Justice Abhijit Ganguly

‘আমি আপনাদেরই লোক…’, আইনজীবীদের মান ভাঙাতে আর কী বললেন বিচারপতি?

পুনরায় স্বাভাবিক নিয়মেই শুনানি হবে হাইকোর্টের ১৭ নম্বর ঘরে। কিন্তু কেন এই বয়কটের ডাক দিয়েছিল বার অ্যাসোসিয়েশন? কেনই বা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল বার?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৪১
Share:
০১ ১৭

অবশেষে যবনিকা পতন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিল বার অ্যাসোসিয়েশন। পুনরায় স্বাভাবিক নিয়মেই শুনানি হবে হাইকোর্টের ১৭ নম্বর ঘরে। কিন্তু কেন এই বয়কটের ডাক দিয়েছিল বার? কেনই বা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল বার অ্যাসোসিয়েশন?

০২ ১৭

প্রসঙ্গত এই ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। বিচারপতি এক আইনজীবীকে তাঁর আচরণের জন্য শেরিফের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিলেও আইনজীবীদের একাংশ ক্ষোভপ্রকাশ করেন এবং বিচারপতির এজলাস বয়কট করবেন বলে জানান।

Advertisement
০৩ ১৭

কলকাতা হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, যত দিন না বিচারপতি এই ঘটনার জন্য ওই আইনজীবী এবং বারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছেন, তত দিন এই প্রতিবাদ চলবে।

০৪ ১৭

এরপর মঙ্গল এবং বুধবার এজলাসে বসেননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দু’দিন পরে বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা হাই কোর্টের এজলাসে বসলেন। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যেই এজলাস ছেড়ে বেরিয়েও গেলেন তিনি।

০৫ ১৭

বৃহস্পতিবার সকালে নিত্যদিনের মতোই শুরু হয়েছিল আদালতের কাজ। হাই কোর্টের ১৭ নম্বর কোর্টে বিচারপতি তাঁর এজলাসে এসে বসেন ঠিক ১১টা বেজে ৩৩ মিনিটে। নিয়ম মেনেই সকালবেলা এজলাসে এলেন বিচারপতি। এজলাস শুরুও হল।

০৬ ১৭

তবে তার ২৪ মিনিট পরেই বেলা ১১টা বেজে ৫৭ মিনিটে উঠে যান তিনি। সাম্প্রতিক অতীতে এত দ্রুত এজলাস ছেড়ে উঠতে দেখা যায়নি বিচারপতিকে। এজলাসে ১১টি মামলার শুনানি হওয়ার কথা। হল মাত্র পাঁচটি। কারণ, আইনজীবীরা বয়কট করেছেন তাঁর এজলাস।

০৭ ১৭

তাঁর এজলাসে একের পর এক মামলার শুনানি হতে থাকে। ভিড়ে ভরে থাকে এজলাস কক্ষ। বৃহস্পতিবার অবশ্য সেই ভিড় ছিল কিছুটা কম। আইনজীবীদের একাংশ উপস্থিত ছিলেন না বিচারপতির এজলাসে। গত সোমবার বিচারপতির একটি নির্দেশ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল আইনজীবীদের একাংশ।

০৮ ১৭

বৃহস্পতিবার অবশ্য বিচারপতির এজলাসে কিছু আইনজীবী ছিলেন। তালিকা অনুযায়ী প্রায় ১১টি মামলা শুনানির জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে বহু মামলারই আইনজীবী উপস্থিত হননি। ২৪ মিনিটে মোট ৫টি মামলার শুনানি হয়। এর মধ্যে দু’টি মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী। বাকি তিনটি মামলায় মামলাকারী নিজেই নিজের হয়ে বিচারপতির কাছে সওয়াল করেন।

০৯ ১৭

এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার যদি নির্দিষ্ট মামলাগুলির দু’পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকেন, তবে এক পক্ষের সওয়াল শুনে তিনি কোনও নির্দেশ দেবেন না।

১০ ১৭

ঠিক ১১:৫৭ মিনিটে বিচারপতি এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, দুপুর সাড়ে ১২টায় কয়েকটি মামলা ওঠার কথা রয়েছে। সেই সময় আবার তিনি এজলাসে আসবেন।

১১ ১৭

এরপরেই বিচারপতি জানান, আইনজীবীদের একাংশ তাঁর এজলাসে আসেননি। তাই তিনিই যাবেন আইনজীবীদের কাছে। তাঁদের সংগঠনের অফিসে গিয়ে এজলাসে আসার অনুরোধ জানাবেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানালেন তিনি।

১২ ১৭

পরে সাড়ে ১২টায় এজলাসে এসেই বিচারপতি জানান, তিনি আইনজীবীদের কাছে গিয়ে এজলাসে উপস্থিত থাকার অনুরোধ করবেন। গত সোমবার বিচারপতির একটি নির্দেশ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল আইনজীবীদের একাংশ। তাঁর এজলাস বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীদের সংগঠন বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক।

১৩ ১৭

নিজের এজলাসে বসেই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি দুপুর দেড়টায় বার অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে যাব। আইনজীবীদের কাছে অনুরোধ করব। তাঁরা যেন শুনানিতে অংশ নেন।’’

১৪ ১৭

তিনি আরও বলেন, ‘‘বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসুমল্লিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি দুপুর দেড়টায় বারে যাব। জানার চেষ্টা করব, কেন আমার বিরুদ্ধে এত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে বার।’’

১৫ ১৭

ঘড়ির কাটায় দুপুর দেড়টা। কলকাতা হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের ২ নম্বর কোর্টে যান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে যান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বার অ্যাসোসিয়েশনের ঘরে গিয়ে মাইকে বিচারপতি ঘোষণা করেন তাঁর বক্তব্য। তবে তার আগে আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা যায় তাঁকে। হাই কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী অশোককুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোলাকুলিও করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

১৬ ১৭

বিচারপতি বলেন, ‘‘আমি অনুরোধ করছি কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকলে তা বাদ দিন। আমি আপনাদেরই লোক। আমি এই ‘বার’ থেকেই উঠে এসেছি। আপনাদের সঙ্গে কোনও খারাপ সম্পর্ক থাকতে পারে না। আইনজীবীদের প্রতি আমার সম্মান এবং ভালবাসা রয়েছে। যা হয়েছে তা কেউ খারাপ ভাবে নেবেন না। যা হয়েছে তা ভুলে গিয়ে আবার চলুন একসঙ্গে কাজ করি।’’

১৭ ১৭

আইনজীবীদের মান ভাঙল। এরপরেই এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় বার অ্যাসোসিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement