Father Ernetti’s Chronovisor

সময়যানে জিশুর ক্রুশবিদ্ধকালে পৌঁছে ছবিও তুলে আনেন! ভ্যাটিকানের এক বিতর্কিত কাহিনি

সময়যানে চেপে ভিন্ন কালে পাড়ি দেওয়ার একাধিক গল্প প্রায়ই শোনা যায়। সেগুলির সত্যাসত্য সব সময়েই বিতর্কিত। এ রকমই কাহিনি একটি ফাদার আর্নেটি এবং তাঁর ক্রোনোভাইজ়র ‘সময়যান’-এর গল্প।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩২
Share:
০১ ১৮

বর্তমান থেকে অতীতে বা ভবিষ্যতে যাতায়াত করার জন্য ‘সময়যান’ (টাইমমেশিন)-এর ধারণা পৃথিবীর বুকে বহু যুগ ধরে রয়েছে। সময়ের আগে বা পিছনে যাওয়ার জন্য সময়যান-এর ধারণা বহু বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক এবং ইতিহাসবিদদের লেখনীতেও বার বার উঠে এসেছে। অনেক বিজ্ঞানী নিজেদের সারা জীবন সময়যান তৈরির ব্যর্থ চেষ্টায় কাটিয়ে দিয়েছেন। আবার এমন কথাও প্রচলিত রয়েছে যে, অনেক বিজ্ঞানীই নাকি ‘সময়যান’ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু কোনও অজানা কারণে তা লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা হয়েছে।

০২ ১৮

সময়যানে চেপে ভিন্ন কালে পাড়ি দেওয়ার একাধিক গল্প রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি নিয়ে বহু আলোচনা এবং তাদের সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা হয়েছে। এগুলির মধ্যে অন্যতম ভ্যাটিকানের এক পোপের সময়ের চাকা ঘুরিয়ে পিছনে যাওয়ার গল্প।

Advertisement
০৩ ১৮

কথিত আছে, ভ্যাটিকান প্রাসাদে নাকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি লুকনো রয়েছে। যা প্রকাশ্যে এলে ইতিহাস বদলে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কেউ কেউ বলেন মানবতার উপকারে লাগবে এমন সব নথিও নাকি সেই প্রাসাদে লুকোনো রয়েছে।

০৪ ১৮

লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে, ভ্যাটিকান প্রাসাদের মধ্যে একটি যন্ত্র রয়েছে যাকে ‘ক্রোনোভাইজ়র’ বলা হয়। এবং এটিকে একটি সময়যান বা ‘টাইম মেশিন’ বলে মনে করা হয়।

০৫ ১৮

পিটার ক্রাসা নামে এক জন ইতিহাসবিদ ‘ক্রোনোভাইজ়র’ এবং এর সৃষ্টির পিছনের কিছু রহস্য ব্যাখ্যা করে একটি বই লিখেছিলেন। এই বইয়ের নাম ছিল ‘ফাদার আর্নেটি'জ ক্রোনোভাইজ়র: দ্য ক্রিয়েশন অ্যান্ড ডিজ়অ্যাপিয়ারেন্স অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস ফার্স্ট টাইম মেশিন’।

০৬ ১৮

ওই বই অনুযায়ী, ১৯৫০-এর দশকে ভ্যাটিকানের ফাদার পেলেগ্রিনো আর্নেটি এবং বিখ্যাত পদার্থবিদ এনরিকো ফার্মি, ওয়ের্নহার ফন ব্রাউন-সহ ১২ জন বিজ্ঞানী একটি সময়যান তৈরি করেন বলে দাবি করা হয়েছে।

০৭ ১৮

১৯৭০-এর দশকে, ফাদার আর্নেটি সারা বিশ্বের কাছে ক্রোনোভাইজ়রের অস্তিত্বের কথা জানান। তিনি দাবি করেছিলেন, ক্রনোভাইজ়র তাঁর চোখ এবং কান হিসাবে কাজ করে। তিনি এই ক্রোনোভাইজ়রের সাহায্যে জিশু খ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ হতে দেখেছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন।

০৮ ১৮

পাশাপাশি, তিনি এই যন্ত্রের মাধ্যমে আরও বেশ কয়েকটি ইতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন।

০৯ ১৮

ফাদার আর্নেটির করা দাবি সেই সময়ে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। ১৯৭২ সালের ২ মে জনপ্রিয় ইতালীয় সংবাদপত্র ‘লা দোমিনিকা দেল করিয়ের’-এর প্রথম পৃষ্ঠায় আর্নেটি এবং তাঁর ক্রোনোভাইজ়র যন্ত্রকে নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।

১০ ১৮

ওই সংবাদপত্রে জিশুর একটি ছবিও ছাপা হয়। দাবি করা হয়েছিল, ওই ছবি জিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার সময়কার ছবি, যা ক্রোনোভাইজ়র যন্ত্রে ধরা পড়েছিল।

১১ ১৮

অনেকে সেই ছবিটিকে জিশু খ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার একটি সস্তা চিত্রকর্ম বলে সমালোচনা করেছিলেন।

১২ ১৮

অন্য একটি পত্রিকা দাবি করে যে, ওই ছবিটি আসলে কোলেভালেঞ্জা শহরের একটি পোস্টকার্ডের ছবি।

১৩ ১৮

ফাদার আর্নেটি দাবি করেছিলেন, তিনি অতীতে গিয়ে জিশুর শেষ নৈশভোজ বা বিখ্যাত ‘লাস্ট সাপার’-এরও সাক্ষী হয়েছিলেন এবং একটি ছবি তুলেছিলেন যা তিনি স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে রেখে দিয়েছেন।

১৪ ১৮

প্রাথমিক ভাবে, মানুষ মনে করতে শুরু করে যে, এক জন উন্মাদ ধর্মযাজক বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ১৯৮৮ সালে ভ্যাটিকানের তরফে নির্দেশ জারি করা হয়, কেউ যদি কখনও এই ধরনের কোনও যন্ত্র ব্যবহার করেন, তা হলে তাঁকে বহিষ্কার করা হবে।

১৫ ১৮

ভ্যাটিকানের এই নির্দেশের পর মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, নিশ্চয়ই ফাদার আর্নেটির দাবি সত্য। এবং ভ্যাটিকানের তরফে সেই সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

১৬ ১৮

১৯৯৪ সালে ফাদার আর্নেটির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে একটি খোলা চিঠি লিখে তিনি আবার দাবি করেছিলেন যে, তাঁর যন্ত্রটি আসল এবং ভ্যাটিকানে সেই যন্ত্রকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

১৭ ১৮

ফাদার আর্নেটি আরও দাবি করেন, পোপ দ্বাদশ পায়াস নাকি বিশেষ কয়েকটি কারণে ভ্যাটিকানের বাকি যাজকদের ওই যন্ত্র সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ্যে আনতে বারণ করেছিলেন।

১৮ ১৮

পরবর্তী সময়ে অনেক ইতিহাসবিদ ফাদার আর্নেটির করা অনেক দাবিকে ভ্রান্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন। তবে, ক্রাসা তাঁর লেখা বইয়ে উল্লেখ করেছিলেন, যদি আর্নেটি মিথ্যা কথাই বলে থাকেন তা হলে কেন পোপরা তাঁর দাবিকে এত গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন কখনও ভ্যাটিকানের পোপদের কেউ জোর গলায় সময়যানের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement