অভিনয় নিয়েই কেরিয়ার গড়বেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। স্বপ্নপূরণের জন্য বেশি পারিশ্রমিকের চাকরি ছাড়তেও পিছপা হননি বলি তারকারা। বর্তমানে অভিনয়ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছেন তাঁরা। সেই তালিকায় রয়েছে ভিকি কৌশল, সোনাক্ষী সিন্হা এবং ভূমি পেডনেকরের মতো বলি তারকাদের নাম।
২০১৫ সালে ‘মাসান’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ভিকি কৌশল। বর্তমানে তাঁর কেরিয়ারের ঝুলিতে রয়েছে ‘স্যাম বাহাদুর’, ‘সর্দার উধম’, ‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় ছবি।
মুম্বইয়ের একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়েন ভিকি। কিন্তু স্নাতক হওয়ার পর আর বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতে চাননি তিনি। একাধিক সংস্থার তরফে নজরকাড়া বেতনের চাকরির সুযোগও পান ভিকি। কিন্তু অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার তৈরি করতে চান বলে সব সুযোগই ফিরিয়ে দেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’ ছবিতে বলি পরিচালক অনুরাগ কশ্যপের সহায়ক হিসাবে কাজ করেন ভিকি। তার পর কয়েকটি হিন্দি ছবিতে ছোটখাটো চরিত্রেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
দিল্লির একটি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ে স্নাতক হন বলি নায়িকা তাপসী পন্নু। কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে চাকরিতে যোগ দেন তিনি।
কানাঘুষো শোনা যায়, আইওএস-এর জন্য একটি অ্যাপও নির্মাণ করেন তাপসী। তবে তাঁর মন ছিল অভিনয়ের প্রতি। চাকরির পাশাপাশি মডেলিং করতে শুরু করেন তিনি। ২০০৮ সালে একটি জনপ্রিয় ট্যালেন্ট শোয়ে মডেল হিসাবে নজর কাড়েন তাপসী।
নামকরা বহু সংস্থার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করতে দেখা যায় তাপসীকে। সেখান থেকেই বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয় তাঁর। অভিনয় করবেন বলে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ২০১০ সালে ‘ঝুমন্ডি নাদাম’ নামের একটি তেলুগু ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান তাপসী।
তেলুগু ভাষার ছবির পাশাপাশি তামিল এবং হিন্দি ভাষার ছবিতে অভিনয় করেন তাপসী। ২০১৩ সালে ডেভিড ধওয়ান পরিচালিত ‘চশমে বদ্দূর’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পদার্পণ করেন তিনি।
মুম্বইয়ের একটি কলেজ থেকে এমবিএ করেন বলি অভিনেতা জন আব্রাহম। কিছু দিন মিডিয়া প্ল্যানার হিসাবেও কাজ করেন তিনি। কিন্তু স্বপ্ন বুনেছিলেন অভিনেতা হওয়ার। তাই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি।
মডেল হিসাবে কেরিয়ার তৈরি করে কম সময়ের মধ্যেই পরিচিতি গড়ে তোলেন জন। তার পর একাধিক মিউজ়িক ভিডিয়োয় অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। ২০০৩ সালে ‘জিস্ম’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রাখেন জন।
বাবা বলিউডের নামকরা অভিনেতা। তাই শৈশব থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন শত্রুঘ্ন সিন্হার কন্যা সোনাক্ষী সিন্হা। মুম্বইয়ের একটি কলেজ থেকে ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর পোশাকশিল্পী হিসাবে কাজ করা শুরু করেন সোনাক্ষী। ‘মেরা দিল লেকে দেখো’র মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে পোশাকশিল্পী হিসাবেও কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
তবে অভিনয় করবেন বলে চাকরি ছেড়ে দেন সোনাক্ষী। ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দবং’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রাখেন তিনি। তাঁর কেরিয়ারের প্রথম ছবির নায়ক ছিলেন বলিউডের ‘ভাইজান’ সলমন খান।
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে চলে যান বলি অভিনেতা রণদীপ হুডা। সেখানকার কলেজ থেকে মার্কেটিং নিয়ে পড়ে স্নাতক হন তিনি।
পরে মানবসম্পদ এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন রণদীপ। সেই সময় স্থানীয় রেস্তরাঁয় কাজ করার পাশাপাশি গাড়িও চালাতেন রণদীপ। তার পর ভারতে ফিরে আসেন তিনি।
দেশে ফিরে একটি বিমান সংস্থার মার্কেটিং বিভাগে কাজ শুরু করেন রণদীপ। কাজের পাশাপাশি মডেলিং এবং নাটকে অভিনয়ও করতেন তিনি। বড় পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পেলে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মনসুন ওয়েডিং’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রাখেন রণদীপ।
শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল পরিণীতি চোপড়ার। অভিনয়ের সুযোগ না পেয়ে শেষে যশরাজ ফিল্মস প্রযোজনা সংস্থায় মার্কেটিং বিভাগে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। তার পর পদোন্নতি হয়ে সেই সংস্থার পিআর হয়ে যান তিনি।
অভিনয়জগতের এত কাছাকাছি থেকেও অভিনয় করতে পারছেন না ভেবে চাকরি ছেড়ে অভিনয় শেখার জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন পরিণীতি। ২০১১ সালে ‘লেডিস ভার্সেস রিকি বহল’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। পরের বছর ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইশকজ়াদে’ ছবির হাত ধরে পাকাপাকি ভাবে বলিউডে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, যশরাজ ফিল্মস প্রযোজনা সংস্থায় কর্মরত ছিলেন বলিপাড়ার আরও এক অভিনেত্রী। অভিনয় করবেন বলে সেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। নায়িকার নাম ভূমি পেডনেকর।
ছ’বছর ধরে যশরাজ ফিল্মসের সহকারী কাস্টিং ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেন ভূমি। তার পর সেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দম লগাকে হাইশা’ নামের ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।