Hobbits

হবিটরা নাকি আজও আছে! তারা কারা? কোথায়ই বা পাওয়া গেল খোঁজ?

চমক-ঠমকহীন সরল জীবন। তবে বীরত্ব ফলানোর অকারণ অভ্যাস না থাকলেও হবিটদের গোষ্ঠীবোধ জোরালো। বিপদ এলে জোট বাঁধতে দেরি করে না এরা। তখন বুদ্ধি খাটিয়ে পাল্টা লড়াই করতেও এরা প্রস্তুত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:০৭
Share:
০১ ১৯

সে এক রূপকথার মতো দেশ। ছোটবেলায় পড়া বইয়ের পাতায় যার খোঁজ মেলে, হুবহু তেমনটি। এ দেশে ঘরবাড়ি সব মাটির তলায়। কিন্তু ভারী মিষ্টি তাদের আদল। ‘মিষ্টি’ ঘরের ভিতরের বাসিন্দারাও। তবে কিছুটা অদ্ভুতও।

০২ ১৯

মনে প্যাঁচ নেই মোটেই। দল বেঁধে থাকে। কাজের সময় কাজ করে। খাওয়ার সময় খায়। কাজ মিটলে চলে আড্ডা-ফূর্তি। তবে ফূর্তি করতে গিয়ে দুঃসাহস দেখানো স্বভাব নয় তাদের।

Advertisement
০৩ ১৯

রহস্য-রোমাঞ্চ থেকে শতহস্ত দূরে থাকে। এড়িয়ে চলে অশান্তি, ঝঞ্ঝাট, গোলমাল। আসলে শরীর জুড়ে আলিস্যি এদের । দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। ঘুমোতেও যায় দেরিতে।

০৪ ১৯

তবে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে বড্ড দরাজদিল। দিনে ছ’বার থালা সাজিয়ে দিলেও মুখে না নেই। ডান হাতের পুজোয় তাদের সোজাসাপটা ‘যত পাই, তত চাই’ নীতি।

০৫ ১৯

সোজা কথায়, চমক-ঠমকহীন সরল জীবন। তবে বীরত্ব ফলানোর অকারণ অভ্যাস না থাকলেও এদের গোষ্ঠীবোধ জোরালো। বিপদ এলে জোট বাঁধতে দেরি করে না এরা। তখন বুদ্ধি খাটিয়ে পাল্টা লড়াই করতেও এরা প্রস্তুত। নিজেদের ভূমিকে বাঁচাতে প্রয়োজনে জান-প্রাণ লড়িয়ে দিতেও দু’বার ভাবে না।

০৬ ১৯

চেহারা মানুষের মতোই। শুধু সাধারণ মানুষের যা উচ্চতা, এরা দৈর্ঘ্যে তার অর্ধেকেরও কম। গায়ের রং লালচে ফরসা। চোখ সামান্য গোল গোল। মাথার সমান দীর্ঘ কানের আগা দুটো সুচালো। আর মাথায় গাঢ় বাদামি রঙের ঘূর্ণি পাকানো চুল।

০৭ ১৯

উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরতে ভালবাসে। পছন্দের রং হলুদ কিংবা সবুজ। তবে পোশাক যা-ই হোক, তার সঙ্গে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সারা বছরই থাকে গরম ওয়েস্টকোট। আর খুব সেজেগুজেও এরা থাকে খালি পায়ে।

০৮ ১৯

জুতো-মোজা পরে না এরা। কারণ এদের পায়ের নীচে থাকে জুতোর মতোই শক্ত চামড়ার আস্তরণ। পায়ের পাতার উপরে আছে ঘন রোমের পরত। মানুষের থেকে এখানেই এদের মূল পার্থক্য।

০৯ ১৯

নাম ‘হবিট’। এদের কথা মানুষ প্রথম জানতে পারেন ইংরেজ লেখক জেআরআর টলকিনের উপন্যাসত্রয়ী ‘লর্ড অফ দ্য রিংস’ এবং তার প্রাক্‌ভাস ‘দ্য হবিট’-এ। পরে হলিউডে একটি ব্লকবাস্টার ফিল্ম সিরিজ়ও হয় এদের নিয়ে। হ্যারি পটারের মতোই বিখ্যাত হয়েছিল সেই সিরিজ়।

১০ ১৯

সিনেমায় হবিটদের দেখে তাদের প্রেমে পড়ে যান মানুষ। তার কারণও ছিল। হবিটদের সব কিছুই একটু অন্য রকম। নিজের জন্মদিনে এরা উপহার পায় না। বরং উপহার বিলোয়।

১১ ১৯

আবার এদের বছরের হিসাবও অন্য রকম। এদের ক্যালেন্ডারের প্রতি মাসেই রয়েছে ৩০টি করে দিন। তবে এমনও কিছু বিশেষ দিন রয়েছে, যা কোনও মাসের আওতায় পড়ে না। নতুন বছরের প্রথম দিন এবং পুরনো বছরের শেষ দিনটি কোনও মাসেই পড়ে না। এ ছাড়াও গোটা বছরে তিনটি অতিরিক্ত মাসহীন দিন রয়েছে, যা ঋতুর সময় বিচার করে সময় মতো জুড়ে দেওয়া হয়।

১২ ১৯

পুরনো জিনিসের প্রতি বড্ড মায়া হবিটদের। সে জিনিস কোনও কাজে না লাগলেও তারা কাছছাড়া করতে চায় না। ফেলে দিতেও চায় না। এই ধরনের জিনিসের একটা নামও রয়েছে হবিটদের দুনিয়ায়। ‘মাথম’। হবিটেরা মাথম উপহার হিসাবে দেয়। কিন্তু কখনও-সখনও দেখা যায়, এই মাথম আবার ঘুরেফিরে চলে এসেছে তার আসল মালিকের কাছেই। তেমন যখন হয়, তখনকার মাথমটির মালিক তাকে দিয়ে দেয় হবিটদের মাথম জাদুঘরে।

১৩ ১৯

অবিশ্বাসীরা বলতে পারেন, এ সব তো ফ্যান্টাসি লেখক টলকিনের কল্পনার কথা। কিন্তু ইতিহাস বলছে, হবিটদের অস্তিত্ব সত্যিই ছিল এই পৃথিবীতে। বিজ্ঞানীরা তাদের কঙ্কালও খুঁজে পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সঙ্গে এ-ও জানিয়েছিলেন, ১২ হাজার বছর আগেই নির্বংশ হয়ে গিয়েছিল হবিটেরা। তবে তার আগে পৃথিবীতে তারা টিকেছিল প্রায় ৫০ হাজার বছর।

১৪ ১৯

যদিও সম্প্রতি সেই ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল বলে দাবি করেছেন এক নৃতত্ত্ববিদ গ্রেগরি ফোর্থ। ‘সায়েন্টিস্ট’ নামের একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় এ ব্যাপারে একটি নিজস্ব মতামত মূলক লেখও লিখেছিলেন তিনি। যেখানে ফোর্থ দাবি করেছেন, হবিটদের বাস্তব অস্তিত্ব ছিল এবং তারা আজও আছে। ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস দ্বীপে নাকি তাদের বসবাস।

১৫ ১৯

কিসের ভিত্তিতে এই দাবি করেছেন তিনি? ফোর্থ বলছেন, ইন্দোনেশিয়ার ওই অঞ্চলের বহু প্রত্যক্ষদর্শীই জানিয়েছেন, তাঁরা স্বচক্ষে দেখেছেন বিশেষ ধরনের বেঁটেখাটো অদ্ভুতদর্শন মানুষদের। তাদের চোখ গোলগোল। কান বড় এবং সুচালো। গায়ের রং পরিষ্কার। তবে হাবভাব কিছুটা প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষের মতো।

১৬ ১৯

ফোর্থ জানিয়েছেন, এমন অন্তত ৩০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেছেন তিনি। তাঁর মনে হয়েছে, লোকালয়ে এমন অদ্ভুতদর্শন জীবের অস্তিত্বের কথা জেনে কিছুটা ভয়ই পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

১৭ ১৯

ইন্দোনেশিয়ার ওই অঞ্চলে ৫০ হাজার বছর আগে খর্বকায় এক প্রকার মানুষ জাতীয় প্রাণীর যে অস্তিত্ব ছিল, সে কথা কিন্তু বেশ কিছু নৃতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে জানা যায়। ওই অঞ্চলের লং বুয়া নামের এক চুনাপাথরের গুহায় ন’টি এমন কঙ্কালর সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নবিদেরা। এদের ‘হোমো ফ্লোরেসিয়েন্সিস’ নাম দেওয়া হয়।

১৮ ১৯

২০০৩ সালে ইন্দোনেশিয়ায় মানবিক পরিযান সংক্রান্ত গবেষণা চালাতে গিয়ে এদের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে, এদের অস্তিত্ব এই বিশেষ দ্বীপটিতেই আবদ্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। জীবাশ্মগুলি থেকে জানা যায়, এদের উচ্চতা ছিল মেরেকেটে ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি। এদের সভ্যতাকে ‘প্রস্তরযুগীয়’ বলেই চিহ্নিত করেছেন প্রত্নবিদরা।

১৯ ১৯

গবেষক ফোর্থ দাবি করেন, হোমো ফ্লোরেসিয়েন্সিস বা বাস্তবের হবিটরা আজও রয়েছে। এবং যে হেতু স্থানীয় মানুষ তাদের ভয় পায়, সে কারণে তারা আজকের মানুষের দ্বারা আক্রান্তও হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখে হবিটদের রক্ষা করার জন্য সরকারের উদ্যোগী হওয়া জরুরি। যদিও ফোর্থের এই তত্ত্ব এখনও পর্যন্ত প্রমাণসাপেক্ষ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। তাঁদের কথায়, ৫০ হাজার বছর আগে বেঁচে থাকা এক বিলুপ্ত প্রাণীর এ যুগে বেঁচেবর্তে থাকার তত্ত্ব বড়ই আজগুবি।

সব ছবি: আনস্প্ল্যাশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement