দক্ষিণী চলচ্চিত্রজগতের নামকরা অভিনেত্রী। বড়পর্দা থেকে শুরু করে ওয়েব সিরিজ়েও অভিনয় করে ফেলেছেন। নিজের ছবির প্রচারের জন্য বেনজির পদক্ষেপও করেছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন তিনি। গোপনে বাগ্দান পর্ব সেরে ফেললেও জীবনসঙ্গীকে প্রকাশ্যে আনতে নারাজ দক্ষিণী নায়িকা সুনয়না ইয়েল্লা। সম্প্রতি তাঁর সম্পর্ক নিয়ে জলঘোলা হতে ফের প্রচারে এসেছেন অভিনেত্রী।
১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাসে জন্ম সুনয়নার। বাবা-মা, দাদা এবং দিদির সঙ্গে নাগপুরে থাকতেন তিনি। তার পর পরিবার-সহ হায়দরাবাদে চলে গিয়েছিলেন তিনি। কিশোরী বয়স থেকেই অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার শুরু সুনয়নার।
২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুমারী ভার্সেস কুমারী’ নামের তেলুগু ভাষার ছবিতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন সুনয়না। তেলুগু ভাষার পাশাপাশি তামিল, মালয়ালম এবং কন্নড় ভাষার ছবিতেও অভিনয় শুরু করেন তিনি।
ধীরে ধীরে বড়পর্দায় পরিচিতি গড়তে থাকেন সুনয়না। এর পাশাপাশি দক্ষিণী ভাষার ওয়েব সিরিজ়েও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। ২০২৪ সালে ওটিটির পর্দায় ‘ইনস্পেক্টর ঋষি’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান তিনি।
চলতি বছর ধনুষ এবং নাগার্জুন অভিনীত দক্ষিণী ছবি ‘কুবেরা’য় একটি ছোট চরিত্রে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় সুনয়নাকে। সম্প্রতি ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে চর্চায় এসেছেন নায়িকা।
২০২৪ সালে সুনয়নাকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানিয়েছিলেন যে, বাগ্দান পর্ব সেরে ফেলেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে সুখী রয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু জীবনসঙ্গীর নাম প্রকাশ্যে জানাতে নারাজ ছিলেন সুনয়না।
সম্প্রতি সুনয়নার সঙ্গে সমাজমাধ্যমের পাতায় ছবি পোস্ট করেন এক তরুণ। সেই তরুণ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বাসিন্দা। তরুণের নাম খালিদ আল আমেরি। পেশায় নেটপ্রভাবী তিনি। অধিকাংশের দাবি, খালিদের সঙ্গেই বাগ্দান সেরে ফেলেছেন দক্ষিণী নায়িকা।
১৯৮৩ সালের ৫ ডিসেম্বর জন্ম খালিদের। দিন কয়েক আগে ৪২ বছরে পা দিলেন তিনি। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন সুনয়না। জন্মদিনের বেশ কয়েকটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন খালিদ। সেখানেই খালিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সুনয়নাকে।
খালিদ অবশ্য বিবাহবিচ্ছিন্ন। সুনয়নার সঙ্গে খালিদের বয়সের পার্থক্য ছ’বছরের। ২০০৭ সালে সালামা মোহামেদ নামে এক নেটপ্রভাবীকে বিয়ে করেছিলেন খালিদ। বিয়ের পর দুই পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন সালামা। দাম্পত্যের ১৭ বছর পর বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন খালিদ এবং সালামা।
২০২৪ সালে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা করেছিলেন সালামা এবং খালিদ। একই বছরের জুন মাসে খালিদ তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি সাদা-কালো ছবি পোস্ট করেন। সেই ছবিতে এক তরুণ-তরুণী পরস্পরের হাত ধরে রয়েছেন। তাঁদের দু’জনের হাতেই আংটি জ্বলজ্বল করছিল।
খালিদের ছবি দেখে নেটাগরিকদের অনেকেই দাবি করেছিলেন যে, খালিদ আংটিবদল করে ফেলেছেন। তবে, সেই প্রসঙ্গে উচ্চবাচ্য করেননি খালিদ। একই সময়ে সুনয়না তাঁর বাগ্দানের খবর জানিয়েছিলেন। অধিকাংশের দাবি, ২০২৪ সালের জুন মাসেই বাগ্দান সেরে ফেলেছিলেন সুনয়না এবং খালিদ।
নিজের ছবির প্রচারের জন্য অদ্ভুত পদক্ষেপও করেছিলেন সুনয়না। ২০২৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে তামিল ভাষার ক্রাইম থ্রিলার ঘরানার ‘রেজিনা’ ছবিটি মুক্তি পায়। এই ছবির নায়িকা ছিলেন সুনয়না। ছবিমুক্তির কয়েক দিন আগে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, নায়িকাকে অপহরণ করা হয়েছে।
দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন সুনয়না। ‘রেজিনা’ ছবির মুক্তির আগে নায়িকার অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ায় তাঁকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন অনুরাগীরা। তবে, দু’দিন পর আবার জনসমক্ষে হাজির হয়েছিলেন সুনয়না।
সকলের সামনে সুনয়না জানিয়েছিলেন, ‘রেজিনা’ ছবির প্রচারের জন্য ‘স্টান্ট’ ছিল তাঁর। আদতে তাঁকে অপহরণ করা হয়নি। সব কথাই ছড়ানো হয়েছিল ছবির প্রচারের জন্য। তা শুনে রেগে গিয়েছিলেন অনুরাগীদের একাংশ।
‘রেজিনা’ ছবির প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার চিন্তাভাবনাও করছিলেন সুনয়নার কয়েক জন অনুরাগী। পরে অনুরাগীদের অনুভূতি বুঝতে পেরে প্রকাশ্যে এই পদক্ষেপের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন দক্ষিণী নায়িকা।