তিন বছর বয়সে বাবা-মা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তার পর থেকে একাই বেঁচে থাকার লড়াই করেছেন তিনি। পশ্চিম এশিয়ার সর্বাধিক উপার্জনকারী মডেলদের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন জাদ হাদিদ। সম্প্রতি ‘বিগ বস্ ওটিটি’র দ্বিতীয় সিজ়নের সেটে বলি অভিনেত্রী আকাঙ্ক্ষা পুরীকে চুমু খেয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন জাদ।
‘বিগ বস্ ওটিটি’র দ্বিতীয় পর্বে প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করেছেন জাদ। ইতিমধ্যেই নিজস্ব অনুরাগী মহল তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।
বর্তমানে কোনও অর্থাভাব না থাকলেও জীবনে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে জাদ জীবন কাটিয়েছিলেন, যখন তাঁকে ডাস্টবিনে পড়ে থাকা জঞ্জালের মধ্যে থেকে উচ্ছিষ্ট খাবার কুড়িয়ে খেতে হত।
লেবাননে জন্ম জাদের। শৈশব থেকেই বাবা-মায়ের অশান্তি দেখে বড় হয়ে উঠেছেন তিনি। তিন বছর বয়সে জাদকে একা ফেলে চলে যান তাঁর বাবা-মা।
প্রতিবেশীর বাড়ির সদর দরজার সামনে জাদকে ছেড়ে চলে যান তাঁর বাবা-মা। তার পর প্রতিবেশীদের বাড়িতে ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু বেশি দিন অন্য সন্তানকে মানুষ করতে চাননি প্রতিবেশীরা।
সাত বছর বয়সে জাদকে অনাথ আশ্রমে দিয়ে দেন প্রতিবেশীরা। জাদ ভাবতেন কোনও এক দিন তাঁর বাবা-মা তাঁকে নিয়ে যাবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কখনও পূরণ হয়নি।
অনাথ আশ্রমেই পড়াশোনা করেছিলেন জাদ। কিন্তু হাতে টাকাপয়সা ছিল না তাঁর। খাবারের জন্য হাতও পাততে হয়েছে তাঁকে।
‘বিগ বস্’-এর শোয়ে জাদ জানান, এমন সময়ও গিয়েছে যখন তিনি জঞ্জাল থেকে খাবার কুড়িয়ে খেয়েছেন। এখন তিনি যে পরিস্থিতিতেই থাকুন না কেন, কেউ যদি তাঁর কাছে খাবার চান তা হলে তাঁকে খালি হাতে ফেরান না।
জাদ বলেন, ‘‘আমার কাছে টাকা থাকুক বা না থাকুক, কেউ যদি দু’মুঠো খাবারের জন্য আমার কাছে হাত পাতেন আমি তাঁকে ফেরাতে পারি না। যে ভাবেই হোক তাঁর হাতে খাবার তুলে দিই।’’
রোজগারের জন্য জাদ লেবাননের একটি ফাস্ট ফুড বিক্রির দোকানে কাজ করতেন। সেই টাকাতেই নিজের খরচ চালাতেন তিনি।
ফাস্ট ফুডের দোকানে কাজ করতে গিয়েই ভাগ্য খোলে জাদের। মডেলিংয়ের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় তাঁকে। তার পর থেকেই তাঁর জীবন অন্য দিকে মোড় নেয়।
দুবাইয়ের মডেল হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন জাদ। সেখানকার মডেল রামোনা খালিলকে বিয়ে করেন তিনি।
বিয়ের এক বছর পর কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রামোনা। কিন্তু এক ছাদের তলায় রামোনার সঙ্গে বেশি দিন ঘর করতে পারেননি জাদ।
পাঁচ বছর সংসার করার পর বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন জাদ এবং রামোনা। চার বছরের কন্যাসন্তান নিয়ে থাকেন জাদ।
সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই শিশুকন্যার সঙ্গে ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করতে দেখা যায় জাদকে। ইনস্টাগ্রামে জাদের অনুরাগীর সংখ্যা চার লক্ষের গণ্ডি পার করে গিয়েছে।