KC Sinha

বিহারের মহাগুরু, ‘জীবন্ত কিংবদন্তি’, লিখেছেন ৭০টি বই! সব হিসাব উল্টে ধরাশায়ী বিহারের ‘সবচেয়ে শিক্ষিত’ প্রার্থী

১৯৫৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভোজপুর জেলায় বাবা রেবতীরমন প্রসাদ এবং মা লক্ষ্মী দেবীর ঘরে জন্ম কৃষ্ণচন্দ্রের। বিহার বোর্ড পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছিলেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:১৪
Share:
০১ ১৯

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ ঝড়ে উড়ে গিয়েছে আরজেডি। ভরাডুবি হয়েছে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের দলের। রাজ্যের ২৪৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৪৩টিতে লড়ে তাদের প্রাপ্তি ২৫টি আসন। অন্য দিকে, এনডিএ জোটের শরিক বিজেপি ৮৯টি এবং জেডিইউ ৮৫টি আসনে জিতেছে।

০২ ১৯

তবে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডির থেকেও শোচনীয় ফল হয়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকের রাজনৈতিক দল জন সুরাজ পার্টির। বিধানসভা নির্বাচনে তাদের হাতে আসেনি একটিও আসন।

Advertisement
০৩ ১৯

যে প্রার্থীর জেতা নিয়ে জন সুরাজ পার্টি আশায় বুক বেঁধেছিল সবচেয়ে বেশি, সেই কৃষ্ণচন্দ্র সিন্‌হা ওরফে কেসি সিন্‌হাও পরাজিত হয়েছেন কুম্‌হরার আসন থেকে। কুম্‌হরার আসনে জিতেছে বিজেপি। কৃষ্ণচন্দ্র দু’নম্বর স্থানেও নেই। তাঁর থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন কংগ্রেসের প্রার্থী ইন্দ্রদীপ কুমার।

০৪ ১৯

অনেক আটঘাট বেঁধে কুম্‌হরার থেকে বিহারের বিখ্যাত গণিতজ্ঞ কৃষ্ণচন্দ্রকে প্রার্থী করেছিল পিকের দল। কিন্তু শুক্রবার নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, ওই আসনে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী সঞ্জয় কুমার।

০৫ ১৯

বিজেপির সঞ্জয়ের কাছে ৮৫,৪৬৮ ভোটে পরাজিত হয়েছেন কৃষ্ণচন্দ্র। সঞ্জয় পেয়েছেন ১০০,৪৮৫টি ভোট। মাত্র ১৫,০১৭টি ভোট পেয়েছেন কৃষ্ণচন্দ্র। অন্য দিকে, ৫২,৯৬১টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কংগ্রেসের ইন্দ্রদীপ।

০৬ ১৯

কিন্তু কেন কৃষ্ণচন্দ্রের জয় নিয়ে এত নিশ্চিত ছিলেন পিকে? কেনই বা তাঁকে জন সুরাজের আশার আলো বলে মনে করেছিলেন ভোট বিশেষজ্ঞেরাও?

০৭ ১৯

কেসি সিন্‌হা ওরফে কৃষ্ণচন্দ্র সিন্‌হা বিহার তথা দেশের এক জন বিখ্যাত গণিতজ্ঞ। গণিতের দুনিয়া থেকে রাজনীতির আঙিনায় পা দিয়েছিলেন তিনি। অঙ্গীকার নিয়েছিলেন বিহারের সমস্যা সমাধানের।

০৮ ১৯

বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে শিক্ষিত প্রার্থীদের মধ্যে এক জন হিসাবে সমাদৃত হয়েছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র। এমনকি অনেকের মতে, তিনিই বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে শিক্ষিত প্রার্থী ছিলেন।

০৯ ১৯

গণিতজ্ঞ হওয়ার পাশাপাশি কৃষ্ণচন্দ্র এক জন লেখক এবং আইআইটি-জেইই অধ্যাপক। শিক্ষাক্ষেত্রে বিহারে ‘মহাগুরু’ হিসাবেও পরিচিত তিনি।

১০ ১৯

১৯৫৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভোজপুর জেলায় বাবা রেবতীরমন প্রসাদ এবং মা লক্ষ্মী দেবীর ঘরে জন্ম কৃষ্ণচন্দ্রের। বিহার বোর্ড পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছিলেন তিনি। জিতেছিলেন ‘ন্যাশনাল মেরিট স্কলারশিপ’ বা জাতীয় মেধা বৃত্তিও।

১১ ১৯

কৃষ্ণচন্দ্র পড়াশোনা করেছেন বিহারের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পটনা সায়েন্স কলেজ থেকে। সেখান থেকেই প্রথমে স্নাতক এবং পরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। দু’টি স্বর্ণপদকও পান। ১৯৯০ সালে গবেষণা শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

১২ ১৯

মাত্র ২৮ বছর বয়সে কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর প্রথম বই ‘কোঅর্ডিনেট জিয়োমেট্রি’ লিখেছিলেন। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে সব মিলিয়ে লিখেছেন ৭০টিরও বেশি বই। গত তিন দশক ধরে তাঁর অনেক লেখা বিহার এবং অন্যান্য রাজ্যের স্কুল পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিহারের ‘মহাগুরু’ তকমাও পেয়েছেন কৃষ্ণচন্দ্র।

১৩ ১৯

বিগত বহু বছর ধরে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত কৃষ্ণচন্দ্র। কেরিয়ার শুরু করেন পটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে। পটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান এবং বিজ্ঞান শাখার ডিন-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তিনি।

১৪ ১৯

নিজে যেখান থেকে পড়াশোনা করেছিলেন, পরে সেই পটনা সায়েন্স কলেজের অধ্যক্ষও হন কৃষ্ণচন্দ্র। পরবর্তী কালে নালন্দা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৫ ১৯

এ ছাড়াও বীর কুঁয়ার সিংহ বিশ্ববিদ্যালয়, জয়প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন কৃষ্ণচন্দ্র। তাঁকে এক জন ‘জীবন্ত কিংবদন্তি’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

১৬ ১৯

শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য কৃষ্ণচন্দ্র অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ শিক্ষা পুরস্কার, ‘আইকনস অফ বিহার’ পুরস্কার, ‘গ্লোবাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘পাইওনিয়ারস অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ড’-এর মতো বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।

১৭ ১৯

সমাজের সুবিধাবঞ্চিত কিন্তু মেধাবী অংশের জন্য শিক্ষা সহজলভ্য করার লক্ষ্যে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় ভাবে কাজ করে চলেছেন কৃষ্ণচন্দ্র। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে জেইই-র প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থাও করেন তিনি।

১৮ ১৯

কৃষ্ণচন্দ্রের একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে। সেখানে গণিতের পাঠ দেন তিনি। অনেক মেধাবী পড়ুয়া সেই ভিডিয়ো দেখে শিক্ষালাভ করে।

১৯ ১৯

সেই কেসি-ই শিক্ষাকে হাতিয়ার করে বিহারের রাজনৈতিক এবং উন্নয়নমূলক সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকার নিয়ে বিহারের বিধানসভা ভোটের মঞ্চে নেমেছিলেন। তাঁর উপরে বাজি ধরেছিলেন খোদ পিকে। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় বিজেপি ঝড়ে ধরাশায়ী হয়েছেন তিনি। ভোটের অঙ্ক মেলাতে ব্যর্থ হলেন গণিতবিদ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement