পলা হার্ডের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেন ধনকুবের তথা মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। পলাকে নিয়ে যে তিনি খুবই ‘সিরিয়াস’ তা-ও জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, পলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তিনি খুব গুরুত্ব দিয়েই বিচার করছেন, সময় কাটাচ্ছেন মজা করে।
তিন বছর আগে পলা এবং বিল গেটসের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনার শুরু। এই তিন বছরে বহু বার পলার ঝলক দেখা গিয়েছে বিলের আশপাশে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে টেনিস কোর্ট— বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে দেখা যেত তাঁদের। ক্যামেরাবন্দি হয়েছে সেই সব মুহূর্ত।
কিন্তু তিনি কে, তার সদুত্তর না মেলায় পলাকে ‘রহস্যময়ী’র তকমা দেয় সমাজমাধ্যম। তবে রহস্যের সেই পর্দা সরিয়ে আবছায়া থেকে প্রকট হন বিল-সঙ্গিনী। জানা যায়, ৬৯ বছরের বিলের সঙ্গিনীর নাম পলা। এ বার সেই সম্পর্কে সিলমোহর দিলেন বিল নিজেই।
বিল বলেন, ‘‘আমি ভাগ্যবান যে পলা আমার প্রেমিকা। আমি যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি সম্পর্কটাকে। আমরা অনেক মজা করছি, অলিম্পিকে যাচ্ছি এবং আরও অনেক কিছু করছি।’’
সম্প্রতি প্রকাশিত বিলের আত্মজীবনী ‘সোর্স কোড’-এও পলার কথা লেখা রয়েছে। বিল জানিয়েছিলেন, তার বইয়ের পাণ্ডুলিপির প্রাথমিক পাঠিকা ছিলেন পলা।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রথম পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল দু’জনকে। মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা। মাইক্রোসফ্ট প্রতিষ্ঠাতার ঠিক পাশেই ছিল পলার আসন।
ম্যাচ শেষের পর দু’জন একসঙ্গে হাঁটতেও বেরিয়েছিলেন মেলবোর্ন শহরে। তাঁদের পাশাপাশি হাঁটার ভঙ্গি বলে দিচ্ছিল গাঢ় বন্ধুত্বের কথা। তা নিয়ে আলোচনাও হয়েছিল বিস্তর। এর পরে অনেক বার তাঁদের সময় কাটানোর মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হয়।
পলা বয়সে বিলের থেকে সাত বছরের ছোট। তিনি এখন ৬২। এককালে নামী সংস্থার প্রযুক্তি অধিকর্তা পলা এখন এক জন ইভেন্ট প্ল্যানার। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। অবসরে সামাজিক কাজ করেন। অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন বহু সংস্থাকে।
বিল তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছেন ২০২১ সালে। পলাও তাঁর স্বামীকে হারান ২০২১-এই।
ক্যানসারে আক্রান্ত পলার স্বামী মার্ক হার্ড ছিলেন ওরাকলের প্রাক্তন সিইও। ২০২১ সালে মার্ক মারা যান। যদিও মার্কের মৃত্যুর আগে থেকেই একে অপরকে চিনতেন বিল আর পলা। নিউ ইয়র্কের উঁচু মহলের একই গণ্ডিতে ছিল তাঁদের যাতায়াত। ফলে বহু বার বিল-মেলিন্ডা মুখোমুখি হয়েছেন মার্ক-পলার।
ওরাকলের আগে কম্পিউটার এবং প্রিন্টার প্রস্তুতকারী সংস্থা হিউলেট-প্যাকার্ডের সিইও ছিলেন মার্ক। তবে যৌন হেনস্থার অভিযোগের জেরে ২০১০ সালে তাঁকে ওই সংস্থা ছাড়তে হয়। তবে তার পরও একসঙ্গে ছিলেন মার্ক এবং পলা।
অন্য দিকে, বিলের বিরুদ্ধেও যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার। ২০২১ সালে মেলিন্ডার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের সময়েও বিল বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। এ-হেন বিল বিবাহবিচ্ছেদের বছরখানেক পরেই পলার প্রেমে পড়েন বলে খবর।
পলা আদ্যোপান্ত টেনিস ভক্ত। পলার সঙ্গে বিলকে বহু বার দেখা গিয়েছে গ্যালারিতে। একটা সময় গ্যালারিতে তাঁদের দু’জনকে দেখা যেত আলাদা আলাদা সারিতে, তবে কাছাকাছি। সঙ্গে থাকতেন তাঁদের আলাদা আলাদা বন্ধু।
কিন্তু ক্রমে আসনের দূরত্ব ঘোচে। শেষ কয়েকটি ম্যাচের গ্যালারিতে দু’জনকে পাশাপাশি সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে। বেশ কয়েক বার দু’জনকে একসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গিয়েছে। ২০২৪ সালের অলিম্পিক্সেও একসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁরা।
পলা দুই কন্যার জননী। বিলও তিন সন্তানের পিতা। আবার বিল যেখানে ধনকুবের, সেখানে পলাও সম্পত্তির নিরিখে পিছিয়ে নেই। স্বামীর মৃত্যুর সময় তাঁর সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ৫০ কোটি ডলার। তার পুরোটাই এখন পলার নামে।
পলা এবং বিল— দু’জনেই পুরনো সম্পর্কের বন্ধন মুক্ত। এই বয়সে নির্ঝঞ্ঝাট জীবনে যদি দু’জনে প্রেম খুঁজে পেয়ে থাকেন তবে ক্ষতি কী! বিল-পলার প্রেমের কথা জেনে শুভেচ্ছাই এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।