QR code scam

কিউআর কোড স্ক্যান করলেই টাকা! আধার-আতঙ্কের মাঝে প্রতারণার নয়া ফাঁদ

এটা স্মরণে রাখা প্রয়োজন যে, কিউআর কোড স্ক্যান করা হয় টাকা দেওয়ার জন্য। টাকা পাওয়ার জন্য নয়। প্রতারকরা এই বিষয়টিই সুচতুর ভাবে গুলিয়ে দিতে চান এই বলে যে তাঁরা কিউআর কোডের মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:১৪
Share:
০১ ১৯

পুরনো জিনিস কেনাবেচার একটি ওয়েবসাইটে একটি আসবাব বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন রাহুল দাস (নাম পরিবর্তিত)। বিজ্ঞাপন দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেই অ্যাপের মেসেঞ্জারে আশিস কুমার নামে এক ব্যক্তি আসবাবটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে মেসেজ করেন এবং রাহুলের ফোন নম্বর চান।

০২ ১৯

রাহুল ফোন নম্বর দিলে ফোন করেন। দরদাম করা ছাড়াই রাহুল যে দর দিয়েছিলেন, সেই দামে আসবাবটি কিনতে রাজি হন। ওই অ্যাপে আসবাবের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন রাহুল। আশিস জানান, ওই ছবি দেখেই তাঁর পছন্দ হয়েছে।

Advertisement
০৩ ১৯

এর পর রাহুলকে গুগ্‌ল পে (জিপে)-তে টাকা পাঠাবেন বলে জানান আশিস। প্রথমে তিনি হোয়াট্‌সঅ্যাপে একটি কিউআর কোড পাঠান। বলেন, এই কিউআর কোড স্ক্যান করলে প্রথমে ২ টাকা রাহুলের অ্যাকাউন্ট থেকে কাটা হবে এবং তার পরই ২ টাকা আবার রাহুলের অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে।

০৪ ১৯

রাহুল সেই কিউআর কোড স্ক্যান করে ২ টাকা দেন। এ বার ফোনের ও পার থেকে তাঁকে বলা হয়, বাকি অর্থের জন্য নতুন একটি কিউআর কোড পাঠিয়েছেন আশিস। সেটা স্ক্যান করে জিপে-তে পিন কোড দিলেই টাকা জমা পড়বে রাহুলের অ্যাকাউন্টে।

০৫ ১৯

এ বার রাহুলের সন্দেহ হয়। তিনি বলেন, এই ভাবে টাকা তিনি নেবেন না। তখনই ফোনের উল্টো দিক থেকে চাপ দেওয়া হয়। একটি মেসেজ পাঠিয়ে বলা হয় আশিস ইতিমধ্যেই টাকা পাঠিয়েছেন। শুধু কিউ আর কোডটি স্ক্যান করে পিন নম্বর দিলেই টাকা জমা পড়বে রাহুলের অ্যাকাউন্টে।

০৬ ১৯

রাহুল এ বারও রাজি না হওয়ায়, হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, তিনি আশিসের অনেক টাকা ক্ষতি করে দিয়েছেন। ফলে রাহুলের নামে তিনি পুলিশে অভিযোগ করবেন। এমনকি, রাহুলের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার জন্যও আবেদন করবেন।

০৭ ১৯

আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে ‘আধার এনেবলড পেমেন্ট সিস্টেম’-এর মধ্যে দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চক্র সক্রিয় হয়েছে দেশ জুড়ে। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল প্রতারণার নয়া কৌশল।

০৮ ১৯

কিউআর কোড ব্যবহার করে প্রতারণা সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতারকরা কিউআর কোড পাঠান এই বলে যে, ওই কিউআর কোড স্ক্যান করে পিন নম্বর কিংবা ওটিপি দিলে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়বে। প্রতারকরা অনেক ক্ষেত্রে কিউআর কোডের তলায় ‘রিসিভড অ্যামাউন্ট’ লিখে বিষয়টি গুলিয়ে দিতে চান।

০৯ ১৯

এটা স্মরণে রাখা প্রয়োজন যে, কিউআর কোড স্ক্যান করা হয় টাকা দেওয়ার জন্য। আপনি টাকা পাবেন, সে জন্য নয়। প্রতারকরা এই বিষয়টিই সুচতুর ভাবে গুলিয়ে দিতে চান এই বলে যে, তাঁরা কিউআর কোডের মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। জোর করতে থাকেন, টাকা পাওয়ার জন্য কিউআর কোড স্ক্যান করে পিন নম্বর কিংবা ওটিপি দিতে হবে।

১০ ১৯

কেউ যদি সত্যিই প্রতারকদের পাঠানো কিউআর কোড স্ক্যান করেন এবং তার পর পিন বা ওটিপি দেন, তা হলে তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকেই টাকা কাটা যাবে। তাঁরা কোনও অর্থ পাবেন না।

১১ ১৯

কিউআর কোড পাঠানোর পর তা স্ক্যান করানোর জন্য মুহুর্মুহু ফোন করতে থাকেন প্রতারকরা। ফোনের মাধ্যমে তাঁরা টাকা পেতে গেলে কী কী করতে হবে, তার ধাপগুলো এমন ভাবে বলতে থাকেন যে, ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ব্যক্তি সামান্য ভুল করলেই অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যেতে পারে।

১২ ১৯

এই ধরনের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে গেলে কতগুলি বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। প্রথমটি হল, অচেনা কোনও ব্যক্তিকে ইউপিআই আউডি বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেবেন না।

১৩ ১৯

কোনও ওয়েবসাইট বা অ্যাপ মারফত কোনও জিনিস বিক্রি করতে হলে জিপে বা ফোন পে-র মতো ইউপিআই নির্ভর ব্যবস্থার থেকে কাঁচা টাকায় বেচাকেনা করুন।

১৪ ১৯

কখনওই অর্থ পাওয়ার অশায় কোনও ব্যক্তির পাঠানো কিউআর কোড স্ক্যান করবেন না। ভুল করে স্ক্যান করে ফেললেও পিন বা ওটিপি দেবেন না। সেটা দিলেই লহমায় অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যাবে।

১৫ ১৯

কোনও জিনিস কেনার সময় কিউআর কোড স্ক্যান করলে সঙ্গে সঙ্গেই পিন বা ওটিপি দিয়ে দেবেন না। কিউআর কোড স্ক্যান করার পর আপনার মোবাইলের পর্দায় কী কী তথ্য ভেসে আসছে, তা পরীক্ষা করে দেখুন।

১৬ ১৯

কখনও কোনও কিউআর কোডের উপর আরও একটি কিউআর কোডের স্টিকার সাঁটানো থাকলে স্ক্যান করবেন না। হতেই পারে, উপরের কিউআর কোডটি প্রতারকেরা লাগিয়েছেন।

১৭ ১৯

অনলাইন বা ইউপিআই নির্ভর কিছু কেনার সময় কখনও ওটিপি বা পিন অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করে নেবেন না।

১৮ ১৯

অনলাইনে কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু বিক্রি বা কেনার সময়, সেই ব্যক্তির পরিচয় আগে জানার চেষ্টা করুন। পরিচয় না জেনে কিউআর কোড স্ক্যান করবেন না।

১৯ ১৯

যে নম্বরের সঙ্গে ইউপিআইয়ের সংযোগ রয়েছে, অচেনা কোনও ব্যক্তিকে নিজের সেই ফোন নম্বর দেবেন না।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement