স্বনামধন্য ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পীর কন্যা। নিজেও সঙ্গীতসাধনা করছেন শৈশব থেকে। অনায়াস গতি সঙ্গীতের সব ধারায়। তিনি দুর্গা যশরাজ। নয়ের দশকে অন্নু কপূরের সঙ্গে তাঁর সঞ্চালনায় জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিল টেলিভিশন শো ‘অন্ত্যক্ষরী’।
দুর্গার জন্ম ১৯৬৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। তাঁর বাবা পণ্ডিত যশরাজ ধ্রুপদী সঙ্গীতের যশস্বী শিল্পী। মা মধুরা প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ভি শান্তারামের মেয়ে। মধুরা নিজেও তথ্যচিত্র, বাচ্চাদের নাটক পরিচালনা করেছেন। কাজ করেছেন টেলিভিশন সিরিজেও।
প্রথমে কলকাতায় থাকলেও পরে যশরাজ ও মধুরা চলে যান সাবেক বম্বে, আজকের মুম্বইতে। সেখানেই বড় হয়েছেন দুর্গা এবং তাঁর দাদা।
বাবার কাছেই সঙ্গীতের তালিম। মাত্র সাত বছর বয়সে ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে দুর্গার পথ চলা শুরু। গানের পাশাপাশি অভিনয়ও করেন তিনি।
তাঁর প্রথম ছবি কেতন আনন্দের পরিচালনায় ‘আ জা মেরি জান’ মুক্তি পায় ১৯৯৩ সালে। দুর্গা অভিনয় করেছেন ‘মহাভারত’, ‘চন্দ্রকান্তা’-র মতো জনপ্রিয় পৌরাণিক টেলিভিশন শোয়েও।
তাঁর কেরিয়ারের প্রায় সবটাই এগিয়েছে বিয়ের পরে। মাত্র আঠেরো বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল দুর্গার। বিয়ে করেছিলেন পরিবারের পছন্দ করা পাত্রকে। কিন্তু সেই বিয়ে স্থায়ী হল মাত্র তিন বছর। একমাত্র কন্যা অবনীকে নিয়ে দুর্গা ফিরে এলেন বাবা মায়ের কাছে।
বিয়ে ভাঙার পরে মানসিক অস্থিরতা কাটাতে সাহায্য করেছিল বাবা মায়ের মানসিক সমর্থন। পরবর্তী কালে নিজেই সে কথা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন দুর্গা।
বাবা, পণ্ডিত যশরাজের সঙ্গে মিলে দুর্গা ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ইন্ডিয়ান মিউজিক অ্যাকাডেমি’ বা আইএমএ। এই সংস্থার তরফে ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত চর্চার পাশাপাশি পুরস্কৃত করা হয় সঙ্গীতশিল্পীদের। সাহায্য করা হয় অসুস্থ শিল্পীদেরও।
নয়ের দশকের গোড়ায় ভারতে তখন সবে প্রসারিত হচ্ছে বেসরকারি উপগ্রহ চ্যানেলের ডানা। সে সময় তুমুল জনপ্রিয় শো ছিল ‘অন্ত্যক্ষরী’। সাধারণ ঘরোয়া একটি খেলাকে পেশ করা হয়েছিল প্রতিযোগিতা ও বাণিজ্যিক মোড়কে। শো-য়ের অন্যতম মূল আকর্ষণ ছিল অন্নু কপূর ও দুর্গা যশরাজের যৌথ সঞ্চালনা। পরে এই ধরনের শো অন্যান্য চ্য়ানেলেও সম্প্রচারিত হয়েছিল।
তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকতে থাকতেই এই শো ছেড়ে দেন দুর্গা। তাঁর নিজের সংস্থা পরিচালনায় মন দেবেন বলে।
দুর্গা যশরাজ এখন মূলত কনটেন্ট প্রোডিউসার। রেডিয়ো, দূরদর্শন, মোবাইল এবং অনলাইনে নানা রকম কাজ করছেন তিনি।
যশস্বী বাবার ছায়ায় মিলিয়ে না গিয়ে দুর্গা যশরাজ তাঁর আলাদা বৃত্ত ও পরিচয় গড়ে তুলেছেন। তাঁকে ব্যবসার কাজে সাহায্য করেন কন্যা অবনীও।