটাতে পারেননি তিনি। নিজেই মারিয়ার পূর্ণাঙ্গ প্রতিরূপ তৈরি করে সেটির সঙ্গে বসবাস করেছিলেন শেষ দিন পর্যন্ত।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement