বিশ্বের এই সব জায়গায় মৃত্যু নিষিদ্ধ!

কথায় আছে ‘জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে’। কিন্তু বিধাতা চাইলে কী হবে মৃত্যুর প্রবেশ এখানে নিষিদ্ধ। যেন এখানকার অলিখিত ট্যাগ লাইন, ‘মরনা মানা হ্যয়’। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যিই বিশ্বে এমনও বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে, যেখানে মৃত্যু ‘নিষিদ্ধ’।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ১২:২৩
Share:
০১ ০৮

ইতসুকুশিমা, জাপান: <br> ইতসুকুশিমার ইতিহাসও অনেকটা ডেলসের মতোই। পবিত্র স্থান বলে মান্য করা হয় জাপানের ইতসুকুশিমাকেও। ১৫৫৫ সালের <br> মিয়াজিমা যুদ্ধের পর থেকেই এমন নিয়মের শুরু। এই যুদ্ধেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। <br> জয়ী রাজার নির্দেশ ছিল সমস্ত মৃতদেহ নিয়ে যেতে হবে ইতসুকুশিমার বাইরে। <br> পরাজিত সেনাদের দিয়েই এই কাজ করিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রক্তে ভেজা মাটিও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। <br> পরিষ্কার করা হয়েছিল প্রতিটি বাড়ি-ঘরও। এরপর ১৮৭৮ থেকে মৃত্যু সম্পূর্ণ ভাবে <br> নিষিদ্ধ হয়ে যায় জাপানের ইতসুকুশিমায়। অসুস্থ বা মৃত্যু পথযাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয় ইতসুকুশিমার বাইরে।

০২ ০৮

লংইয়ারবেন, নরওয়ে: <br> মৃত্যু ‘নিষিদ্ধ’ এখানেও। তবে ভারি অদ্ভুত কারণে। সম্পূর্ণ বরফাবৃত নরওয়ের এই এলাকায় কোনও মৃতদেহই <br> ডিকম্পোজ হয় না। বহু বছর আগে কবর দেওয়া মৃতদেহও থাকে <br> এক্কেবারে অবিকৃত। সম্প্রতি, ১৯১৭ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জায় মৃত এক ব্যক্তির ত্বকের কোষ থেকে জীবিত ইনফ্লুয়েঞ্জার <br> জীবাণু পেয়েছে বিজ্ঞানিরা। এই কারণেই লংইয়ারবেন-এ মৃতদেহ কবর দেওয়ার মতো আর জায়গাই নেই। ফলে এই <br> শহরে মৃত্যু ‘নিষিদ্ধ’ করতে বাধ্য হয়েছে এখানকার প্রশাসন। অসুস্থ, বয়স্ক মানুষদের <br> তাই মৃত্যুর আগেই নরওয়ের অন্য কোনও শহরে পাঠিয়ে দেওয়াটাই এখানকার রীতি।

Advertisement
০৩ ০৮

লনজারঁ, স্পেন: <br> কবরস্থান নেই। তাই মৃত্যুও ‘নিষিদ্ধ’ লনজারনে। এই মুহূর্তে ৪০০০-এর কাছাকাছি মানুষের বসবাস লনজারনের আন্দালুসিয়ান গ্রামে। <br> কিন্তু মৃতদেহ কবর দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই ছোট্ট এই শহরে। তাই রীতিমতো <br> আইন করে মৃত্যু ‘নিষিদ্ধ’ করা হয়েছে এখানে। তবে খুব দ্রুত নতুন কবরস্থান তৈরির করা ভাবছে লানজারঁ প্রশাসন।

০৪ ০৮

সেলিয়া, ইতালি: <br> আইন প্রণয়ন করে মৃত্যু ‘নিষিদ্ধ’ করা হয়েছে সেলিয়াতেও। এই আইনে মৃত্যু নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি যদি কেউ বয়স্ক ব্যক্তির <br> শরীরের যত্ন না রাখেন তাঁর জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে। এই অঞ্চলের জনসংখ্যা <br> গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় মেয়র ডেভিড জিচিনেলা এই আইন প্রণয়ন করেছেন। <br> ষাটের দশকে সেলিয়ার জনসংখ্যা ছিল ২০০০-এর কাছাকাছি। বর্তমানে এই শহরে বসবাস করেন মাত্র ৫৬০ জন। তাঁদের <br> বেশির ভাগেরই বয়স ৭০-এর কোঠায়। এ ভাবে চলতে থাকলে দ্রুত জনশূন্য হয়ে যাবে সেলিয়া। তাই এই <br> পরিস্থিতি রোধ করতেই নাকি এমন আইন প্রণয়ন করেছেন ডেভিড।

০৫ ০৮

ফ্যালসিয়ানো দেল ম্যাসিকো, ইতালি: <br> দক্ষিণ ইতালির ছোট্ট শহর ফ্যালসিয়ানো দেল ম্যাসিকো। মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা নেই এখানে। আর সেই <br> কারণেই মৃত্যুও নিষিদ্ধ এখানে। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে পাশের শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। <br> সেখানে মৃত্যু হলে সেই শহরেই কবর দেওয়া হয় তাঁকে।

০৬ ০৮

সারপুরেনক্স, ফ্রান্স: <br> সারপুরেনক্সেও সমস্যা কবরস্থানের সীমিত জায়গা নিয়ে। এই সমস্যা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। কিন্তু শহর প্রসারিত করার <br> আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল এখানকার আদালত। ফলে মৃত্যুই নিষিদ্ধ হয়ে যায় সারপুরেনক্সে।

০৭ ০৮

বিরিটিবা-মিরিম, ব্রাজিল: <br> ২০০৫ সালে একটি পাবলিক বিল আনে বিরিটিবা প্রশাসন। তাতে বলা হয়, স্থানীয় কবরস্থান পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় <br> এখানে আর কোনও মৃতদেহ কবর দেওয়া সম্ভব নয়। অন্য দিকে এই <br> গ্রামটি ঘিরে রয়েছে ব্রাজিলের রেন ফরেস্ট। কবরস্থান সম্প্রসারণের জন্য যা নষ্ট করা সম্ভব নয়। ফলে আর <br> কোনও মৃতদেহ কবর দেওয়া যাবে না বিরিটিবা-মিরিম গ্রামে। ফলে এখানে মৃত্যুও নিষিদ্ধ।

০৮ ০৮

লে লাভান্ডু, ফ্রান্স: <br> একই সমস্যা লে লাভান্ডুতেও। এর কবরস্থানটি রয়েছে সমুদ্রের একেবারে পাশেই। তাই কবরস্থানটি পূর্ণ হয়ে গেলেও <br> তা প্রসারণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। <br> আইন জারি করে তাই মৃত্যু নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই শহরে। তবে যদি কেউ শহরে মারাও যান <br> তাঁকে অন্য কোথাও গিয়ে সমাধিস্থ করাই নিয়ম এখানকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement